#বীরভূম: নিজের রাজ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে না, কিন্তু তা বলে ত্রিপুরা! হ্যাঁ, ত্রিপুরাতেও ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি ডাকাবুকো অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। তাঁকে পাশে পেতে চেয়ে ইতিমধ্যেই আবেদন করেছে ত্রিপুরা তৃণমূল (Tmc Tripura)। আর সেই সূত্রেই এবার ত্রিপুরা যাচ্ছেন অনুব্রত। শুধু যাচ্ছেন না, বিজেপির উদ্দেশ্যে রীতিমতো 'খেলা'র হুঁশিয়ারি দিয়ে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন 'কেষ্ট দা'। রবিবার বীরভূমে মহম্মদ বাজারে ফুটবল খেলার উদ্বোধন করে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই অনুব্রত বলেন, ‘ত্রিপুরাতেও ভয়ংকর খেলা হবে। পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ যেমন খেলা হয়েছে, ত্রিপুরাতেও সেরকম খেলা হবে।’
তবে, শুধু ত্রিপুরা নয়, উত্তরপ্রদেশে তৃণমূলের 'খেলা হবে' স্লোগান ব্যান করায় যোগী সরকারকেও নিশানা করেছেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, 'আসলে উত্তরপ্রদেশ সরকার ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই তারা আমাদের খেলা হবে স্লোগান বন্ধ করে দিয়েছে।’ যদিও স্লোগান বন্ধ করে তৃণমূলকে রোখা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। দাবি করেছেন, স্লোগান বন্ধ করলেও আগামী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলই চ্যাম্পিয়ন হবে।
প্রসঙ্গত, কেষ্ট দা'র জন্যে এখন 'কষ্ট' করতেও ইচ্ছুক ভিন রাজ্যের তৃণমূল নেতারা। বিশেষত ত্রিপুরার তৃণমূল নেতারা অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। অনুব্রতর ত্রিপুরা সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের তরফে সবুজ সংকেত মিলেছে। উত্তর-পূর্বের এই ছোট রাজ্যে আগামী দিনে কী পরিকল্পনা করে দল এগোবে, তা জানাতে গিয়েই মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কাছে অনুব্রতর জন্য অনুরোধ করেছেন সে রাজ্যের ঘাসফুল শিবিরের নেতারা। তাদের আবদার, একটি বার যদি দেখা পাওয়া যায় কেষ্ট দা'র অর্থাৎ বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের, তাহলে কর্মীদের চাঙ্গা হতে আরও সুবিধা হয়।
আপনি কি ত্রিপুরা যাচ্ছেন? প্রশ্নের জবাবে অনুব্রত সাফ বলেন, ‘দল চাইলে যাব। তবে আমি রেফারিং করব না, আমি সবসময় খেলতে ভালোবাসি। তাই আমি এবার ত্রিপুরায় গিয়ে খেলব। আর খেলতে খেলতে কর্নার থেকে গোলও দেব।' যদিও অনুব্রতকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি এ রাজ্যের বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, 'যাক না খেলতে, খেলা তো ভালোই। খেপ প্লেয়ার, মাচা শিল্পীরা তো এদিক-ওদিক যায়। উনিও যান। ত্রিপুরার মানুষ খেলা দেখবে, মনোরঞ্জন হবে।'
আরও পড়ুন: মমতা-অভিষেকের মতোই 'জনপ্রিয়তা', ত্রিপুরা তৃণমূলের দাবি 'অনুব্রতকে চাই'!
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আগরতলায় বিশাল মিছিল করার কথা রয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রতর ত্রিপুরা যাওয়ার কথা আলাদা তাৎপর্য তৈরি করছে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে। ত্রিপুরার নেতা-কর্মীদের দাবি, যেভাবে সেখানে আক্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূল নেতারা, সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের মতো ডাকাবুকো নেতাকে একবার হাতের নাগালে পেলে তাঁদের মনোবল বাড়বে। তাঁরা চাইছেন এখন থেকেই অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট দা আসুন ত্রিপুরায় ঝড় তুলতে।
ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশিষলাল সিংয়ের কথায়, "কেষ্ট দা'র মধ্যে একটা ব্যাপার আছে৷ ওঁর গরম-গরম বক্তব্য ভীষণ আকৃষ্ট করে মানুষকে। দাদার একাধিক বক্তব্য ভাইরালও হয়েছে। আমাদের রাজ্যেও ওঁর বক্তব্য শুনে শুনে এমন অভ্যাস হয়ে গেছে যে, কেষ্ট দা'র ডায়লগ এখন সবাই বলতে শুরু করেছেন। তাই দিদি ও অভিষেকের পাশাপাশি আমাদের আবদার থাকবে, অনুব্রত মণ্ডলকেও ত্রিপুরায় মাঝে মাঝে পাঠানো হোক।" আর দলের অন্দরের সেই মনোভাব বুঝেই নিজেকে 'খেলা'র জন্য প্রস্তুত করে নিচ্ছেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Anubrata Mondal