খেঁজুর গুড়েও ভেজাল! মিশছে চিনি, নকল গন্ধে চলছে মন ভোলানো
- Published by:Simli Raha
- news18 bangla
Last Updated:
পঞ্চাশ কেজি খেঁজুর রসে মাত্র পাঁচ কেজি গুড় হয়। তার দাম কম করে হাজার টাকা হওয়া উচিত। অর্থাৎ কেজি প্রতি দু’শো টাকা।
Saradindu Ghosh
#বর্ধমান: মন মাতানো গন্ধ। গন্ধ শুঁকেই আসল খেঁজুর গুড় চিনে নিতে চাইলে ঠকার সম্ভাবনা পদে পদে। কারণ, ক্রেতার মন জয় করতে খেঁজুর গুড়ে মেশানো হচ্ছে এসেন্স। খেঁজুর গুড়ে মিশছে চিনিও।
শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্ধমানে কার্জন গেট লাগোয়া সিধো কানহোর মূর্তির সামনে লাইন দিয়ে বসে পসরা সাজিয়েছেন খেঁজুর গুড় বিক্রেতারা। শীত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ডেরা এখানেই। এই বিক্রেতারা মূলত বর্ধমানের কাটোয়া কেতুগ্রামের বাসিন্দা। গোটা শীতকাল খেঁজুর গুড় বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। বর্ধমান আদালত লাগোয়া হোটেলগুলিতে কোনও রকমে রাত কাটে। দিন কাটে গুড় বিক্রি করে।
advertisement
advertisement
টিনে নলেন গুড় ছাড়াও তাঁদের কাছে রয়েছে বিভিন্ন আকারের পাটালি। দামও তাদের ভিন্ন। আশি টাকা কেজি থেকে দু’শো টাকা পর্যন্ত। এতো কম দামে কিভাবে দিচ্ছেন খাঁটি খেঁজুর গুড়!
কম দামের অধিকাংশ খেঁজুর গুড়েই চিনি মেশানো হয় ৷ জানালেন উদ্ধারণপুরের বাসিন্দা পেশায় খেঁজুর গুড় ব্যবসায়ী মঙ্গল হাজরা। তিনি বললেন, পঞ্চাশ কেজি খেঁজুর রসে মাত্র পাঁচ কেজি গুড় হয়। তার দাম কম করে হাজার টাকা হওয়া উচিত। অর্থাৎ কেজি প্রতি দু’শো টাকা। কিন্তু অতো দাম হাঁকলে অনেকেই কিনতে চান না। তাই প্রতিযোগিতার বাজারে দাম কম রাখতেই হয়। তখনই তাতে ভেজাল মেশে।
advertisement
বিক্রেতারা জানালেন, এমনিতে খেঁজুর গাছ লিজ নিতে হয়। এরপর সেই রস ফোটাতে শ্রমিকের বেতন আছে। প্রচুর জ্বালানি খরচ আছে। গুড় তৈরি করে তা বাজারে পাঠানোর খরচ আছে। এর পর রয়েছে আমাদের লাভ। অতো কম দামে খাঁটি খেঁজুর গুড় দেব কি ভাবে!
advertisement
তাঁরা বললেন, এমনিতে খাঁটি গুড়ে পাটালি হয় না। তাতে অন্তত একটু হলেও খাবার সোডা মেশাতেই হয়। তবে সহজ উপায় হল চিনি মেশানো। বাজারে তুলনামূলক কম দামে একটু মিহি চিনি পাওয়া যায় । সেই চিনিই এখন মেশানো হচ্ছে। পঞ্চাশ কেজি খেঁজুর রসে ছ’কেজি পর্যন্ত চিনি মেশানো হয়। তাতে ১১-১২ কেজি গুড় মেলে। সেই গুড় আশি বা একশো কুড়ি টাকা দরে বিক্রি করা হয়। খেঁজুর গুড়ের গন্ধ ঠিক রাখতে তাতে কৃত্রিম গন্ধের এসেন্স মেশানো হয়। তখন তা আসল খেঁজুর গুড় বলেই মনে হয়।
advertisement
তাঁরা জানালেন, খেঁজুর গুড়ের পাটালি কিছুদিন বাড়িতে রেখে দিলে তার গায়ে সাদা সাদা দাগ দেখা যাবে। তখনই বুঝতে হবে তাতে চিনি মেশানো রয়েছে।
বিক্রেতারাই জানালেন, খেঁজুর গুড়ের পাটালি মুখে দিয়ে আসল নকলের ফারাক অনেকটাই ধরা যায়। পাটালির টুকরো মুখে ফেলার পর তা শক্ত লাগলে বুঝতে হবে তাতে চিনি আছে। মুখের মধ্যে তা মিলিয়ে গেলে বুঝবেন সে গুড় অনেকটাই খাঁটি।
advertisement
বিক্রেতারা বললেন, অনেক খদ্দের আসল গুড় খোঁজেন। তাঁরা বেশি দাম দিয়ে তা কিনে নিয়ে যান। তাঁদের জন্য সময় দিয়ে আসল গুড় আনিয়ে দেওয়া হয় । আসল নলেন গুড়ের কেজি প্রতি দাম পড়ে আড়াইশো টাকা। ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে ভালো মানের খেঁজুর গুড়ের পাটালি দেওয়া যায়।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
December 27, 2019 1:04 PM IST