#শিলিগুড়ি: আত্মীয়ের বিয়েতে এসেছিলেন বিহারের মজফফরপুর থেকে। বিয়ের অনুষ্ঠানও অনাবিল আনন্দেই কাটে। গত ১৯ মার্চ বিয়ে ছিল। ২১ মার্চ ছিল বৌভাত। সব ঠিকঠাকই মিটে যায়।
শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ হাদিস। পেশায় ধোপা। তাঁরই মেয়ের বিয়ে ছিল। আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিহারের আত্মীয়দের। সেইমতো ১৮ মার্চ মজফফরপুর থেকে শিলিগুড়িতে আসেন তাঁর আত্মীয়রা। ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। তারপর ২২ জানুয়ারি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এরই মধ্যে মারণ করোনার বিষ ছড়িয়ে পড়ে দেশে। প্রধানমন্ত্রী করোনার মোকাবিলায় লকডাউনের নির্দেশিকা জারি করেন। টানা ২১ দিনের লকডাউন! এর জের এসে পড়ে এই ধোপার পরিবারে। দিন আনি দিন খাই পরিবারের পক্ষে যা দুঃসহ হয়ে ওঠে।
বিহার থেকে আসা আত্মীয়দের বাড়িতে রাখার মতো জায়গাও নেই। এক চিলতে ঘরে আত্মীয়দের কোথায় রাখবেন আর কি খাওয়াবেন? তা নিয়েই দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে ধোপার পরিবারে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর। এগিয়ে আসেন স্থানীয় নবোদয় ক্লাবের সদস্যরা।
বিহার থেকে আসা ২৫ জন আত্মীয়র ঠাঁই হয়েছে স্থানীয় ক্লাবে। ক্লাবঘরই এখন তাঁদের কাছে সব কিছু। কিন্তু খাবার মিলবে কি উপায়ে? দুশ্চিন্তা বাড়ছিল ধোপা পরিবারের। স্থানীয়রা এগিয়ে আসায় দুশ্চিন্তা কাটতে শুরু করে। তারপর শহরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সাধারণ মানুষেরা এগিয়ে আসেন। কেউ রান্না করা খাবার তুলে দিচ্ছে ওদের হাতে। আবার কেউ দিয়ে আসছে চাল, ডাল, তেল, সবজি, আটা, লবন সহ অন্যান্য রসদ সামগ্রী।
ক্লাব ঘরেই নিজেরাই রান্না করে খাবার তৈরি করে নিচ্ছেন। দু'বেলা খাবারের দুশ্চিন্তা আপাতত কেটেছে বিহারের এই বাসিন্দাদের। শিশু মিলিয়ে আটকে ২৫ জন। তবে কবে ফিরবেন মজফফরপুরের বাড়িতে? এখন এটাই তাড়া করে বেড়াচ্ছে ওঁদের। কেননা লকডাউনের সময়সীমা বাড়ছে। আবার পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। সেদিকেই তাকিয়ে আটকে থাকা বিহারের বাসিন্দারা। বিয়ে বাড়ির আনিন্দে এখন বিষাদের ছায়া।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, India Lockdown