Bangla Video: নেতাজি থেকে ইন্দিরা, বিনয় গুহর ক্যামেরায় বন্দি সকলে

Last Updated:

Bangla Video: বিপুল ঐতিহ্যের সাক্ষী এই পুরানো ক্যামেরাগুলো অনেকেই কিনতে আসেন বা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যদিও বিনয়বাবু এগুলো আজও পর্যন্ত বিক্রি করেননি

+
স্বাধীনতার

স্বাধীনতার সাক্ষী বহনকারী ক্যামেরা 

বীরভূম: সিউড়ির বারুইপাড়ার বাসিন্দা ৯৫ বছরের বিনয় কুমার গুহ। তিনি কখনও ক্যামেরাবন্দি করেছেন ইন্দিরা গান্ধির ছবি, আবার কখনও লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে। সাদা-কালো ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন তিনি। দেশের স্বাধীনতার সাক্ষী ছিল এই ক্যামেরা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় সিউড়িতে খুলেছিলেন একটি স্টুডিও। সাধ করে নাম দিয়েছিলেন ‘গুহ স্টুডিও’। শহরের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম স্টুডিও। তখন পসরা জমাতে পারেননি ঠিকই, কারণ সে সময় ছিল না শহরে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ। যার জন্য ফটো প্রিন্ট আউট করা ছিল দুঃসাধ্য। পরবর্তীকালে ১৯৪৯ সালে বিদ্যুৎ সংযোগ আসে। তখন কিনেছিলেন একটি এনলার্জার। তারপর আর দেখে কে? তৎকালীন শহরের এমন কোনও বনেদি বাড়ি ছিল না যেখানে বিনয় কুমার গুহ’র তোলা ছবি পাওয়া যেত না।
advertisement
পরবর্তীতে নরওয়ে থেকে বক্রেশ্বরে হিলিয়াম নিয়ে গবেষণা করতে আসা এক সাহেবের নজরে আসেন তিনি। সেই ১৯৬০-৬১ সালে গবেষণা করতে আসা এই সাহেবের লাইকা ক্যামেরার শাটার লক হয়ে গিয়েছিল। যে লকটি বিনয়বাবু খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার কর্মকাণ্ডে আপ্লুত হয়ে নরওয়ের সেই সাহেব একাধিক ক্যামেরা ও ফ্ল্যাশ তাঁকে উপহার দেন। স্বাভাবিকভাবেই এর পর তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছিল শহরজুড়ে। সেই সময় ততকালীন জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁকে ‘পাবলিসিটি ফটোগ্রাফার’ মর্যাদাও দেওয়া হয়। সেই বিনয় গুহর বয়স এখন প্রায় ৯৫ বছর। শতবর্ষ থেকে মাত্র পাঁচ বছর দূরে দাঁড়িয়ে। তবে আজ ছবি তোলা তো দূর, বার্ধক্যের কারণে ঠিক করে কথাও বলতে পারেন না। কিন্তু তার সেই চিরনতুন ক্যামেরাগুলিকে আজও আগলে রেখেছেন।
advertisement
advertisement
বিপুল ঐতিহ্যের সাক্ষী এই পুরানো ক্যামেরাগুলো অনেকেই কিনতে আসেন বা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যদিও বিনয়বাবু এগুলো আজও পর্যন্ত বিক্রি করেননি। বরং সেই ইতিহাস বুকে আঁকড়ে তিনি বেঁচে আছেন।
১৯২৯ সালে বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার। তাঁর পিতা ছিলেন সরকারি চিকিৎসক। কিন্তু বিনয়বাবুর যখন মাত্র ১৩ বছর বয়স তখন বাবাকে হারান। সংসারে নামে অভাব অনটন। স্বাভাবিকভাবেই নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা ছাড়তে হয়। পরবর্তীতে কখনও সুপারির ব্যবসা, কখনও বিস্কুটের দোকানে বা কখনও রেশনের দোকানে কাজ করেছেন। এসবের পর একটি চা কোম্পানিতে চাকরি করেন প্রায় ৪৫ টাকা মাসিক বেতনে। এই কাজের সূত্রেই তাঁর পরিচয় হয় এক বিচারকের সঙ্গে। তিনিই তাঁকে ছবি তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
advertisement
জীবনের অতীতের ফিরে গিয়ে বিনয়বাবু জানান, ওই বিচারকের কথা আমায় রোমাঞ্চিত করেছিল। তারপর আর ভাবিনি। ১৯৪৫ সালে খুলনায় গিয়ে দাদু প্রসন্নকুমার দাসের কাছে ছবি তোলা শিখি। মায়ের গয়না বিক্রি করে ৬০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম একটি মিনি ক্যামেরা। ওই বছরই কলকাতার একটি স্টুডিওতে এসে কাজে যোগ দিই। স্টুডিওর কাজ আর ছবি তোলা দুটিই সমান্তরালে চলছিল। স্বাধীনতার আগে নেতাজির স্যালুট দেওয়ার ছবির চাহিদা ছিল তুঙ্গে। বি-টু সাইজের ১০০ টি ছবি প্রিন্ট করে দিতে পারলে মিলত অতিরিক্ত ১ টাকা। স্টুডিওর বাইরে সেই কাজ চলতে থাকে। তার থেকে টাকা জমিয়েই ১৯৪৭ সালে ৬০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন প্রথম প্লেট ক্যামেরা ভল্গটেন্ডার।
advertisement
আরও বলেন, সিউড়িতে মাসির বাড়িতে এসেছিলাম।তখনও এ শহরে কোন‌ও স্টুডিও ছিল না।টিনবাজারের একটি দোতলা ঘর ভাড়া নিয়ে স্টুডিও বানিয়ে পাকাপাকিভাবে সিউড়ি চলে আসি।ক্যামেরার প্রযুক্তি বদলেছে ঠিকই, তবে তার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকেও খাপ খাইয়েছি। প্রথমে প্লেট ক্যামেরা, তারপর ১২০/৩৫ ফিল্ম ক্যামেরা, রোলিফ্লেক্স, রোলিকর্ড, ইয়াসিকা ৩৬৫ সহ বহু ক্যামেরা কিনেছি। সিউড়িতে প্রথম বিদ্যুৎ সংযোগ আসার পর কিনেছিলাম এনার্জারও। সেসব আজও আমি সংরক্ষণ করে রেখেছি। শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এই ক্যামেরা তাঁর সঙ্গে থাকবে বলেই জানান।
advertisement
সৌভিক রায়
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Bangla Video: নেতাজি থেকে ইন্দিরা, বিনয় গুহর ক্যামেরায় বন্দি সকলে
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement