Purba Bardhaman: জমিতে কীটনাশক ব্যবহার না করার অনুরোধ বিশেষজ্ঞদের
Last Updated:
গোটা বিশ্বে পাঁচ জুন পরিবেশ দিবস (World Environment Day) পালিত হয়। তবে একটি বিশেষ দিন নয়, বিশ্ব প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রতিটি দিনই বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করা প্রয়োজন।
পূর্ব বর্ধমান: গোটা বিশ্বে পাঁচ জুন পরিবেশ দিবস (World Environment Day) পালিত হয়। তবে একটি বিশেষ দিন নয়, বিশ্ব প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রতিটি দিনই বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করা প্রয়োজন। গোটা দেশ জুড়ে পাঁচ জুন পালিত হয় এই বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের উদ্দেশ্য পরিবেশ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা পালিত হয়েছিল এই বিশেষ দিনটি। এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।ইকোস্টিস্টেম পুনরুদ্ধারে রাষ্ট্রপুঞ্জের অবদান তুলে ধরে পাঁচ জুন। প্রকৃতির অবদান বোঝাতেই এই বিশেষ দিন পালন করা হয়ে থাকে। প্রকৃতি যেভাবে নিঃস্বার্থ ভাবে আমাদের রক্ষা করে চলেছে তেমনই প্রকৃতিকেও রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। বাংলার শস্য গোলা বলা হয় পূর্ব বর্ধমানকে। শস্য অর্থাৎ ধান চাষের সিংহভাগই হয় পূর্ব বর্ধমানে। আর এই ধান চাষের ক্ষেত্রে চাষীরা জমিতে দিয়ে থাকেন নানা রকমের সার। এছাড়াও চাষীরা ব্যবহার করেন কীটনাশক বা পোকা মারার ওষুধ। জেলায় চাষ হয় আলু, নানা রকম সবজিও। ফলে এইসব চাষের ক্ষেত্রেও জমিতে ব্যবহার করা হয় কীটনাশক ও রাসায়নিক সার। যার ফলে চাষের সুবিধে হলেও ক্ষতি হয় পরিবেশের। ক্ষতি হয় আমাদের জন্ম ভূমি বা মাটি ও জলের। তাই কীটনাশক ব্যবহার করা বন্ধ করুক চাষীরা দাবি পরিবেশবিদদের একাংশের।
এ বিষয়ে পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষ জানান, \" আমারা ধান চাষ যে পদ্ধতিতে করি, তাতে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এছাড়াও ধান চাষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় কীটনাশক। পোকা মারার ওষুধ স্প্রে করা হয় ধানের গোড়ায়। যা পরে বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে যায় নদী, খাল বিলে। চাষের ক্ষেত্রে যে ফাটিলাইজার বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় যদিও তাতে অধিক ফলন হয় তবে এই রাসায়নিক সার মাটি নষ্ট করে দেয়। পাশাপাশি এই রাসায়নিক সার বৃষ্টির জলের সঙ্গে জলাশয়ে মিশে যাচ্ছে। ভারতবর্ষই একমাত্র জায়গা যেখানে ধান চাষে অধিক মাত্রায় মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। \" তিনি বলেন, জৈব সারে যেতে যদি নাও পারি, তাহলেও আমাদের কীটনাশক ব্যবহার কমাতে হবে অন্তত ৩০ শতাংশ। সারের ব্যবহারও কমাতে হবে। হারবাল প্রেস্টিসাইড অথবা বায়ো ফটিলাইজারে জোর দিতে হবে।\"
advertisement
আরও পড়ুনঃ জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে মিষ্টিতে নতুন চমক বর্ধমানে
এছাড়াও চাষীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, \"মাটি হল চাষীদের কাছে মা, ফলে মাটিকে দূষণ মুক্ত রাখা চাষীদের কর্তব্য। তাই ধীরে ধীরে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে হবে ।এমন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে যাতে পরিবেশ দূষণ না হয়।\" অন্যদিকে উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব কর জানা বলেন, \"অধিক ফলনের জন্য গাছে দেওয়া হয় রাসায়নিক সার। যা গাছের জন্য ৪০ শতাংশ ভালো হলেও মানুষের জন্য ভালো নয়। এরজন্যই মানুষের রোগ ব্যাধি বাড়ছে। ক্যান্সারের সংখ্যা বাড়ছে, মানুষের হজম শক্তি কমছে। আমাদের উচিৎ অনেক বেশি করে গাছ লাগানো। যা আমাদের সকলের জন্য উপকারী। একটা গাড়ি যে কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়ে তার জন্য প্রয়োজন ৩০ টি গাছ লাগানো। অর্থাৎ গাছ নষ্ট না করে অধিক মাত্রায় গাছ লাগানোতে জোর দিতে হবে আমাদের। সাধারণত গাছ সকালবেলা অক্সিজেন দেয় রাত্রেবেলা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়ছে।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ রেজাল্ট আনতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মৃত্যু মাধ্যমিক পড়ুয়া ছাত্রের
তবে একমাত্র অশ্বত্থ গাছই শুধুমাত্র রাত্রে বেলা অক্সিজেন দিয়ে থাকে। কীটনাশক এর প্রয়োগও অন্যান্য জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভারতবর্ষে এখন কীটনাশকের ব্যবহার চলে যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসমস্তটাই মানুষের সচেতনতার অভাব। ফলে মানুষকে সচেতন হতে হবে গাছ লাগাতে হবে। তাতেই ভালো থাকবে পরিবেশ সুস্থ থাকবে মানুষ।\" । উল্লেখ্য, করোনার জেরে গত দু বছরে কার্বন নির্গমন কমেছে অনেকটাই। ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় সিংহভাগ জীববৈচিত্র বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সকলে মিলে একটু চেষ্টা করলেই পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে। যেভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে তাতে আগামী দিনে কোন সঙ্কটের সম্মুখীন হবে তা নিয়েই চিন্তায় পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
advertisement
Malobika Biswas
view commentsLocation :
First Published :
June 04, 2022 8:54 PM IST

