South 24 Parganas: পেশায় মৎস্যজীবী, প্যাশনে প্রত্নতাত্ত্বিক সুন্দরবনের বিশ্বজিৎবাবু!
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
সুন্দরবনের সুপ্রাচীন ইতিহাসকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে একা লড়াই করছেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক মৎস্যজীবী বিশ্বজিৎ সাহু। তাঁর এই অসম লড়াই এ তিনি পাশে পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী সবিতা সাহুকে।
#পাথরপ্রতিমা : সুন্দরবনের সুপ্রাচীন ইতিহাসকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে একা লড়াই করছেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক মৎস্যজীবী বিশ্বজিৎ সাহু। তাঁর এই অসম লড়াই এ তিনি পাশে পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী সবিতা সাহুকে। নিজেদের উদ্যোগে সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপ জি প্লটের গোবর্ধনপুরে গড়ে তুলেছেন সংগ্রহশালা। সেই সংগ্রহশালাতে রয়েছে একাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী রয়েছে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাণীর হাড়ের সংগ্রহ। তাঁর সংগ্রহশালায় রয়েছে দশ হাজারের ও বেশি প্রত্নবস্তু। বিশ্বজিৎবাবুর লড়াইটা শুরু হয়েছিল খুব ছোটবেলায়। অভাবের সংসারে ১৪ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে শুরু করেন দিনমজুরের কাজ। নদীর বাঁধ তৈরী, মাছধরার কাজ থেকে শুরু করে একাধিক কাজ করেন তিনি।
advertisement
১৬ বছর বয়সে তাঁর আ্যপেনডিসাইটিস এর চিকিৎসার জন্য কলকাতার যাওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেখানে তিনি জাদুঘর দেখে প্রত্নতত্বের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন। সেই থেকে শুরু হয় তাঁর সংগ্রহশালা তৈরীর স্বপ্ন। এরপর থেকে তিনি প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করতে শুরু করেন। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন। প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করে নিজের বাড়িকেই তিনি সংগ্রহশালায় রূপান্তরিত করেছেন। এই সংগ্রহশালা রক্ষণাবেক্ষণ করেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী। বর্তমানে এই সংগ্রহশালায় রয়েছে হরিণের শিং, বাঘের পায়ের হাড়, জীবাশ্ম, পাথরের হাতিয়ার, পোড়ামাটির বস্তু সহ একাধিক সামগ্রী। বিশ্বজিৎবাবু এই সংগ্রহশালা গোবর্ধনপুরে তৈরী করছিলেন।
advertisement
তবে বঙ্গোপসাগরের করাল গ্রাসে বাঁধ ভেঙে জল প্রবেশ করেছিল এলাকায়। বাধ্য হয়ে তিনি বুড়োবুড়ির তটে চলে আসেন। সেখানে নতুন করে ঘর বেঁধে এই সংগ্রহশালা তৈরীর কাজ শুরু করেন। সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ থেকে তিনি এই প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করেন। তবে এই সংগ্রহশালা দেখার জন্য তিনি কোনো অর্থ নেননা। বর্তমানে চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে তিনি দিন যাপন করছেন। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাঁর। বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত তিনি। প্রায়শই চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে হয় তাঁর। একথা জানিয়ে তাঁর স্ত্রী সবিতা সাহু সকলের কাছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন।
advertisement
এই সংগ্রহশালা নিয়ে বিশ্বজিৎবাবু জানান সংগ্রহশালা গড়ে তুলে সুন্দরবনের ইতিহাসকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এই সংগ্রহশালার নাম দেওয়া হয়েছে গোবর্ধনপুর সুন্দরবন প্রত্ন সংগ্রহশালা। বর্তমানে এই সংগ্রহশালা তৈরী করতে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। নদী ও সমুদ্রে মাছধরে যেটুকু অর্থ উপার্জন হয় তার সবটুকু দিয়ে এই সংগ্রহশালা তৈরী করা হয়েছে। বর্তমানে এই অর্থের অভাবে এই সংগ্রহশালার রক্ষনাবেক্ষনের অভাব দেখা দিয়েছে।
advertisement
সরকারি অথবা বেসরকারি সহযোগিতায় এই সংগ্রহশালা রক্ষণাবেক্ষন করা হলে তাঁর স্বপ্ন স্বার্থক হবে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চল এই জি প্লটের একেবারে শেষপ্রান্ত যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই অনুন্নত। যেই দ্বীপ মূল ভূখন্ডের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সেই দ্বীপে এই সংগ্রহশালা দ্বীপবাসীর কাছে এক গর্বের বিষয়। সেই সঙ্গে যিনি এই সুন্দরবনের অজানা রহস্য বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার এই প্রয়াস নিয়েছেন সেই বিশ্বজিৎবাবু দ্বীপবাসীর গর্ব। তাঁর এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।
advertisement
যোগাযোগ : বিশ্বজিৎ সাহু, মোবাইল নং ৮৭৬৮৯৫৮৬৮৩ ঠিকানা : গোবর্ধনপুর, জি প্লট, পিন- ৭৪৩৩৭১
advertisement
Nawab Mallick
view commentsLocation :
First Published :
September 03, 2022 7:26 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণ ২৪ পরগনা/
South 24 Parganas: পেশায় মৎস্যজীবী, প্যাশনে প্রত্নতাত্ত্বিক সুন্দরবনের বিশ্বজিৎবাবু!
