Success Story: ছোট ঘর থেকে বড় স্বপ্ন! মায়ের রান্না হাতিয়ার করে স্বনির্ভরতার পথে কুস্মিতা
- Published by:Salmali Das
- hyperlocal
- Reported by:Ricktik Bhattacharjee
Last Updated:
Success Story: শিলিগুড়ি ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের পতিরাম জোট এলাকার একটি ছোট্ট ঘর থেকেই আজ স্বপ্ন বুনছেন কুস্মিতা সরকার। সূর্য সেন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কুস্মিতা পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন নিজের উদ্যোগ—‘মায়ের রান্নাঘর’।
শিলিগুড়ি, ঋত্বিক ভট্টাচার্য: শিলিগুড়ি ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের পতিরাম জোট এলাকার একটি ছোট্ট ঘর থেকেই আজ স্বপ্ন বুনছেন কুস্মিতা সরকার। সূর্য সেন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কুস্মিতা পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন নিজের উদ্যোগ—‘মায়ের রান্নাঘর’। সংসারের টানাপোড়েনের মধ্যেই এই উদ্যোগ আজ ধীরে ধীরে পরিচিত নাম হয়ে উঠছে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে কুস্মিতা থাকেন মা রত্না সরকার, দিদা ও ছোট বোন পূজা সরকারের সঙ্গে। বাবা অমল সরকার কাজের সূত্রে বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। সংসারের অভাব অনটন ছোট থেকেই দেখেছে কুস্মিতা। পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতে টিউশন পড়িয়ে উপার্জন শুরু করে সে। আর মা রত্না সরকার বাসাবাড়ির কাজ করে সংসার চালাতেন।
advertisement
এই উপার্জনেই সংসার চললেও শুধু টিউশনেই থেমে থাকতে চাননি কুস্মিতা। ছোটবেলায় মায়ের হাতের রান্না খেয়েই বড় হওয়া—সেই রান্নাকেই জীবনের হাতিয়ার করে ছয় মাস আগে টিউশন থেকে জমানো পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি করে শুরু হয় ‘মায়ের রান্নাঘর’। প্রথম দিকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হোম ডেলিভারি দিয়ে কাজ শুরু করে সে। কয়েক দিনের মধ্যেই অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন, ফুড লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র তৈরি করে অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই অর্ডার নেওয়া শুরু হয়।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ২৫ পরিবারের তালিকায় ভারত থেকে স্থান শুধু আম্বানি পরিবারের! তালিকায় আর কোন কোন পরিবার, দেখুন
নিজের মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ভ্লগ ও রিলের মাধ্যমে নিজের কাজ তুলে ধরতে থাকে কুস্মিতা। ধীরে ধীরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে এবং ‘মায়ের রান্নাঘর’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে। যদিও এই ঝলমলের আড়ালে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। প্রতিদিন সকালে মায়ের সঙ্গে রান্নার প্রস্তুতি, মা কাজে গেলে একাই অর্ডার সামলানো এবং প্রয়োজনে নিজেই রান্না করতে হয় তাকে।
advertisement
কুস্মিতা জানায়, সংসারের পরিস্থিতির জন্যই তাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তার কথায়, “মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ সবাইকে খাওয়াতেই এই উদ্যোগ। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজটা কঠিন, কিন্তু থামতে চাই না।” ভবিষ্যতে ‘মায়ের রান্নাঘর’কে আরও বড় আকারে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে।
বিকেলে মা রত্না সরকার বাড়ি ফিরলে মা-মেয়ে মিলে রাত পর্যন্ত অর্ডার প্রস্তুত করেন। বর্তমানে ঘরোয়া খাবারের স্বাদের কারণে গ্রাহকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে অফিস কর্মী ও একা থাকা মানুষজন বেশি করে অর্ডার দিচ্ছেন। অনলাইন অর্ডার ডেলিভারি বয়ের মাধ্যমে পৌঁছালেও অফলাইন অর্ডার কুস্মিতা নিজেই সাইকেল বা টোটো করে গ্রাহকের বাড়ি পৌঁছে দেন।
advertisement
এ বিষয়ে মা রত্না সরকার বলেন, সংসারের অভাবের কারণেই মেয়েকে অল্প বয়সে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তবে মেয়ের লড়াই ও আত্মবিশ্বাসে তিনি খুশি ও গর্বিত। তাঁর বিশ্বাস, আজ যে পথে কুস্মিতা হাঁটছে, আগামী দিনে সেই পথ আরও মসৃণ হবে এবং একদিন ‘মায়ের রান্নাঘর’ বহুদূর এগিয়ে যাবে।
অভাব, দায়িত্ব আর সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও দমে যায়নি কুস্মিতা সরকারের স্বপ্ন। শিলিগুড়ির এক ছোট্ট ঘর থেকে শুরু হওয়া ‘মায়ের রান্নাঘর’ আজ শুধু একটি খাবারের উদ্যোগ নয়, বরং আত্মনির্ভরতার এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প। মায়ের হাতের রান্নাকে শক্তি করে পড়াশোনার পাশাপাশি যে লড়াই কুস্মিতা চালিয়ে যাচ্ছে, তা প্রমাণ করে ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম থাকলে ছোট পরিসর থেকেই বড় সাফল্যের পথে এগোনো সম্ভব। আগামী দিনে এই উদ্যোগ আরও বিস্তৃত হবে—এমনটাই আশা করছে পরিবার থেকে শুরু করে এলাকার মানুষ।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Siliguri,Darjeeling,West Bengal
First Published :
December 17, 2025 11:20 PM IST









