#মালদহ: মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে আত্মসমর্পণ করলেন অন্যতম অভিযুক্ত হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির নারী, শিশু ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন (Flood Relief Scam)। সোমবার সকালে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে ফেরার ছিলেন তিনি। বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে ৭৬ লক্ষ টাকা গরমিলের অভিযোগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এর আগে ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ-সহ আরও কয়েকজনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও (Flood Relief Scam)। যদিও আত্মসমর্পনের পর এদিন ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ দাবি করেন, তিনি এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর সই জাল করা হয়েছে। এর পেছনে বড় মাথা আছে। পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করুক, আসল সত্য উদঘাটিত হবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে বন্ধ হতে বসেছে স্কুল! অন্ধকারের মুখে বড়ঞাঁর এই গ্রাম
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারির (Flood Relief Scam) আরেক অভিযুক্ত বরুই অঞ্চলের তৃণমূল নেতা আফসার হোসেনও আত্মসমর্পণ করেন। তারও দাবি ছিল তাকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর- ১ নম্বর ব্লকে ২০১৭ সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুই দফায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ওই টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা পাননি। এরমধ্যে পঞ্চায়েত সমিতিস্তরে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে হরিশ্চন্দ্রপুর বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে প্রধান অভিযুক্ত বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন-সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মদ্য়প অবস্থায় দিঘার সমুদ্রে নেমেছিলেন যুবক, তারপর কী হল?
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যা ত্রাণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করেন বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। হাইকোর্টের নির্দেশে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু প্রাথমিক তদন্তের পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু, অভিযুক্তরা গা-ঢাকা দেওয়ায় এর আগে তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে জামিন খারিজ হয়ে যাওয়ায় শুরু হয়েছে অভিযুক্তদের আত্মসমর্পণ। যদিও এখনও কোনও খোঁজ নেই বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহার।
বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৭ সালের বন্যায় সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৭০ হাজার ও আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩,৩০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য সরকার। কিন্তু, হরিশ্চন্দ্রপুরে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে মোটা অংঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করা হয় । উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, '' অভিযুক্তদের প্রত্যেককেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। যে ভাবে বন্যা দুর্গত মানুষদের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি করেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মহামান্য আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করেছে তাই আত্মসমর্পণ ছাড়া উপায় নেই।''
মূল অভিযোগকারী বরুই গ্রাম-পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, '' দুইজন আত্মসমর্পণ করল। আরও একজন বাকি আছে। এরা প্রত্যেকে মহা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের জন্য পাঠানো কোটি কোটি টাকা এরা আত্মসাৎ করেছে। আইনের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।''
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Flood relief scam