#পূর্ব বর্ধমান: দীর্ঘ ৬০ বছর পর স্বীকৃতি পেলেন জামালপুরের বিদুষী নারী লীলাবতী দেবী। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে গৃহস্থ পরিবারের বিধবা লীলাবতি মিত্র দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ব্রাত্যই ছিলেন। লীলাবতী দেবীর দান করা ৯ একর ৭০ শতক জমিতেই গড়ে ওঠে জামালপুর হাসপাতাল। প্রতিদিন বহু মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পান এখানে। কংগ্রেস জামানা ও তার পরের ৩৪ বছরের বাম জামানাতে, স্বাস্থ্য দফতর বা কোনো নেতা-মন্ত্রী লীলাবতী দেবীকে ন্যুনতম মর্যাদাটুকু দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। অতিক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস রাজত্বের ১১টা বছর। বহু আবেদন-নিবেদনেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতি উদ্যোগী হওয়ায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা পেলেন লীলাবতী দেবী।
১৯৬২ সালে যখন জামালপুরে সেই ভাবে চিকিৎসা পরিষেবা ছিল না, অসুস্থ মানুষকে বর্ধমান ছুটতে হতো, এমনকি বিনা চিকিৎসায় মারা যেত অনেকে। সেইসব মানুষের কথা ভেবে এগিয়ে আসেন সেই সময়কার অন্যতম এক বিদুষী নারী লীলাবতী দেবী। তিনি তাঁর সম্পত্তি থেকে ৯ একর ৭০ শতক জমি দান করেন তৎকালীন রাজ্য সরকারকে, জামালপুরে হাসপাতাল তৈরি করার জন্য। সেই সময় যে ভাবনা থেকে তাঁর এই মহান কাজ, তাঁর আত্মত্যাগ, তার কোনো স্বীকৃতি এতদিন ছিল না। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ঘোষণা করা হয়েছিল মনীষীদের যোগ্য সম্মান সরকারিভাবে দেওয়া হবে।
২০১৮ সালে লীলাবতী দেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে আর্জি জানানো হয় লীলাবতী দেবীর স্বীকৃতির জন্য। মূর্তি বসানোর কাজও শুরু হয় কিন্তু বাধ সাধে করোনা। দু'বছর বন্ধ থাকে সমস্ত কাজ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই মূর্তি বসানোর কাজ পুনরায় শুরু হয়। অবশেষে উন্মোচন হল লীলাবতী দেবীর আবক্ষ মূর্তি। সেখানেই ফলকে লেখা রয়েছে জমিদানের কথা। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও অবশেষে স্বীকৃতি মেলায় খুশি জামালপুরের বাসিন্দা ও লীলাবতী দেবীর আত্মীয় স্বজনরা।
জামালপুর হাসপাতালের সন্নিকটে থাকা সাবেকি বাড়িতে বসবাস করতেন লীলাবতীদেবী। তাঁর পরিবার প্রভূত সম্পত্তির মালিক ছিল। স্বামী ভৈরবচন্দ্র মিত্র প্রয়াত হবার পর নিঃসন্তান বিধবা লীলাবতীদেবী মানব কল্যাণে কিছু কাজ করার ব্যাপারে মনস্থির করেন। ভ্রাতুষ্পুত্র অমরেন্দ্রনাথ ঘোষ মাতৃস্নেহে আগলে রাখতেন লীলাবতীদেবীকে। বেশ কয়েক বছর আগে এনারা সকলে প্রয়াত হয়েছেন। একই বাড়িতে এখন বসবাস করেন অমরেন্দ্রনাথ বাবুর স্ত্রী প্রভাতীদেবী, পুত্র সুশান্ত ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী, পুত্ররা।
Malobika Biswasনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: East Bardhaman, Jamalpur