জয়রামবাটিতে মা সারদার জন্মভিটেতে ৯৫ বছর ধরে চলছে আড়ম্বরহীন দুর্গা আরাধনা

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

  • Last Updated :
  • Share this:

    চেনা ঘর।  চেনা পুজো। তবু  প্রতিবারই নতুন। এ যেন এক উমার জন্মভিটে আরেক উমার আবাহন।  পঁচানব্বই বছর ধরে আড়ম্বরহীন নিষ্ঠার দুর্গাপুজো বাঁকুড়ার জয়ররামবাটিতে। সারদার জন্মভিটেতে পুজো শুরু হয় বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগে।

    যদি শান্তি চাও, মা, কারও দোষ দেখো নাদোষ দেখবে নিজের.....জগতকে আপন করে নিতে শেখ ....কেউ পর নয়, মা, জগৎ তোমার......

    মা সারদা।  যেন অন্য এক উমা।  বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম সারদামণি মুখোপাধ্যায়ের । সালটা ১৮৫৩ ।  বাইশে ডিসেম্বর। সেকালের রীতি মেনে মাত্র পাঁচ বছরেই  বিয়ে হুগলি জেলার কামারপুকুরের বাসিন্দা গদাধর  চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ।  বিয়ের পর বেশ কিছু বছর জয়রামবাটিতেই ছিলেন। তারপর কখনও কামারপুকুর, কখনও দক্ষিণেশ্বর, কখনও বাগবাজারে থাকতেন সারদা মা। মাধেমধ্যেই আসতেন বাপেরবাড়ি।  সেখানে খড়ের চালার মাটির বাড়িতে শিষ্যদের গল্পের ছলে উপদেশ দিতেন।  ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে হলেও বাড়িতে অবাধ যাতাযাত ছিল অন্ত্যজদের।  সেই সময়ে দুর্গাপুজো হত না জয়রামবাটিতে। হত জগদ্ধাত্রীপুজো।

    শোনা যায়, ললিতমোহন চট্টোপাধ্যায় দুর্গার অয়েল পেন্টিং করে সারদা মাকে দেখিয়েছিলেন। সেই ছবি মনে ধরে তাঁর। এরপর প্রায় তিরিশ বছর সেই ছবিতেই পুজো হত জয়রামবাটিতে। ১৯২৩ সালে বেলুড়মঠের তৎকালীন অধ্যক্ষ স্বামী সারদানন্দের উদ্যোগে জয়রামবাটিতে তৈরি হয় মিশন। ১৯৫৩ সাল থেকে ভক্তদের দাবি মেনে প্রতিমা তৈরি করে শুরু হয় দুর্গা আরাধনা।

    বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে মন্ত্র, বিধি ও তিথি নিয়ম মেনে পুজোর নিয়ম জয়রামবাটিতে।  অষ্টমী তিথিতে কুমারী পুজো দেখতে লক্ষ মানুষ ভিড় জমান। কুমারী হিসেবে আজও পুজো পায় মায়ের বাপেরবাড়ির বংশের কোনও কুমারী কন্যা।

    আড়ম্বরের দেখনদারি নেই।  ভাব ও নিষ্ঠাই জয়রামবাটি মিশনের দুর্গাপুজোর একমাত্র সম্বল।

    First published:

    Tags: District Durga Puja, Durga Puja 2018, Joyrambati, Sarada Maa, Traditional Durga Puja