#ঝাড়গ্রাম: সাড়ে চারশো বছরের মিথ। রাজকাহিনীর আড়ালে রাজনীতি। স্বপ্নাদেশের গল্পে আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা।
রহস্যেঘেরা ঝাড়গ্রামের চিলকিগড় রাজবাড়ি লাগোয়া কনক দুর্গা মন্দিরের দুর্গাপুজো। আজও নাকি অষ্টমীর রাতে গভীর জঙ্গলের মধ্যে নিজেই নিজের ভোগ রাঁধেন উমা।
ঝাড়গ্রাম থেকে মাত্র পনের কিলোমিটার। ডুলুং নদীর তীরে ছবির মত চিলকিগড়। গা ছমছমে গভীর জঙ্গলের মধ্যে কনক দুর্গার মন্দির। অষ্টধাতুর দুর্গা এখানে অশ্বারোহিনী চতুর্ভূজা।
মন্দির জুড়ে মিথ। আদতে রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ। একসময়ে এটা ছিল ওড়িশার ব্রাহ্মণ রাজার রাজত্ব। সামন্তরা ছিল সেনাপতি। ছেলে ছিল না রাজার। তাঁর মৃত্যুর পর রাজত্ব যায় সামন্তদের দখলে। সেই সময়েই না কি স্বপ্নদেশে সোনার মূর্তি তৈরির নির্দেশ পান জামবনির রাজা জগদীশ চন্দ্র দেওধল। ব্রাহ্মণ রাজার আধিপত্য কমাতেই কি সামন্ত রাজার এই কূটনীতি?
সালটা ১৩৪০ বঙ্গাব্দ । মন্দির তৈরি করলেন জগদীশ চন্দ্র দেওধল। স্ত্রীর হাতের সোনার কাঁকন দিয়ে তৈরি হল মূর্তি। শিল্পী জগেন্দ্র নাথ কামেলা। পুরোহিত রামচন্দ্র সরেঙ্গী।
ষষ্ঠীতে ডুলুং থেকে ঘট ভরতি জল আসে। সারারাত মন্দিরের বাইরে বেলগাছের নীচে থাকে ঘট। সপ্তমীর সকালে কলসির জল দিয়ে ঘট শুদ্ধ করে হোম আরতির পর গৃহপ্রবেশ। জঙ্গলের ফিসফাস,আগে নরবলি হত জঙ্গলে। আজ পাঁঠাবলি হয়। অষ্টমীর রাতে মন্দির সংলগ্ন গভীর জঙ্গলে নিশাপুজো। থাকেন শুধুমাত্র রাজপরিবারের সদস্যরাই। স্থানীয়দের বিশ্বাস, নবমীর ভোগ রান্না করেন স্বয়ং দুর্গা।
দশমীতে কলাগাছরূপে রাবণ-পুজো। সন্ধেবেলা ডুলুং-এর তীরে মশাল জ্বালিয়ে সেই কলাগাছকে তীর মারার প্রতিযোগিতা। পুরোন মন্দির বদলে এখন নতুন মন্দির। চারবার সোনার মূর্তি চুরি যাওয়ার পর এখন অষ্টধাতুর মূর্তিতেই জমজমাট পুজো চিলকিগড়ে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja 2018, Traditional Durga Puja, Traditional Puja