Katwa Kartik Puja : এ যেন চলন্ত পুরাণ, মাটির পুতুলে ফুটে ওঠে রামায়ণ, মহাভারত! চাকচিক্যের মাঝেও কাটোয়ার ‘থাকা’র জয়জয়কার

Last Updated:

Katwa Kartik Puja : লক্ষ লক্ষ টাকা থিম দিয়ে সাজানো মণ্ডপের ভিড়ে আজও কাটোয়ার কার্তিক লড়াই এর অন্যতম মূল আকর্ষণ শতাব্দী প্রচীন 'থাকা'।

+
থাকা 

থাকা 

কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান, বনোয়ারীলাল চৌধুরী: লক্ষ লক্ষ টাকার থিম দিয়ে সাজানো মণ্ডপের ভিড়ে আজও কাটোয়ার কার্তিক লড়াই এর অন্যতম মূল আকর্ষণ শতাব্দী প্রচীন ‘থাকা’। রামায়ন বা মহাভারত অথবা পৌরাণিক কাহিনীকে ‘থাকা’ এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়৷ এই ‘থাকা’ দেখতে কাটোয়া শহরে ভিড় হাজার হাজার মানুষ। এখনও কাটোয়া শহরের কিছু পুজো উদ্যোক্তার টিকিয়ে রেখেছেন ‘থাকা’ এর ঐতিহ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বহু যুগ আগে নদী কেন্দ্রিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই কাটোয়া শহর। আর ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই ‘বাবু’ দের বাস ছিল শহরে৷ বাবু বলতে সেকালের সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ীদের বোঝানো হয়৷ ভাগীরথী তীরবর্তী এলাকায় বাবুদের যাতায়াত ছিল। তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্যই নদী তীরে শুরু হয় বারবণিতাদের বসবাস। সেইসব বারবণিতারাই সন্তানের কামনায় শুরু করেন কার্তিকপুজো। মূলত বারবণিতাদের হাত ধরেই কাটোয়ায় কার্তিকপুজোর চল শুরু হয়। সেই পুজোয় খরচ দিতেন ‘বাবু’ রা।
advertisement
advertisement
‘থাকা’ নিয়ে শোভাযাত্রা করার সময় বাবুদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হত। কার ‘থাকা’ আগে যাবে তা নিয়েই বাবুদের প্রতিযোগিতা দেখতে আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ ভিড় জমাতেন কাটোয়া শহরে। বেহারারা পান চিবোতে চিবোতে সেই থাকা কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতেন৷ তবে আজ সেই বারবনিতা না থাকলেও কার্তিক লড়াই, থাকা এসব থেকে গিয়েছে শহরে৷  এখন থাকা আর কেউ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যায় না। লোহার বিশেষ চাকা যুক্ত গাড়িতে করে থাকা নিয়ে যাওয়া হয়৷
advertisement
এই বিষয়ে শিক্ষক তথা ইতিহাসবিদ তুষার পন্ডিত বলেন, “থাকা হল থাক থাক পুতুল। মূলত পৌরাণিক হিন্দু পুরাণে যে দেবী প্রতিমা তার সঙ্গে বিভিন্ন কাহিনী, রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনী পুতুলের মাধ্যমে সাজিয়ে তোলা হয়, খুবই দৃষ্টিনন্দন এবং সুন্দর। কখনও কখনও সামাজিক বিষয়গুলি থাকায় উঠে এসেছে এবং এখনও আসছে।” কাটোয়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে দু’ শ এর কাছাকাছি কার্তিকপুজো হয়। রাজা কার্তিক, জামাই কার্তিক, ন্যাংটা কার্তিক, সাহেব কার্তিক সহ বিভিন্ন রকমের ঠাকুরের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে থিমের পুজো। কিন্তু কাটোয়ার ‘কার্তিক লড়াই’ এর প্রাচীন ঐতিহ্য এখনও বয়ে চলেছে ‘থাকা’। বাঁশ দিয়ে পিরমিডের মতো আকার তৈরি করা হয়।
advertisement
বাঁশের এই কাঠামোয় থাক থাক করে বসানো থাকে ২৫ থেকে ৩০ টি বা তারও বেশি মাটির তৈরি পুতুল। এই মূর্তিগুলি বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর চরিত্র। পুরাণের বিভিন্ন কাহিনি তুলে ধরা হয় মাটির পুতুলগুলির মাধ্যমে। এরই নাম ‘থাকা’। এই থাকার মধ্যমণি থাকেন কার্তায়নী বা রাজা কার্তিক। থিমের জৌলুস বেড়ে যাওয়ায় কার্তিক লড়াইয়ে ‘থাকা’ আজ অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। যদিও শাঁখারি পট্টী, খড়ের বাজার, বড়বাজার, আওয়াজ ক্লাব, চাউলপট্টি যুব সম্প্রদায়, কিশলয়, ঝঙ্কারের মতো পুজো উদ্যোক্তরা এখনও বয়ে চলেছেন কার্তিকপুজোর ‘থাকা’র ঐতিহ্য।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
খড়ের বাজারের অগ্নি সংঘ ক্লাবের সদস্য গৌর দাস এই বিষয়ে বলেন, “আমাদের ১৫৬ বছরের পুজো। প্রথম থেকেই আমরা থাকা করে আসছি। এই থাকা আমাদের কার্তিক লড়াইয়ের অন্যতম একটা ঐতিহ্য।”এবারে ঝঙ্কার ক্লাবের থাকার পালা অভিন্ন৷ পাশাপাশি কিশলয়ের পালা মহাপ্রভুর অন্তর্ধান৷ আর আওয়াজ ক্লাবের থাকা এর পালা এবার রক্তবীজ, চণ্ডমুণ্ড বধ ও ধুম্রলোচন বধ৷ শাঁখারি পট্টির থাকা হল সপ্তর্ষিদের আশীর্বাদে পৃথিবীর রক্ষা। মাটির পুতুল দিয়ে এসব সাজিয়ে তোলা হয়েছে৷ আর সেগুলি বাঁশের মাচায় থাক থাক করে সাজানো হয়েছে পৌরানিক কাহিনীর চরিত্র যুক্ত মাটির পুতুল। সবমিলিয়ে কিছুটা ফিকে হলেও এখনও থাকার ঐতিহ্য বজায় রয়েছে কাটোয়ার কার্তিক লড়াইয়ে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Katwa Kartik Puja : এ যেন চলন্ত পুরাণ, মাটির পুতুলে ফুটে ওঠে রামায়ণ, মহাভারত! চাকচিক্যের মাঝেও কাটোয়ার ‘থাকা’র জয়জয়কার
Next Article
advertisement
Saudi Arabia Bus Accident: মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, সৌদি আরবে মৃত অন্তত ৪২ জন ভারতীয়! জীবন্ত দগ্ধ অনেকে
মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, মৃত অন্তত ৪২ জন ভারতীয়! জীবন্ত দগ্ধ বহু
  • সৌদি আরবের মদিনায় ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা৷

  • অন্তত ৪২ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর আশঙ্কা৷

  • মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে তীর্থযাত্রীরা৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement