Sovon Das
#মেদিনীপুর: পুজো জাঁকজমক ভাবে না হলেও পুজোর নিয়ম রয়েছে একই রকম। গত ১৭৪ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠা একই রেখে পুজোর ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন মেদিনীপুর শহরের সাহাভড়ং বাজারের দে পরিবার। দে পরিবারের এই পূজা চলে আসছে পাঁচ পুরুষ ধরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের লোয়াদার বাসিন্দা প্রয়াত রামচরণ দে বাণিজ্য সুত্রে মেদিনীপুর শহরের সাহাভড়ং বাজারে এসেছিলেন এবং এখানেই শুরু করেছিলেন দুর্গাপূজা। সেইসময় বেশ জাঁকজমক পূর্ণ পূজা হতো দে পরিবারে। একটি মেড়ের মধ্যেই প্রতিমা তৈরি করে হতো পুজো। তখন বলি প্রথাও ছিল দে পরিবারে। এরপর পুজোর রাশ বংশানুক্রমে যায় ছেলে সত্যচরণ দের হাতে। তখনও ছিলো সমস্ত প্রথা।
পরবর্তীতে সত্যচরণ দের পুত্র অনিলচন্দ্র দে এবং তাঁর দাদা ও ভাইদের উপর দায়িত্ব আসে পুজোর। কিন্তু ঐ সময় অনিলচন্দ্র দের স্ত্রী ভুলিরানী দে পশু বলির ঘোর বিরোধিতা করায় বন্ধ করে দেওয়া হয় পশুবলির আচার।এই সময়কালে দে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতাও কিছুটা কমে আসে, ফল স্বরুপ পূজোতে প্রতিমা তৈরিও বন্ধ হয়ে পড়ে। তখন থেকে শুরু ঘটে পটে পুজো। বর্তমানে সেই ঐতিহ্যবাহী পুজো একপ্রকার জাঁকজমকহীন ভাবেই করে আসছেন অনিলচন্দ্র দের পুত্রদ্বয়গন। দে বাড়ির অন্যতম কর্ত্রী প্রীতি দে জানান, পুজোর জাঁকজমকে খানিকটা ভাঁটা পড়লেও পুজোর আচার নিয়মে একটুও খামতি রাখেননি তাঁরা।
এই বাড়ির পুজো শুরু হয় প্রতিপদ থেকে। ১০ দিন ধরে চলে মা মহামায়ার আরাধনা। পুজোর বৈশিষ্ট্য হল সপ্তমী থেকে হোম শুরু হয় এবং সেই হোমের আগুন নবমীর দক্ষিণান্ত পর্যন্ত জ্বলে। এবং পুরানো সময়কালে মহিলাদের বাড়ির বাইরে যেন না বেরোতে হয়, সেজন্য বাড়ি থেকে মন্দিরে যাওয়ার সেতু তৈরি করা হয়েছিল, যা আজও বর্তমান। বাড়ির অন্য এক কর্ত্রী তপতি দে বলেন, তবে এ বার আর অন্যান্য বছরের মতো আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন না পরিবারের সদস্যরা। এমনকি বিদেশে যাঁরা থাকেন তাঁরাও এ বারের পুজোতে আসতে পারবেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সব মিলিয়ে করোনা যে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আনন্দে জল ঢালবে সেটাই মনে করছেন দে পরিবার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: durga-puja-2020, Medinipur, Traditional Durga Puja 2020