Nadia News: একটা সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে কতকিছু! সীমান্তের এই গ্রাম না দেখলে বিশ্বাস হবে না

Last Updated:

স্থলবন্দর গেদেতে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই দেখা গেছে আমূল পরিবর্তন।

+
ভারত

ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা গেদে

নদিয়া: আন্তর্জাতিক সীমান্ত এই কথা শুনতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কাঁটাতার, বিধি নিষেধ, বিএসএফের বুটের শব্দ, চেকিং এবং বন্দুকের দাপট। কিন্তু এই সব কিছুকেই ভুল প্রমাণ করে অন্য এক নজির গড়ল নদিয়া জেলার আন্তর্জাতিক একমাত্র স্থলবন্দর গেদে ও তার আওতাভুক্ত বর্ডার এলাকা। গেদে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর হলেও এখানে বাংলাদেশে যাতায়াতকারী বাংলাদেশী ও ভারতীয় যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সুব্যবস্থা ছিল না এতদিন। ফলে রোদ বৃষ্টিতে প্রচন্ড কষ্ট করে বর্ডারে প্রবেশ ও বাহির এবং চেকিং করাতে হত। কিন্তু সেই স্থলবন্দর গেদেতে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই দেখা গেছে আমূল পরিবর্তন।
উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য মাথায় ছাউনি, বসার জায়গা, কোলড্রিংস, বিস্কুট এবং বিনামূল্যে ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা। এছাড়াও ওপেন জিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে সকাল ও বিকালে স্থানীয় এবং ভ্রমণকারী সকলেই শরীর চর্চা করেন। অন্যদিকে গেদের পূর্ব দিকে বর্ডার থেকে সামনের দিকে রাস্তা ধরে এগিয়ে চললেই বাণপুর পার করেই পৌঁছে যাওয়া যায় টুঙ্গীতে। এই টুঙ্গী গ্রাম একসময় দুর্বৃত্তদের পাচারের আখড়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেখানে আজ বর্ডারের সাধারণ মহিলাদের সেলাইয়ের ট্রেনিং দিচ্ছে ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানে বিএসএফের জওয়ানরা। এছাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সামনেই মনোমুগ্ধকর পরিবেশের এক ওপেন জিম ও পার্কের বন্দোবস্ত করেছে একই ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা। মূলত নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলা ও বর্ডারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে জনসংযোগ বাড়ানোই উদ্দেশ্যেই এই ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা।
advertisement
advertisement
টুঙ্গীর সীমান্তে গেলে দেখা যাবে প্রচুর মানুষ যেমন সীমান্ত দর্শন করতে যাচ্ছেন প্রতিদিন পাশাপাশি গ্রামের মানুষেরা শরীর চর্চা করছেন। এখানে এত মানুষের ভিড় হচ্ছে যার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও এখানে ব্যবসা করতে শুরু করেছেন। গেদে বর্ডারের পশ্চিম দিকে বেস খানিকটা এগিয়ে গেলেই কাদিপুর চেকপোস্ট চোখে পড়ে। এই চেকপোস্টের তরফ থেকে মহিলাদের সেলাই, ওপেন জিম তার পাশাপাশি স্থানীয় মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্দেশ্যে বেকারির খাবারের ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এক ফুট কার্টের। যেখানে কম মূল্যে স্থানীয় মেয়েদের হাতের তৈরি জন্মদিনের কেক থেকে বার্গার পিৎজা সবই পাওয়া যায় যা সাশ্রয়ী ও ভাল মানের।
advertisement
এছাড়া বর্ডারের তারকাটার ঘেরাটোপের সঙ্গেই স্থানীয়দের সাহায্যে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করা হচ্ছে, মৌমাছির মধু তৈরি এবং বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ সহ নানা পদের মাছের চাষ। সীমান্তের তারকাটায় মধু চাষের ফলে একদিকে চোরা কারবারিরা তার কাছে আসতে সাহস পাচ্ছেন না মৌমাছির ভয়ে অন্যদিকে এই মৌমাছি পালনে স্থানীয় মানুষদের মধুতে প্রচুর আয় হচ্ছে।
advertisement
এই কাদিপুর সীমান্ত থেকে আরেকটু এগিয়ে গেলেই চাপড়ার মলুয়াপাড়া বর্ডার চোখে পড়বে। যেখানে অধিকাংশ এলাকায় এখনও তারকাটা দেওয়া সম্ভব হয়নি। গ্রামবাসীদের বেশিরভাগ অংশই বাংলাদেশের দিকে ভারতের সীমান্তে বসবাস করেন। কিছুদিন আগে এই এলাকা ছিল চোরাকারবারিদের অন্যতম ঘাঁটি। কিন্তু ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সেই চিত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ওই এলাকার মহিলাদের ধূপকাঠি তৈরীর ও প্যাকেজিংয়ের ট্রেনিং দিয়ে তাদের হাতে মেশিনারি সহ সমস্ত প্রকার কাঁচামাল তুলে দিয়েছেন বিএসএফ ক্যাম্পের জওয়ানরা। স্থানীয় মহিলারা এখন ঘরে বসেই এই ধূপকাঠি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে খুঁজে নিয়েছেন তাদের আয়ের উৎস। যার জন্য এখন বর্ডার এরিয়ায় আগের থেকে পাচার সহ একাধিক অপরাধমূলক কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে।
advertisement
বিএসএফের পক্ষ থেকে একদিকে চোরা কারবারি বন্ধ করা অন্যদিকে স্থানীয় পুরুষ ও মহিলাদের কাজের মধ্যে ফিরিয়ে আনা মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন বিএসএফের আধিকারিকরা। আর এই পন্থা অবলম্বন করে বিএসএফ সাফল্য পেয়েছে হাতেনাতে।  বর্তমানে কোন অচেনা ব্যক্তি গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামের পুরুষ এবং মহিলারা সঙ্গে সঙ্গে বিএফ আধিকারিকদের জানিয়ে দেন। যার ফলে চোরা কারবারিরাও এখন চোরা পথের অবলম্বন করতে সাহস পাচ্ছে না। নদিয়ায় ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সীমান্তের মানুষদের একদিকে কাজের সন্ধান অন্যদিকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে সফল। এবার এই প্রক্রিয়ায় সারা ভারতের মডেল হতে চলেছে নদীয়ার সীমান্ত।
advertisement
Mainak Debnath
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Nadia News: একটা সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে কতকিছু! সীমান্তের এই গ্রাম না দেখলে বিশ্বাস হবে না
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement