১২ বছর কেটে গেলেও একই ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন নন্দীগ্রামের নকুল মণ্ডল ও মঞ্জু মান্না

Last Updated:
নন্দীগ্রাম,পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে পালাবদলের সাক্ষী। শিল্পায়নের স্বার্থে প্রায় ৪৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নন্দীগ্রামকে Special Economic Zone হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৎকালীন বাম সরকারের সঙ্গে স্থানীয় কৃষকদের সংঘাতই ঘটনাক্রমে নন্দীগ্রামকে প্রত্যেকটি আলোচনার শীর্ষে নিয়ে যায় । রাজনৈতিক পালাবদলে জ্বলন্ত নিদর্শন হিসেবে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক নন্দীগ্রাম ।
২০০৭ সালে ১৪ মার্চ ভাঙাবেরিয়া সেতু ও অধিকারীপাড়ায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৪ জন স্থানীয় মানুষ । ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃত্বে নিজেদের জমি রক্ষায় সরাসরি শাসকের রক্তচক্ষুর মোকাবিলা করেছিল নন্দীগ্রাম । ১৪ মার্চের হিংসার পর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১২ বছর , বদলে গিয়েছে শাসকদল, পরিবর্তিত হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক সমীকরণ । তবে এক দশক পর বুলেটের ক্ষতচিহ্ন ম্লান হয়ে গেলেও সেই স্মৃতি আজও প্রকট নন্দীগ্রামের মানুষের মনে ।
advertisement
১৪ মার্চ সকালবেলা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের আওয়াজে ঘুম ভাঙে মঞ্জু মান্নার । ভাঙাবেরিয়া সেতুতে ৩ জন গুলিবিদ্ধ যুবককে সাহায্য করার সময় পুলিশের গুলি ধেয়ে এসেছিল মঞ্জু মান্নার দিকে । তমলুক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে । চিকিৎসার জন্য উচ্ছেদ কমিটির তরফ থেকে ৩০,০০০ টাকা অর্থসাহায্য দেওয়া হলেও ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা বাবদ কোনও টাকা-পয়সা পৌঁছায়নি তাঁর কাছে । সরকারের তরফ থেকে দেওয়া ১ লক্ষ টাকাও তাঁর কাছে আসেনি ।
advertisement
advertisement
manju
১৪ মার্চের আন্দোলনের অংশ নিয়েছিলেন নকুল মণ্ডলও। ভাঙাবেরিয়া ব্রিজে পুলিশের গুলিতে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় তাঁর একটি কিডনি । চিকিৎসা চলাকালীন বাদ দেওয়া হয় সেই কিডনিটি। তারপর সেই অবস্থাতেই বেঁচে রয়েছেন তিনি । সময়ের সঙ্গে সব ক্ষতচিহ্ন ম্লান হলেও নিজের এই ক্ষতি ভুলতে পারেন না নকুল মণ্ডল । তাঁর এই ক্ষতির সময় কোনও প্রশাসনিক সহায়তাও তিনি পাননি, স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি ।
advertisement
nakul
নন্দীগ্রামের অলিগলিতে রয়েছেন এমন আরও অনেক নকুল মণ্ডল, মঞ্জু মান্নারা। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের নাম উচ্চারিত হলেই কৃষি বনাম শিল্প তরজার প্রসঙ্গ অবশ্যম্ভাবী কিন্তু নন্দীগ্রামের মানুষ আজও চান সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে- এটাই তাঁদের প্রাথমিক চাহিদা । আজ এক দশকের বেশি সময় কেটে গেলেও তাঁদের জীবনযাত্রার উন্নতি হয়নি । 'আমার অবস্থা তো যে কে সেই রয়েছে,' হাসিমুখেই জানালেন মঞ্জুদেবী ।
advertisement
ভোট আসে, ভোট যায়। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবে সামিল হন সাধারণ মানুষ । ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে নন্দীগ্রামের মানুষ নতুন করে বেঁচে থাকার ইচ্ছেই প্রকাশ করলেন । সপ্তদশ লোকসভা ঘিরে তাঁদের প্রত্যাশা একটাই- তাঁদের বেঁচে থাকার লড়াই পূর্ণতা পাক; কারণ নন্দীগ্রামের পরিচয় হতাশায় নয়, নন্দীগ্রামের পরিচয় সেই লড়াইয়ে যা আজও লড়ছেন সেখানকার মানুষরা । সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে তাই তাঁরা চান ক্ষমতায় যেই আসুক, তাঁদের প্রাথমিক চাহিদাগুলি মিটিয়ে দেওয়া হোক । নতুন সরকার ঐতিহাসিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সেই মানুষগুলিকে অগ্রাধিকার দিক, একটু ভালভাবে বাঁচতে চান মঞ্জুদেবীরা ।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
১২ বছর কেটে গেলেও একই ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন নন্দীগ্রামের নকুল মণ্ডল ও মঞ্জু মান্না
Next Article
advertisement
'কেন Gen Z তাঁর কথা শুনবে...?' বিহারের যুবসমাজের উপর রাহুলের প্রভাব, নস্যাৎ করলেন প্রশান্ত কিশোর
'কেন Gen Z তাঁর কথা শুনবে...?' বিহারের যুবসমাজের উপর রাহুলের প্রভাব নস্যাৎ করলেন পিকে
  • 'যখন বিহারের মানুষই রাহুল গান্ধির কথা শুনছেন না, তখন Gen Z -রা কেন তার কথা শুনবেন?' বিহার নির্বাচনী আবহে রবিবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধিকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রশান্ত কিশোর

VIEW MORE
advertisement
advertisement