#কলকাতা: ছট শব্দটি আদতে জুড়ে আছে সংস্কৃত ষষ্ঠ শব্দটির সঙ্গে। অর্থাৎ এটি একটি সংখ্যাবাচক শব্দ, মুখের ভাষায় বললে ছয়! চার দিন ধরে উদযাপিত হওয়া এই উৎসব ষষ্ঠী তিথিতে সমাপ্ত হয়, সে কথাটা খেয়াল রেখেই ষষ্ঠ থেকে ষট, আবার ষট থেকে লোকমুখে নাম হয়ে গিয়েছে ছট! এই ধর্মীয় উৎসবের কেন্দ্রে থাকেন সূর্য, তাই একে সূর্যষষ্ঠী নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
সে দিক থেকে দেখলে এই উৎসব একেবারেই সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। ষষ্ঠী দেবী বা ছটি মাইয়াকে পূজা নিবেদন করলেও পুরাণকথা এই উৎসবের সাযুজ্যে এই দেবী আরাধনার কোনও সাক্ষ্য দেয় না।
লোকবিশ্বাস বলে, বনবাস থেকে ফিরে সূর্যবংশীয় রাম সিংহাসনে আরোহনের আগে সরযূ নদীতে স্নান করে এই তিথিতে অর্ঘ্যদান করেছিলেন সূর্যের উদ্দেশে, সেই থেকে এই উৎসবের উদযাপনের শুরু। আবার মহাভারত বলে, বনবাসকালে পাণ্ডবরা যখন নিদারুণ অন্নকষ্টের সম্মুখীন হয়েছিলেন, তখন পুরোহিত ধৌম্যের উপদেশে চার দিন ধরে সূর্যকে আরাধনা করে প্রসন্ন করেন যুধিষ্ঠির। সূর্য সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে একটি দিব্য পাত্র দেন। সেই পাত্রের খাবার যতক্ষণ না দ্রৌপদীর খাওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ফুরিয়ে যেত না!
মহাভারতের এই গল্পের সঙ্গে ছট আর নারীর এক অমোঘ যোগসূত্র লক্ষ্য করা যায়। খুব সম্ভবত সেই দিক থেকেই পরবর্তীকালে ছটপুজোয় নারীর শুদ্ধাচারে থাকা এবং উপবাসের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
অন্য দিকে, ছট পুজোর উৎসবের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে মহাভারতের আরও এক চরিত্রের। তিনি সূর্যসঙ্গমে জন্ম নেওয়া কুন্তীর কানীন সন্তান কর্ণ। লোকবিশ্বাস বলে, কর্ণ রোজ সকালে নদীতে স্নান সেরে সূর্যের উপাসনা করতেন। এর পরে শুরু হত তাঁর দানপর্ব, কোনও প্রার্থীকেই ফিরিয়ে দিতেন না তিনি। পরে দুর্যোধনের আনুকুল্যে তিনি যখন অঙ্গদেশের রাজত্ব লাভ করেন, সেই সময় থেকে রীতি মতো বাৎসরিক উৎসবের আকার নেয় তাঁর এই সূর্য আরাধনা।
চলতি বছরে ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২১ নভেম্বরে শেষ হবে ছট পুজোর উৎসব। না বললেই নয়, এটিই একমাত্র উৎসব যেখানে উদীয়মান সূর্যের পাশাপাশি অস্তাচলগামী সূর্যকেও অর্ঘ্য নিবেদন করেন ভক্তরা!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Chhath Puja 2020