বিকৃত মুখ নিয়ে জন্ম, ‘কেউ আমাকে ভালবাসবে না’, হীনন্মন্যতায় ভুগতেন যুবক, পিয়ালিই জীবন বদলে দিল
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের বাসিন্দা অমিত ঘোষ। বয়স ৩৪ বছর। মুখমণ্ডলে বিকৃতি নিয়েই জন্ম হয় অমিতের। সেই নিয়েই বড় হন। প্রতিনিয়ত হীনন্মন্যতায় ভুগতেন। অমিতের মনে হত, এই পৃথিবীতে তিনি একা।
বার্মিংহ্যাম: জীবন অনেকটা টানটান উপন্যাসের মতো। তার প্রতি পাতায় পাতায় অজানা রোমাঞ্চ। কখন যে সে কোন অপ্রত্যাশিত মোড়ে নিয়ে গিয়ে ফেলবে কেউ জানে না। ভেতরে ভেতরে চুরমার হয়ে যাওয়া, ধ্বসে পড়া কোনও যুবকও বেঁচে থাকার নতুন মানে খুঁজে পেতে পারেন চোখের নিমেষে। এটাই জীবন।
ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের বাসিন্দা অমিত ঘোষ। বয়স ৩৪ বছর। মুখমণ্ডলে বিকৃতি নিয়েই জন্ম হয় অমিতের। সেই নিয়েই বড় হন। প্রতিনিয়ত হীনন্মন্যতায় ভুগতেন। অমিতের মনে হত, এই পৃথিবীতে তিনি একা। এই মুখের দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না। প্রেম, ভালবাসা তো দূরের কথা। কিন্তু পিয়ালি তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে।
advertisement
advertisement
২০২১ সালের আগে পর্যন্ত অমিতের মনে হত, তাঁকে একাই এই জীবন কাটাতে হবে। সেই বছরই এক বন্ধু মারফত পিয়ালির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। প্রথম সাক্ষাতে প্রত্যাখ্যানই জুটেছিল। হতাশ হননি অমিত। তিনি যেন জানতেন, এমনটাই হবে। এটাই তাঁর ভবিতব্য। তবে বন্ধুর কথায় পিয়ালিকে মেসেজ পাঠানো শুরু করেন। ধীরে ধীরে গল্প এগোতে থাকে।
advertisement
advertisement
নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ, স্বপ্ন একে অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেন অমিত আর পিয়ালি। কিছুদিনের মধ্যেই মেসেজ থেকে ভিডিও কল শুরু হয়। দু’জন দু’দেশের বাসিন্দা। কিন্তু ততদিনে তাঁদের মধ্যে অদৃশ্য সেতু তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে ব্যাপারটা সহজ ছিল না। অমিতের কথায়, “বিকৃত মুখের জন্য আমাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। তাই ভয়ে ভয়ে থাকতাম। পিয়ালির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার সময়েও মুখের বাম দিকটা ঢেকে রাখতাম। তবে কিছুদিনের মধ্যেই জড়তা কেটে গিয়েছিল।”
advertisement
একদিন পিয়ালিই অমিতকে বলেন, “এবার মা-বাবাকে জানাও”। সেই দিন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হয়ে উঠেছিলেন অমিত। কিন্তু ফের ধাক্কা। পিয়ালির মা-বাবা রাজি হলেন না। মুখের ওপর অপমান। কথা বলা বন্ধ করে দেন অমিত। চারদিন পর ফের পিয়ালির ফোন, “মা-বাবাকে রাজি করিয়েছি।” ব্যস, এই দিনটারই তো অপেক্ষা ছিল।
advertisement
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অমিত-পিয়ালি। অমিত বার্মিংহামের একটি ল ফার্মে কাজ করেন। সেখানেই সংসার সাজিয়েছেন দুজনে। পিয়ালি পেশায় মেকআপ আর্টিস্ট। তবে অন্তরের সৌন্দর্য চিনতে জানেন। পিয়ালির কথায়, “অমিত মুখ ঢেকে রাখলে খুব রাগ হয়। আমি ওঁর মুখ দেখে বিয়ে করিনি। মানুষটাকে বিয়ে করেছি।”
নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ ১ রোগ নিয়ে জন্মান অমিত। এই রোগে স্নায়ুর সঙ্গে টিউমার তৈরি হয়। ১১ বছর বয়সে বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়। অমিত বলেন, “শারীরিক অক্ষমতাকে আমি মেনে নিয়েছি। পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে দূরেই থাকি। বার্মিংহামে আমার আর পিয়ালির নিজস্ব পৃথিবী রয়েছে। আমরা রাতে সিনেমা দেখি। তারপর ওঁর জন্য বাটার চিকেন রাঁধতে বসি। খুব শীঘ্রই আমরা মা-বাবা হতে চলেছি।”
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
December 21, 2024 8:48 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
বিকৃত মুখ নিয়ে জন্ম, ‘কেউ আমাকে ভালবাসবে না’, হীনন্মন্যতায় ভুগতেন যুবক, পিয়ালিই জীবন বদলে দিল