#ক্যানিংঃ রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং ও তালদি স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকার মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখে চাঁদখালিতে একটি হল্ট স্টেশনের শিলান্যাস করেছিলেন। পরবর্তী বাজেটে সেই স্টেশন তৈরির টাকা বরাদ্দ হয়। গত কয়েক বছর ধরে স্টেশনটি তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও সেখানে ট্রেন দাঁড়াতো না। ফলে পরিত্যক্ত স্টেশনে দিনের পর দিন বাড়ছিল দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য। এলাকাবাসীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে গত মার্চ মাসে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস এই স্টেশন চালুর আবেদন জানিয়ে শিয়ালদহের ডিআরএমের কাছে নিজের প্যাডে চিঠি দিয়েছিলেন। এরপরেই নড়েচরে বসে রেল দফতর। তবে রাজ্য সরকারের তরফে রেলের কাছে আরও একটি দাবি জানানো হয়েছিল হল্ট স্টেশনের নাম চাঁদখালির পরিবর্তে মাতলা করার। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে এই স্টেশন চালু হল।
স্টেশন চালু হলেও আপাতত মোট চার জোড়া ট্রেন এখানে থামবে বলেই রেলের তরফে জানানো হয়েছে। সারাদিনে আপ ও ডাউন মিলিয়ে মোট চার জোড়া ট্রেন দাঁড়াবে এই মাতলা হল্ট স্টেশানে। এই স্টেশান চালু হওয়ায় যেমন খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ তেমনি স্টেশনের নাম চাঁদখালি থেকে বদলে মাতলা করায় তাঁরা যথেষ্ট অখুশি। এই নাম যাতে না বদল করা হয় সে বিষয়ে স্টেশান চত্বরে গিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা। এমনকি স্টেশনের বোর্ডের নামও গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়ে ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীরা বদল করতে পারেন নি। পরে অবশ্য রাতারাতি স্টেশনের নাম বদল করে ট্রেন চালু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এলাকার নামের সাথে সঙ্গতি রেখেই রেল স্টেশানের নাম হওয়া উচিৎ।
আরও পড়ুনঃ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান পুলিশের! অস্ত্র-সহ গ্রেফতার এক
কিন্তু সেই নাম বদল হলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। আর তাই নাম বদলের বিরোধিতা করেই তাঁরা স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা নকুল সর্দার, সিতারাম মণ্ডলরা বলেন, “ ছোট থেকেই এই এলাকার নাম চাঁদখালি। আমাদের পূর্বপুরুষ, আত্মীয় স্বজন সকলেই এই নামের সাথেই পরিচিত। এখন হটাৎ করে এই নাম পরিবর্তন হলে বাইরে থেকে আসা মানুষ সমস্যায় পড়বেন। আমাদেরও নানা সমস্যা তৈরি হবে।” যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক বলেন, “মাতলা সুন্দরবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। গোটা ক্যানিংটাই এই নদীর পাড়ে অবস্থিত। সেই নদীর নামে স্টেশন তৈরি হলে তাতে আমাদের গর্ব হওয়া উচিৎ। কয়েকদিন অসুবিধা হলেও আশাকরি দ্রুত সেই সমস্যা মিটে যাবে।”
আরও পড়ুনঃ খারাপ আবহাওয়ার জেরে বঙ্গোপসাগরে ডুবল ট্রলার, নিখোঁজ ১৮ মৎস্যজীবী!
তিনি আরও বলেন, ঐ এলাকায় ট্রেন দাঁড়াবে এতে এলাকার মানুষের ভীষণ সুবিধা হবে। ট্রেন ধরতে আর চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে না। মাতলা নামেও মানুষ দ্রুত অভ্যস্ত হয়ে যাবেন. ২০০৯ সালের ১৪ ই নভেম্বর ক্যানিংয়ে স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে রেল দফতর আয়োজিত একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসে ক্যানিং থেকে ভাঙনখালি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের শিলান্যাসের পাশাপাশি তালদি ও ক্যানিং স্টেশনের মাঝে চাঁদখালিতে একটি হল্ট স্টেশনের শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আমলেই কাজে গতি এসেছিল।
দ্রুত জায়গা শনাক্ত করে স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। বছর কয়েক আগেই সেই রেল স্টেশান তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে যায়। কিন্তু দিনের পর দিন স্টেশান চালু না হওয়ায় সমস্যায় পড়েন স্থানীয়রা। বারে বারে বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও এই স্টেশন চালু হয়নি।এলাকার মানুষের অসুবিধার কথা জানতে পেরে উদ্যোগ নেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক। শিয়ালদহ ডিআরএমের কাছে এই স্টেশনটি চালু করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আবেদনে সাড়াও দেন রেল কতৃপক্ষ। দ্রুত যাতে এই স্টেশনটি চালু হয় সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় রেলের তরফে। অবশেষে কয়েকমাসের মধ্যেই এই স্টেশান চালুর উদ্যোগ নিল রেল। পূর্বরেলের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “স্টেশনটির কিছু কাজ বাকি ছিল। সেগুলি সমাপ্ত হতেই স্টেশনটি চালু করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সারাদিনে মোট চার জোড়া ট্রেন দাঁড়াবে এই স্টেশনে।”
Suman Saha
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Canning, Indian Railway, South 24 Parganas