মশা থেকে বাঁচতে চান? তবে আগে জানুন, মশা কী করে মানুষকে খুঁজে পায়
- Published by:Rukmini Mazumder
Last Updated:
এক নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কেন এবং কী ভাবে মশাদের এমন আশ্চর্য ক্ষমতা কাজ করে।
হাঁউ-মাঁউ করে এগিয়ে না এলেও, মশা কিন্তু মানুষের গন্ধ পায়। আর সেই গন্ধের খোঁজ করতে করতে এসেই সে হুল ফোটায় মানুষের শরীরে। তারপর শুরু হয় রক্ত খাওয়ার পালা।
মশা যেখানেই থাকুক না কেন, যে কোনও মানুষকে খুঁজে নিয়ে হুল ফোটায়। কিন্তু প্রশ্ন হল এই অনায়াস দক্ষতা মশা পায় কোথা থেকে? একদল বিজ্ঞানী তাঁদের গবেষণায় দেখেছেন এর জন্য দায়ী মশার ঘ্রাণতন্ত্র। মানুষের গন্ধ চিনে নিয়েই তারা লক্ষ্যে পৌঁছয়। এক নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কেন এবং কী ভাবে মশাদের এমন আশ্চর্য ক্ষমতা কাজ করে।
advertisement
বিশেষ রাসায়নিকের গন্ধ
advertisement
মশা আসলে এক বিশেষ রাসায়নিকের সাহায্যে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মানুষের ঘামের গন্ধ নিতে পারে। এ জন্য তারা কেমোরেসেপ্টর (Chemoreceptors) ব্যবহার করে। এই রাসায়নিকগুলি তাদের অ্যান্টেনায় এবং বিশেষ সংবেদনশীল স্পর্শকে থাকে। এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অন্তত একটি প্রজাতির মশা, এডিস এডিপ্টাইতে (Aedes Aegypti), গন্ধের প্রক্রিয়া অন্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা ভাবে সংগঠিত হয়।
advertisement
তবে কেমোরেসেপ্টর ছাড়াও মশা মানুষের গন্ধ চিনে ফেলতে পারে। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় (Boston University) এবং রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের (Rockefeller University) গবেষকদের এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষের ঘামের গন্ধ চিনতে সক্ষম কেমোরেসেপ্টরগুলি অক্ষম করে দেওয়ার পরও মশা মানুষকে খুঁজে বের করতে সফল হয়েছে।
জিন সম্পাদনা কৌশল
গবেষকরা CRISPR জিন সম্পাদনার (Gene Editing) মাধ্যমে নতুন ধরনের কিছু মশা উদ্ভাবন করেন। এ সব মশার ঘ্রাণতন্ত্রিকায় এক ধরনের প্রোটিন প্রবিষ্ট করানো হয়। তার ফলে নির্দিষ্ট গন্ধের কাছে মশাটি গেলে এবং তার ঘ্রাণতন্ত্রিকার উদ্দীপক কাজ করতে শুরু করলে ওই প্রোটিন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং মাইক্রোস্কোপের তলায় তা দেখা যায়। এর সাহায্যে গবেষকরা জানতে পেরেছিলেন, কী ভাবে বিভিন্ন গন্ধ ওই মশার ঘ্রাণেন্দ্রিয়কে উদ্দীপিত করে।
advertisement
একক স্নায়ু, এক রিসেপ্টর সিস্টেমের বিপরীতে
গবেষকরা দেখেছেন যে ইজিপ্টাইয়ের অনেক সংবেদনশীল রিসেপ্টর একটি একক স্নায়ুর সঙ্গে যুক্ত। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় সহ-অভিব্যক্তি। তাঁদের মতে, এটি ঘ্রাণ বিজ্ঞানের মূল নীতি পরিবর্তন করতে কাজ করে। প্রতিটি স্নায়ুর সঙ্গে শুধুমাত্র একটি কেমোরেসেপ্টর যুক্ত থাকে। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্টিস্ট ও প্রবীণ লেখিকা মেগ ইয়ংগার (Meg Younger) বলেন, ‘এটা খুবই অদ্ভুত, প্রত্যাশিত।’
advertisement
অন্তত দ্বিগুণ রিসেপ্টর
ইয়ংগার জানান, সংবেদনশীল স্নায়ু যেমন, মানুষের নাকের মধ্যে দিয়ে প্রতিটি একই ধরনের গন্ধ রিসেপ্টর নেয়। এপিস মেলিফেরা প্রজাতির মৌমাছি, তামাকের শিংওয়ার্ম মান্ডুকা সেক্সটা এবং সাধারণ মাছির (ডাইসোফিলা মেলানোগাস্টার) ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। এদের গ্লোমেরুলির মতো অনেক কেমোসেন্সর রিসেপ্টর রয়েছে যা বৃত্তাকার কাঠামো মস্তিষ্কে ঘ্রাণ সংবেদনশীল সংকেত গ্রহণ করে। কিন্তু ইজিপ্টাইতে গ্লোমেরুলির চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ রিসেপ্টর রয়েছে, যা খুবই অস্বাভাবিক।
advertisement
এই গবেষণার লক্ষ্য ছিল মশা-নিরোধকগুলিকে আরও ভাল এবং আরও কার্যকর করা যা কার্যকরভাবে মানুষের গন্ধ লুকাতে পারে। দেখা যাক ভবিষ্যতে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো যায় কি না!
Location :
First Published :
August 30, 2022 11:55 PM IST