'যদি বন্ধু হও, বাড়াও হাত...', ধর্ম দূরে সরিয়ে মানবিক মুখের প্রমাণ রাখলেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
- Written by:Saradindu Ghosh
Last Updated:
ভাড়া বেশি নেওয়া থেকে শুরু করে রোগী নিয়ে দালাল চক্রের জড়িয়ে পড়ার নানান অভিযোগ ওঠে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বিরুদ্ধে। বর্ধমানে তাঁদের মানবিক মুখ এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
শরদিন্দু ঘোষ, বর্ধমান: মানবিক মুখের দেখা মিলল অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের। রোগীর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে। রোগী মারা যাওয়ার পর তাঁর শেষকৃত্যেও সঙ্গী হলেন তারা। মৃতের স্ত্রীর হাতে কিছু আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়ে বাড়ি পাঠানোরও ব্যবস্থা করলেন এই অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। ভাড়া বেশি নেওয়া থেকে শুরু করে রোগী নিয়ে দালাল চক্রের জড়িয়ে পড়ার নানান অভিযোগ ওঠে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বিরুদ্ধে। বর্ধমানে তাঁদের মানবিক মুখ এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার কাইতির শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় দাস পেটের জটিল রোগে ভুগছিলেন। স্ত্রী কাজল দাস দিন দশেক আগে সঞ্জয়কে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। গ্রাম থেকে এসে একা মহিলা স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অথৈ জলে পড়েন। ওষুধপত্র কেনা, নিজের খাওয়া-দাওয়ার খরচ চালাতে পারছিলেন না। তাঁর কাছে সেই টাকাও ছিল না। বাড়ি থেকে সাহায্য করার মতও কেউ নেই বলে জানান কাজল। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল চত্বরে অনেকের কাছেই সাহায্যের জন্য যান তিনি। কিন্তু তেমন কোনও সাড়া পাননি। অবশেষে তাঁর দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা।
advertisement
advertisement
কাজল দাস বলেন,আমি একা। কতজনকে বললাম। কেউ সাহায্য করেনি। তখন ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক ভাইদের কাছে যাই। ওনারা গত কয়েক দিন আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ অফিসার নাসির খানও ওই মহিলাকে সহায়তা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
advertisement
শুক্রবার সকালে সঞ্জয়বাবু মারা যান। মহিলা আরও সমস্যায় পড়ে ন। তিনি বলেন, ‘‘হিন্দু পরিবারের বধূ আমি। অনেকজনকে বললাম সৎকারের ব্যবস্থা করে দিতে। শুনে কেউ কেউ বলল বাড়ি নিয়ে গিয়ে সৎকার করতে। কিন্তু আমার কাছে টাকা-পয়সা নেই। পরিবারেও কেউ নেই। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।’’
advertisement
স্বামীর হারানোর দুঃখ চেপে দেহ সৎকার কীভাবে হবে সেই চিন্তায় আকূল হয়ে পড়েন। তিনি ফের অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের কাছে যান। এরপর শেখ পিন্টার, শেখ রুস্তম, শেখ সানি, শেখ রাজিবুলরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। তাঁরাই দেহ বর্ধমানের শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহকার্য করান। পরে চাঁদা তুলে ওই মহিলার হাতে কিছু টাকা তুলে দেন যাতে তিনি বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। শেখ পিন্টার বলেন, ‘‘মানুষের বিপদে মানুষই দাঁড়াবে। আমাদের এখানে ধর্ম দেখে সাহায্য করার সংস্কৃতি নেই। তবে আমাদের মত অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের নিয়ে বদনাম করা হয়। খারাপ বলা হয়। অ্যাম্বুল্যান্স চালক মানেই খারাপ তা নয়। ওই অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। এটাই আমাদের কাছে বড় পাওনা।’’
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
November 21, 2022 10:03 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
'যদি বন্ধু হও, বাড়াও হাত...', ধর্ম দূরে সরিয়ে মানবিক মুখের প্রমাণ রাখলেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা