ছেলের পকেটভরা টাকা, চাকরি এদিকে ব্যাঙ্কে কমিশনের! এত বিলাসিতার খরচ দেয় কে? কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বের হল
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
ডিজিটাল দুনিয়া গুলে খেয়েছেন অয়ন, সাইবার অপরাধ পকেটে ভরে দেয় গোছা গোছা নোটের তোড়া!
নয়াদিল্লি: এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা সবাই সব সময়ে যতটা সাধ্য ধোপদুরস্ত থাকার চেষ্টা করে। এলোমেলো চুলের, যা হোক একটা কিছু গায়ে চাপিয়ে বেরিয়ে পড়া টিনএজাররা এখন লুপ্তপ্রায় প্রাণী বললে ভুল কিছু হয় না। কিন্তু কলকাতার অয়ন দাসের ব্যাপারটাই আলাদা। এটা ঠিক যে ব্যাঙ্কে চাকরি করলে পয়সার অভাব হয় না। তার ওপর যদি পারিবারিক দায়িত্ব না থাকে, তাহলে নিজের শখের পিছনে হাত খুলে খরচ করলেই বা বারণ করতে যাচ্ছে কে! অয়নের বয়স ২১ বছর, পারিবারিক দায়িত্ব না থাকারই কথা। এদিকে চাকরিও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায়, মাইনে তো ভালই হবে। আসলে, এটাই এত দিন ধরে ভাবতেন সবাই। জানতেন না কেবল দুটো জিনিস। এক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ওই চাকরিটা কমিশনভিত্তিক, ফলে মাইনে তেমন সুবিধের হওয়ার কথাই নয়। দুই, ডিজিটাল দুনিয়া গুলে খেয়েছেন অয়ন, সাইবার অপরাধ পকেটে ভরে দেয় গোছা গোছা নোটের তোড়া!
তবে ওই যে বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে! সঙ্গে নড়েচড়ে বসে পুলিশও। আসলে, দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী শ্রীনিবাসন সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যে তাঁর ২৩ লক্ষ টাকা সাইবার প্রতারণায় জলে গিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে এই বছরের ১ এপ্রিল তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এমএফএসএল স্টক চ্যাট ৪০-এ অ্যাড করা হয়েছিল, যেখানে গ্রুপ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ডিসকাউন্ট মূল্যে স্টক সাজেস্ট করতেন। ২০ মে, ২০২৪ তারিখে পরের ধাপে তাঁকে https://bekrx.com-এ লগ ইন করতে বলা হয়েছিল।
advertisement
advertisement
দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, এই ওয়েবসাইটে লগ ইন করার পরে, অভিযোগকারী ৪ বারে মোট ২৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পরবর্তীকালে, তাকে ক্রোনক্স ল্যাব সায়েন্সেস-এর আইপিওতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং ২৫,০০০ শেয়ার অ্যালট হয়। তাঁকে বিপুল লাভের লোভ দেখিয়ে ৩৯ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের কথা বলা হয়। এই সময়ে অভিযোগকারী ২০ লক্ষ টাকা তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মাসের শেষে তা তুলতে বলা হয়েছিল। পরে সেই উইথড্রয়াল আটকে দেওয়া হয়। এভাবে একাধিকবার উইথড্রয়াল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আরও টাকা জমা দিতে বলা হয়েছিল। একমাত্র এবারই অভিযোগকারী সন্দেহ করেছিলেন যে তিনি সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
advertisement
দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে মামলা দায়েরের পর অভিযোগকারীর লেনদেন খতিয়ে দেখা হয়। কলিং এবং হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরের বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় যা বিদেশ থেকে পরিচালিত হয় বলে জানা যায়। তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রতারকরা বিদেশ থেকে কাজ করত। কিন্তু, এই সময়ে, পুলিশ যখন রায় এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টধারী দিশারী রায়ের বাড়িতে অভিযান চালায়, তখন দেখা যায় যে এই সংস্থাটি পশ্চিমবঙ্গের ২২ বছর বয়সী একটি মেয়ের।
advertisement
সাইবার সেলের তদন্তে জানা যায়, যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা যেত, তা সাইবার দুষ্কৃতীকে রবিন দাসের ছেলে অয়ন দাস সরবরাহ করেছিলেন। ২৭ নভেম্বর কলকাতায় অভিযান চালানো হয় এবং অভিযুক্ত অয়ন দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তল্লাশিতে তাঁর কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি চেক বই, একটি পাসবুক, ৩ প্রোপ্রাইটরশিপ টিকিট উদ্ধার করা হয়। অয়ন কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করেন। অল্প বয়সেই বিলাসবহুল জীবনযাপন সবার নজরে পড়লেও রহস্য এত দিন প্রকাশ্যে আসেনি। এবার দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখা এই সাইবার প্রতারককে গ্রেফতার করেছে।
Location :
Delhi
First Published :
December 21, 2024 2:07 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
ছেলের পকেটভরা টাকা, চাকরি এদিকে ব্যাঙ্কে কমিশনের! এত বিলাসিতার খরচ দেয় কে? কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বের হল