শীতের আমেজে বিঘোরের বেগুন! স্বর্গীয় সুখের ঠিকানা এখন রায়গঞ্জ

Last Updated:

রায়গঞ্জ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে গৌরী অঞ্চল।এই অঞ্চলের অধীনে রয়েছে ভিটিহার,নয়াটুলি, দুগদূয়ার, ছোট ভিটিহার, নিমতলা ভিটিহার এবং বাহিন অঞ্চলে কামারপাড়া, কুমারজোল, মাধবপুর এবং বাহিন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে এই বেগুন চাষ হয়।

শীত আসতে রায়গঞ্জ শহরে বিঘোরের বেগুনের দেখা মেলে। শীতকালে জয়নগরের মোয়া আর রায়গঞ্জের বিঘোরের বেগুন একবার না চাখলে, জীবন বৃথা! বিলকুল। শীতের সময় তুলাইপাঞ্জি চালের গরম গরম ভাত, বিঘোরের বেগুন ভাজা আর ঘি। পাতে এই তিনটি থাকলে আপনি নবাব-বাদশা। এই খাবার এতটাই সুস্বাদু যে, একবার খেলে বার বার খেতে ইচ্ছা করবে।
রায়গঞ্জ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে গৌরী অঞ্চল।এই অঞ্চলের অধীনে রয়েছে ভিটিহার,নয়াটুলি, দুগদূয়ার, ছোট ভিটিহার, নিমতলা ভিটিহার এবং বাহিন অঞ্চলে কামারপাড়া, কুমারজোল, মাধবপুর এবং বাহিন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে এই বেগুন চাষ হয়। জানা গিয়েছে, এই দুই অঞ্চলের পাশ দিয়ে নাগর নদী বয়ে গেছে। বর্ষার সময় বন্যার জলে ভেসে যায় এই সমস্ত এলাকা। বন্যার জল নেমে যাওয়ার পর মাটির উবর্রতা শক্তি অনেকটাই বেড়ে যায়। সেই জমিতে বেগুন চাষ করেন কৃষকরা। নদীর পরাপারের কোনও ব্যবস্থা না-থাকায় উৎপাদিত ফসল রায়গঞ্জে না এনে তিন কিলোমিটার দূরে বিহারের বিঘোর হাটে গিয়ে বিক্রি করতেন। সেখান থেকে বরসই রাধিকাপুর সকালে ট্রেনে রায়গঞ্জের বাজারে চলে আসত। বিঘোরের ব্যবসায়ীরা বেগুন আনায় সেই নাম হয়ে যায় বিঘোরে বেগুন, দাবি করেছেন বাংলার বেগুনচাষিরা। দিন বদলেছে। নাগর নদীর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি হওয়ায় আজ সেই বেগুন বিহারের বিঘোরে না গিয়ে সরাসরি রায়গঞ্জ মোহনবাটী বাজারে চলে আসছে।
advertisement
শ্রাবণ মাসের শেষের দিকে বেগুনের বীজ ফেলা হয়। একমাসের মধ্যে অর্থাৎ ভাদ্র মাসের শেষের বীজ থেকে চারা গাছ হয়ে জমিতে লাগানো হয়। অগ্রহায়ণ মাসে সেই গাছ থেকে ফলন শুরু হয়। বেগুন লাগানোর পর অর্থাৎ ভাদ্র মাসে প্রবল বৃষ্টির কারণে নীচু জমির গাছ প্রায় নষ্ট হয়ে যায়। উঁচু জমিতে যে সমস্ত চারা বপন করা হয়েছিল, সেই গাছ থেকেই এবার ফলন দিচ্ছে। এ ছাড়াও প্রবল কুয়াশার কারণে বেগুনের আকারও অনেকটাই কমে গেছে। বিগত বছরে একটি বেগুনের ওজন এক কেজি থেকে দেড় কেজি হত। এ বারে বেগুন চাষে ক্ষতি হওয়ায় বেগুনের দাম এক লাফে ১০ গুণ বেড়েছে। গতবছর যে বেগুনের দাম ছিল কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা। এবারে সেই বেগুনের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা।বেগুনের দাম বাড়লেও রায়গঞ্জের মানুষ এই বেগুনের খাওয়া থেকে দূরে সরে যায়নি।
advertisement
advertisement
শুধু রায়গঞ্জের মানুষ কেন যারা কাজের জন্য রায়গঞ্জে আসেন তাদের একটাই দাবি বিঘোরের বেগুন পোড়া,কিংবা ভাজা,বেগুন ভতকা।হোটেলগুলিতে খরিদ্দারদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।রবিবার রায়গঞ্জ এসেছিলেন নাট্যকার খরাজ মুখোপাধ্যায়।নাটক শেষে হোটেলে গিয়ে বেগুন পোড়া খান।রায়গঞ্জের মানুষ এখন আত্মীয় স্বজনের উপহার হিসেবে অন্য কিছু দিচ্ছেন না।তুলাইপাঞ্জি চাল এবং বিঘোরের বেগুন। এই জিনিস হাতে পেয়ে বেজায় খুশী দূরদূরান্তের আত্মীয়রা।বিঘোরের বেগুন রায়গঞ্জ বা জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না।উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও কলকাতাতেও এই বেগুন পাঠাচ্ছেন রায়গঞ্জবাসি।বিঘোরের বেগুন চাষ আরও বেশি এলাকায় ছড়িয়ে দিতে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি কৃষি মেলাতে নিজস্ব স্টল দিয়ে কৃষকদের কাছে বেগুন চাষের পদ্ধতি তুলে ধরেছেন।
advertisement
রায়গঞ্জের বাসিন্দা গৃহবধূ কোহিলি সরকার জানিয়েছেন,শীতের মরশুমে সকাল এবং রাতে গরম গরম তুলাইপাঞ্জি চালের ভাত, বেগুন ভাজা কিংবা পোড়া এবং ঘি দিলেই পরিবারের সদস্যদের আর কিছু মেনুর প্রয়োজন হচ্ছে না।শীতের শুরু থেকেই এই খাওয়া খাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।রায়গঞ্জের খাদ্যরসিক শুভঙ্কর মল্লিক জানিয়েছেন,বিঘোরের বেগুন শুরুর আগেই বাইরের আত্মীয়রা বেগুন পাঠানোর জন্য আবদার থাকে।এবারে বেগুনের দাম বেশি হলেও সেই বেগুন তাকে পাঠাতে হয়েছে।শুভঙ্করবাবু জানিয়েছেন,একবার যে এই বিঘোরের বেগুন খাবেন তাকে প্রতিবছর এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে।রায়গঞ্জের বিঘোরের বেগুন রাজ্যে আর কোথাও পাওয়া যায় না।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/উত্তরবঙ্গ/
শীতের আমেজে বিঘোরের বেগুন! স্বর্গীয় সুখের ঠিকানা এখন রায়গঞ্জ
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন থাকবে?
উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন?
  • উত্তরে আজ বৃষ্টির পূর্বাভাস

  • দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে

  • রইল আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement