সাদা আর দুধে আলতায় রাঙানো শরীর, চোখে লাল আভা, উত্তর প্রদেশে আবিষ্কৃত বিরল এই কেউটে তুলে ধরেছে প্রকৃতির এক বিশেষ লক্ষণ
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
White Cobra in UP: দেশের উত্তরপ্রদেশের মাটিতে এই প্রথম তার সাক্ষাৎ হল। সেই সাক্ষাৎ পেয়েছেন রাহুল নিষাদ। তাঁকেই বলা হচ্ছে এই বিরল প্রজাতির কেউটের আবিষ্কর্তা।
রজনীশ যাদব, প্রয়াগরাজ: কোবরা। শব্দটি আদতে পর্তুগিজ। কোবরা অর্থে এই ভাষায় বোঝানো হত এক সময়ে সব সাপকেই। বা বলা ভাল সব বিষধর সাপকেই বলা হত কোবরা। এখন নামটির প্রয়োগ সাপের নির্দিষ্ট এক প্রজাতির মধ্যেই কেবল সীমিত। কোবরা বলতে আমরা বাংলায় অবশ্য কেউটে সাপ বুঝি।
কালকেউটে নামটাও কারও কারও মনে পড়ে যেতেই পারে। এক্ষেত্রে মিশে গিয়েছে নামে দুই দ্যোতনা- এর বিষ কাল বা মৃত্যুর সমার্থক, আবার, গায়ের ঘন কালো রঙের জন্যও এ হেন নামকরণ। এমন রঙের কেউটে দেখেই আমরা সচরাচর অভ্যস্ত। সাদা কেউটে যে দেখা যায় না, তা নয়। এরা পড়ে অ্যালবিনো গোত্রে। কিন্তু সাদা আর দুধে আলতা বা হালকা গোলাপি রঙে রাঙানো শরীর? বিদেশে এরকম কেউটে দেখা গেলেও দেশের উত্তরপ্রদেশের মাটিতে এই প্রথম তার সাক্ষাৎ হল। সেই সাক্ষাৎ পেয়েছেন রাহুল নিষাদ। তাঁকেই বলা হচ্ছে এই বিরল প্রজাতির কেউটের আবিষ্কর্তা।
advertisement
advertisement
কেন এই কেউটে বিরল, তা একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। সাদা কেউটে মূলত পড়ে প্রাণীর অ্যালবিনো গোত্রে। এক্ষেত্রে যে প্রাণীর নির্দিষ্ট যা রঙ, তা না হয়ে যদি গায়ের রঙ সাদা হয়, চোখের মণিতে থাকে গোলাপি আভা, তবে তাকে আমরা অ্যালবিনো বলতে পারি। যেমন, সাদা কেউটের মতো সাদা কাক, সাদা বাঘ। মেলানিন নামে আমাদের ত্বকে এক রঞ্জক উপাদান থাকে, এর আধিক্যে গায়ের রঙ ঘন হয়, পরিমাণে কম হলে হয় ফর্সা। এর প্রভাবেই অ্যালবিনো প্রাণী দেখা যায়। রাহুল নিষাদ, যিনি ভারত সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের অধীনে ভারতীয় বনবিদ্যা গবেষণা শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং পরিবেশগত পুনরুদ্ধার কেন্দ্র, প্রয়াগরাজ-এর একজন গবেষক, তিনি উত্তরপ্রদেশে রায়বরেলির এক জলাভূমিতে এই যে সাপটির দেখা পেলেন, তা অ্যালবিনোর মতো পুরো সাদা নয়, এর শরীরে গোলাপি রঙও আছে। সামগ্রিক ভাবে দুধে আলতা রঙ, চোখের মণি লাল।
advertisement
advertisement
অতএব, এ যে এক বিরল প্রজাতি, তা বুঝতে অসুবিধা নেই। জীববিদ্যার পরিভাষায় এধরনের গায়ের রঙবিশিষ্ট সাপকে বলা হয় লিউসিস্টিক। ২০১৬ সালে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এক চিড়িয়াখানায় এরকম কেউটে দেখা গিয়েছিল, তার নাম রাখা হয়েছিল লুসি। রাহুল অবশ্য তাঁর আবিষ্কৃত সাপের এরকম কোনও নাম দেননি, তিনি কেবল প্রজাতিগত ভাবে একে অ্যালবিনো স্কেকট্যাকলড কোবরা বলে অভিহিত করেছেন। এই সাপ নিয়ে তাঁর লেখালিখি প্রকাশিত হয়েছে রেপটাইলস অ্যান্ড অ্যামফিবিয়ানস নামের এক আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্রে।
advertisement
রাহুল ইতিপূর্বে কৃষ্ণসার, স্লথ বিয়ার, বাঘ এবং বনভূমি নিয়ে কাজ করেছেন। এবার এই নতুন আবিষ্কৃত সাপ সম্পর্কে তিনি বলছেন যে এর দেখা পাওয়া স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনের লক্ষণ, একারণেই এই আবিষ্কার জীববৈচিত্র্যের অধ্যয়নকে যেমন একদিকে বাড়িয়ে তুলবে, তেমনই অন্য দিকে বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং এর কাঠামোর বর্তমান মূল্যায়ণেও সাহায্য করবে। রাহুল এই সাপ সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে বলেছেন যে সব সাপই সাধারণত ডিম খেতে পছন্দ করে, এর পরে তাদের সর্বাধিক প্রিয় খাদ্য ব্যাঙ। এই নতুন আবিষ্কৃত অ্যালবিনো স্কেকট্যাকলড কোবরাও তার ব্যতিক্রম নয়, অন্য কেউটের মতো এরাও উইঢিপি, সমতল স্থান এবং জলাভূমিতে থাকতে পছন্দ করে।
Location :
Allahabad,Uttar Pradesh
First Published :
July 16, 2024 11:14 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
সাদা আর দুধে আলতায় রাঙানো শরীর, চোখে লাল আভা, উত্তর প্রদেশে আবিষ্কৃত বিরল এই কেউটে তুলে ধরেছে প্রকৃতির এক বিশেষ লক্ষণ