General Knowledge: মানুষের মতোই চুমু খায় কোন প্রাণীরা? উত্তর জানলে চমকে যাবেন!
- Published by:Sounak Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
General Knowledge: প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক চার্লস ডিকেন্স বলেছিলেন যে মানুষই একমাত্র প্রাণী যা কিস করতে জানে। তবে প্রকৃতির মধ্যে এমন বহু প্রাণী রয়েছে যারা মানুষদের মতো কিস বা চুমু করে
নয়াদিল্লি: বিখ্যাত উপন্যাসিক চার্লস ডিকেন্স লিখেছিলেন যে, মানুষই একমাত্র প্রাণী যে চুম্বন করতে জানে। তবে হয়তো তখন ডিকেন্স প্রকৃত তথ্য বুঝতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে, প্রকৃতিতে এমন অনেক প্রাণী আছে যারা চুম্বন, আলিঙ্গন বা গলায় টান দিতে ভালোবাসে। যেমন, চিম্পাঞ্জি চুম্বন করে। মুস এবং কাঠবেড়ালীও একে অপরের নাকে নাক ঘষে। কচ্ছপরা একে অপরকে মাথায় তালি দেয়। অনেক প্রজাতির বাদুড়ও প্রেমের সময় তাদের জিভ ব্যবহার করে।
এটি সঠিক যে, বিজ্ঞানীরা প্রাণীদের চুম্বনের আবেগিক গুরুত্ব সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি। আমরা এই ধারণা করতে পারি না যে প্রাণীরা সেই কারণে চুম্বন করে যেভাবে মানুষ করে। কিছু গবেষক মনে করেন যে চুম্বন, কামড়ানো এবং ঘনিষ্ঠতার গভীর প্রভাব রয়েছে। প্রজননের জন্য একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের ঘনিষ্ঠতা প্রয়োজন। কিছু প্রাণী এমনও আছে, যাদের ঠোঁট দিয়ে চুম্বন করার ধরন মানুষের মতোই।
advertisement
চিম্পাঞ্জির মতো চুম্বন করা: গবেষক জেন গুডল-এর গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, শিম্পাঞ্জি মানুষদের মতোই যোগাযোগ করে। তাদের চুম্বন, আলিঙ্গন, পিঠে চাপড়ানো, হাত ছোঁয়া বিষযগুলি মানুষের মতোই। তাদের চুম্বন করার ধরন মানুষের মতো। তারা তাদের ঠোঁট দিয়ে চুম্বন করে। গবেষকদের ধারণা, চিম্পাঞ্জির জন্য চুম্বন বিশেষভাবে অন্তরঙ্গ নয়, বরং এটি একটি সংযোগের প্রকাশ, যেমন মানুষের মধ্যে আলিঙ্গন।
advertisement
advertisement
শিম্পাজির-এর প্রেমের আচরণ: শিম্পাঞ্জির মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রেম দেখা যায়। এক গবেষক কির্শেনবাম তার বইতে লেখেন, “তারা তাদের নারী-শাসিত সমাজে আক্রমণাত্মকতা কাটিয়ে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে সংঘর্ষ সমাধান করে। তারা পরস্পরকে আশ্বস্ত করতে এবং সমাজের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চুম্বন করে।” শিম্পাঞ্জিদেরকে প্রায় ১২ মিনিট ধরে একে অপরকে চুম্বন এবং কামড়াতে দেখা গেছে। শিম্পাঞ্জি মানুষের সবচেয়ে কাছের জীবিত আত্মীয়, তাদের ডিএনএ আমাদের ৯৮.৭% মিলে। শিম্পাঞ্জি একমাত্র প্রাণী, যারা চুম্বন করতে গিয়ে জিভ ব্যবহার করে।
advertisement
ডলফিনের প্রেমের চুম্বন:
ডলফিন হল এমন কিছু প্রাণীর মধ্যে একটি, যারা তীক্ষ্ণ চুম্বন নেওয়ার জন্য পরিচিত। ডলফিন মাঝে মাঝে একে অপরকে মানুষের মতো চুম্বন করে। তবে তারা সাধারণত, স্নেহের প্রকাশ হিসেবে তাদের ঠোঁট একে অপরের সঙ্গে স্পর্শ করে। জেলে বন্দি ডলফিনও তাদের প্রশিক্ষককে চুম্বন করে। স্নেহ দেখানোর জন্য মাঝে মাঝে ঠোঁটে চুম্বন করে। ডলফিনের পাতলা ঠোঁট এবং সংবেদনশীল স্নায়ু ব্যবস্থা তাদের একে অপরকে সাবধানে স্পর্শ করতে সক্ষম করে। ডলফিনের চুম্বন সাধারণত ক্লিক এবং সিটি শব্দের সঙ্গে থাকে, যা ডলফিনের ‘আই লাভ ইউ’ বলার এক উপায়।
advertisement
ভোঁদরদের প্রিয় আচরণ: ভোঁদরকে পৃথিবীর সবচেয়ে আদুরে প্রাণী বলা যায়। তারা অবিশ্বাস্যভাবে প্রেমময় এবং প্রায়ই একে অপরকে চুম্বন করে। ভোঁদররারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়, যাতে তারা একে অপর থেকে আলাদা না হয়।
ফ্লেমিংগোদের চুম্বন: ফ্লেমিংগোরা একেই সঙ্গী নিয়ে জীবন কাটায়। তারা একে অপরকে স্নেহ দেখাতে তাদের ঠোঁট ঘষে এবং একে অপরের গলায় ঠোঁট জড়িয়ে রাখে। যখন তারা একে অপরকে পরিষ্কার করে, তখন এটা মনে হয় যেন তারা একে অপরকে চুম্বন করছে। তারা তাদের ঠোঁট খোলার মাধ্যমে অন্য ফ্লেমিংগোর ত্বকে চাপ দেয়, সাধারণত মাথা বা গলায়, যাতে সেগুলি পরিষ্কার থাকে এবং পরজীবী মুক্ত থাকে।
advertisement
বিড়ালদের মাথায় স্নেহের ধরণ: যারা বিড়াল পালন করেন তারা জানেন যে, তাদের মাথা একে অপরের সঙ্গে ঠোকা আসলে স্নেহের প্রকাশ। তারা এটি একে অপরের, পরিবারের অন্যান্য পোষা প্রাণী এবং আসবাবপত্রের সঙ্গেও করে। বিড়ালের গালে গন্ধগ্রন্থি থাকে, তাই যখন তারা আপনার মুখে ঘষে, তারা আপনাকে নিজেদের অংশ হিসেবে মনে করে।
মানুষ কেন চুম্বন করে? - বিজ্ঞানীরা মনে করেন, চুম্বন আমাদের সম্ভাব্য সঙ্গীর গন্ধ শনাক্ত করতে এবং তাদের মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। অন্যান্য প্রাণীর নাকের সংবেদনশীলতা বেশি হওয়ায়, তাদের আমাদের মতো ঘনিষ্ঠ হতে প্রয়োজন হয় না। তবে, মানুষের জন্য গন্ধের মাধ্যমে সঙ্গী মূল্যায়ন যথেষ্ট নয়, তাই চুম্বন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
advertisement
চুম্বনের বিবর্তন: বিজ্ঞানীদের এক অংশ মনে করেন, চুম্বনের উৎপত্তি ‘কিস-ফিডিং’ থেকে, যেখানে মা তাদের বাচ্চাদের মুখ থেকে মুখে খাবার খাওয়াত। কল্পনা করুন, পাখিরা তাদের ছোট বাচ্চাদের পোকামাকড় খাওয়াচ্ছে, কেমন মিষ্টি! এখন কল্পনা করুন, কেউ আপনাকে চিবানো খাবার আপনার মুখে খাওয়াচ্ছে। এটি অনেকের জন্য বিরক্তিকর মনে হতে পারে, তবে আমরা মানুষজন এটি সবসময়ই করতাম। এই খাবারের আদান-প্রদান থেকে ঠোঁটের মিলন প্রেমের প্রতীক হয়ে ওঠে। সময়ের সাথে সাথে, এটি স্নেহের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চুম্বন এবং মস্তিষ্কের রসায়ন: চুম্বনের সময়, ঠোঁটের সংবেদনশীলতা আমাদের মস্তিষ্ককে একটি রাসায়নিক ককটেল তৈরি করতে প্ররোচিত করে। এই ককটেল তিনটি রাসায়নিক থেকে তৈরি হয়, যা আমাদের ভালো অনুভব করায়। এই রাসায়নিকগুলি হল, ডোপামাইন, অক্সিটোসিন এবং সেরোটোনিন। এই ককটেলটি আমাদের মস্তিষ্কের ‘প্লেজার সেন্টার’ গুলোকে আলোকিত করে।
চুম্বন এবং মস্তিষ্কের সাড়া: ডোপামাইন আমাদের উত্তেজনা এবং নেশার অনুভূতি তৈরি করে। অক্সিটোসিন, যা ‘প্রেমের হরমোন’ হিসেবে পরিচিত, স্নেহ এবং সম্পর্কের অনুভূতিকে উজ্জীবিত করে। চুম্বনের সময় সেরোটোনিনের মাত্রা এমনকি এমনকি অ্যানজাইটির অবস্থায় থাকা ব্যক্তির মতো দেখা যায়। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, একটি ভালো চুম্বনের স্মৃতি বছর জুড়ে আমাদের মনে থাকে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
November 08, 2024 2:52 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
General Knowledge: মানুষের মতোই চুমু খায় কোন প্রাণীরা? উত্তর জানলে চমকে যাবেন!