East Medinipur News: ১৬ বছরেই দুই সন্তানের মা মীরা রোজগারের সন্ধানে বেরিয়ে সাত বছর আগে হারিয়ে যায়, তবে শেষটা পুরো সিনেমার মত
- Published by:kaustav bhowmick
- news18 bangla
Last Updated:
মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়। রাস্তার ঠিকে শ্রমিকের কাজ শুরু করে। ১৬ বছর বয়সেই দুই সন্তানের মা হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে রোজগার বাড়াতে হবে এই চিন্তাই দিন দিন অস্থির করে তুলছিল মীরাকে। এমন সময় এক মধ্যবয়স্ক মহিলার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে বেশি অর্থ রোজগারের লোভ দেখায়। প্রলোভনে পড়ে মীরা বাড়ি ছাড়ে। ঐ অচেনা মহিলার সঙ্গে একদিন ট্রেনে উঠে পড়ে। সেটা ২০১৬ সালে।
পূর্ব মেদিনীপুর: সাত বছর আগের এক রাতে মানসিক ভারসাম্যহীন মীরাকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তারপর মীরার ঠাঁই হয় নিমতৌড়ির তমলুক উন্নয়ন সমিতির জুভেইনাল হোম। সেখানে সঠিক চিকিৎসা পেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে মীরা। একসময় সে বাড়ির ঠিকানা ও পরিচয় জানায়। এরপর তৎপরতা শুরু হয় তাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
হোম কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহায়তায় মীরার বাড়ির খোঁজ পায়। জানা যায় মহারাষ্ট্রের পারভনি জেলায় বাড়ি মীরার। জানা যায়, দরিদ্র পরিবারে জন্মানোর কারণে লেখাপড়া শেখার কোনও সুযোগ ছিল না। ছোট থেকেই অপুষ্টিতে ভুগত। কোনদিন খাওয়া জুটত, আবার কোনদিন জুটত না। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়। রাস্তার ঠিকে শ্রমিকের কাজ শুরু করে। ১৬ বছর বয়সেই দুই সন্তানের মা হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে রোজগার বাড়াতে হবে এই চিন্তাই দিন দিন অস্থির করে তুলছিল মীরাকে। এমন সময় এক মধ্যবয়স্ক মহিলার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে বেশি অর্থ রোজগারের লোভ দেখায়। প্রলোভনে পড়ে মীরা বাড়ি ছাড়ে। ঐ অচেনা মহিলার সঙ্গে একদিন ট্রেনে উঠে পড়ে। সেটা ২০১৬ সালে।
advertisement
advertisement
সন্তানদের ছেড়ে আসতে হওয়ায় মীরার মন খারাপ ছিল। হঠাৎই এক স্টেশনে নেমে পড়ে । তারপর নিজের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য এ ট্রেন সে ট্রেনে উঠে পড়ে। এইভাবেই এসে পৌঁছয় মেচেদা। হাঁটতে হাঁটতে রাতের দিকে রামতারক এলাকায় এসে পৌঁছয়। তমলুক থানার টহলদারি মোবাইল ভ্যানের নজরে পড়েছিল সে। এরপর গত সাত বছর ধরে নিমতৌড়ির হোমই ঘর-বাড়ি হয়ে উঠেছিল মহারাষ্ট্রের মীরার। এখানেই শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সেলিং শুরু হয়। তাতেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে ওই তরুণী।
advertisement
তমলুকের হোমে যখন এসেছিল তখন মীরা ছিল নাবালিকা। বর্তমানে তার বয়স ২৩ বছর। তার থেকে বাড়ির ঠিকানা পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ মহারাষ্ট্র পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার ছবি দেখিয়ে জানতে পারে ২০১৬ সালে মীরার নামে মিসিং ডায়েরি হয়েছিল। ইতিমধ্যে মীরা হোমে হাত সেলাইয়ের কাজ শিখেছে। খেলাধুলোতেও সে বেশ ভালো হয়ে ওঠে। স্পেশাল অলিম্পিকে এনসিসি ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলার হয়ে অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জ জেতে। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার মীরাকে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে সম্মানিত করে ২০২১ সালে। নিমতৌড়ির এই হোমে মীরা যেন নতুন করে জীবনকে ফিরে পায়। বর্তমানে সুস্থ মীরা বাড়ি ফিরে গেল নিজের উপার্জিত ৭০ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে।
advertisement
মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের হাতে মীরাকে তুলে দেওয়া হয়। সেই সময় তমলুক উন্নয়ন সমিতি হোমের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক ও মেম্বার সেক্রেটারি জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট সুদীপ্ত বিশ্বাস মহাশয়, জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সারদা গিরি এবং পিওআইসি সঙ্গীতা সাহু।
সৈকত শী
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
March 03, 2023 1:17 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পূর্ব মেদিনীপুর/
East Medinipur News: ১৬ বছরেই দুই সন্তানের মা মীরা রোজগারের সন্ধানে বেরিয়ে সাত বছর আগে হারিয়ে যায়, তবে শেষটা পুরো সিনেমার মত