Hooghly News: 'ট্রেনের টিকিট কেটেছিস?' মমতার সেই এক প্রশ্নে বদলে গিয়েছিল দীনবন্ধুর জীবন!

Last Updated:

মমতার এক প্রশ্নে জীবন বদল! কৃষিকাজ সামলেও পঞ্চায়েত প্রধান এই 'মাটির মানুষ'। সকাল হলেই প্রথমে মাঠে চাষের কাজ, তার পর বেলা দশটা বাজলে বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। প্রায় আড়াই কিলোমিটার সাইকেলে প্যাডেল করে তাঁকে পৌঁছোতে হয় গন্তব্যে। গন্তব্য পঞ্চায়েত অফিস।

+
পঞ্চায়েত

পঞ্চায়েত প্রধান দীনবন্ধু মাটি

হুগলি: সকাল হলেই প্রথমে মাঠে চাষের কাজ, তার পর বেলা দশটা বাজলে বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। প্রায় আড়াই কিলোমিটার সাইকেলে প্যাডেল করে তাঁকে পৌঁছোতে হয় গন্তব্যে।  গন্তব্য পঞ্চায়েত অফিস।
আড়াই কিলোমিটার যাত্রাপথ আবার জনসংযোগের অংশ। কার বাড়িতে চাল নেই কার বা মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না কিংবা কেউ পড়াশোনা করতে সমস্যায় পড়েছেন সকলের পাশে সমানভাবে গিয়ে দাঁড়ান বালিগড়ি এক পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু মাটি।
advertisement
পদবি যেমন মাটিও তেমন। এলাকার মানুষের কাছে ‘মাটির মানুষ’ হিসাবেই পরিচিত দীনবন্ধু। প্রথম জীবনে গৃহশিক্ষকতা করতেন তিনি, তাই থেকেই এলাকার মানুষের কাছে মাস্টার হিসেবে পরিচিত। তবে রাজনীতিতে প্রবেশ করে শিক্ষকতা ত্যাগ করতে হয়েছে তাঁকে। তাই বলে মানুষের সেবায় তাঁর কোনও বিচ্যুতি ঘটেনি। পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েও সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন তিনি। পঞ্চায়েতের কাজ সামলে বাড়ি ফেরার পথে মানুষের সঙ্গে জনসম্পর্ক করা যেন তাঁর প্রতি দিনের রুটিন।
advertisement
দীনবন্ধুর বাবা মধুসূদন ছিলেন প্রান্তিক চাষি। চাষের জমি থেকে যা উপার্জন হত তা দিয়ে সন্তানদের পড়াশোনা শিখিয়েছেন। অভাবের সংসারে বড় হয়ে উঠতে থাকেন দীনবন্ধু। মাধ্যমিক পাশ করার পর নিজের পড়াশোনা চালাতে শুরু করেন ছাত্র পড়ানো। তৎকালীন সময়ে অনেক বেতন দিতেন না, তবে তাতে কিছু মনে করতেন না তিনি। চাইতেন, ছাত্ররা  যেন সমাজের মুখ উজ্জ্বল করে।
advertisement
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলেজে পড়ার সময় ধীরে ধীরে পা বাড়াতে থাকেন ছাত্র রাজনীতিতে। বি কম পাসের পর অ্যাকাউন্টেন্সে অনার্স করে পড়াশোনায় ইতি টানতে হয় তাঁকে। প্রথমে কংগ্রেস ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেন তিনি। প্রয়াত কংগ্রেসের প্রাক্তন এম এল এ বলাইলাল শেঠের হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে আসা।
advertisement
পরবর্তীতে কংগ্রেসের সেবা দলের তারকেশ্বর ব্লক সদস্য হন। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর আন্দোলন করতে গিয়ে দশ দিন জেল খাটতে হয়েছিল তাকে। পুলিশের খাতায় তার নামের পাশে লাল কালির দাগ পড়ায় আর চাকরির কোন সুযোগ হয়নি। ১৯৯৮ সালে রাইটার্স বিল্ডিং অভিযানে তৎকালীন কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরবর্তীতে জাতীয় কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল গঠন করেন মমতা। তখন থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী।
advertisement
এর পর তৃণমূল জয়পুরের বুথ সভাপতি দায়িত্ব সামলানোর পর অঞ্চল কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। কৃষাণ ক্ষেতমজুরের ব্লক কমিটির সদস্য হন তিনি। ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করার পর বর্তমানে বালিগড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বাড়িতে রয়েছে তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী।
প্রধান বলেন, “আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। বাবা চাষবাস করতে, বর্তমানে আমি নিজেও চাষ করি। অনেক গরিব মানুষ আছে তারা অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েন আমার দেখে  কষ্ট হয়। সে জন্যই আমি যতটা পারি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি।”
advertisement
তিনি আরও জানান,  কী ভাবে মানুষের পাশে থাকতে হয় তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই শিখেছেন। দীনবন্ধুর কথায়, “যখন তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছিল, তখন ফুল নিয়ে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম বাড়িতে। দিদি জিজ্ঞেস করেছিলেন ট্রেনের টিকিট কেটে এসেছিস ? বলেছিলাম না! সেই কথা শুনে ১৭০ টাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তখনই মনে মনে ঠিক করেছিলাম তিনি যদি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন আমি কেন পারব না?”
advertisement
এর পর থেকেই মানুষের সেবা করার সিদ্ধান্তে অনড় হয়ে আছেন, দাবি দীনবন্ধুর।
রাহি হালদার 
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Hooghly News: 'ট্রেনের টিকিট কেটেছিস?' মমতার সেই এক প্রশ্নে বদলে গিয়েছিল দীনবন্ধুর জীবন!
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement