#উত্তর ২৪ পরগনা: এই আপার প্রাইমারি সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেশীরভাগ সময়েই মনক্ষুন্ন থাকেন। কারণ, ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলেও, পড়ুয়ার সংখ্যা মেরেকেটে ৫০-৫৫ জন। স্কুলে কোনও অশিক্ষক কর্মচারী না থাকায় নিজেরাই ঘণ্টা বাজান। স্কুলের তালা খোলা থেকে শুরু করে স্কুল বন্ধ করার দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরাই। এতসবের পরও স্কুলে কোনভাবেই বাড়ছেনা পড়ুয়ার সংখ্যা। ক্লাস ফাইভে এবছর ছাত্র সংখ্যা মাত্র ২ জন। তবুও ২ জন ছাত্র নিয়েই শিক্ষার পাঠ দিতে ব্যস্ত শিক্ষকরা। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলে৷ কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা এত কম যে, প্রত্যেক ক্লাসে ছাত্ররা বসলে, ফাঁকা বেঞ্চের সারিগুলো দেখে কষ্ট পান ক্লাসের শিক্ষকরা।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে চওড়া পাকা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে ঝাঁ-চকচকে গোবরডাঙ্গা শ্রী চৈতন্য বিদ্যালয়টি। ১৯৬৬ সালে স্থাপিত হওয়া এই স্কুলটিকে সুন্দর করে রং করা হয়েছে। সামনেও রয়েছে পড়ুয়াদের জন্য বড় খেলার মাঠ। স্কুলের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্ত মঞ্চ। আধুনিকমানের পরিশ্রুত পানীয় জল সহ পড়ুয়াদের জন্য সব ব্যবস্থা রয়েছে। এত সবের পরও এই আপার প্রাইমারি স্কুলে ছাত্র কোথায়?
আরও পড়ুন- ১০০০ পার রান্নার গ্যাসের দাম! চোখে 'জল' নিয়ে এবার কাঠের উনুনেই রান্না!
স্কুলশিক্ষকদের আফসোস, একসময় ৫০০ থেকে ৭০০ পড়ুয়া থাকলেও আজ এত বড় স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা মেরেকেটে ৫০-৫৫ জন। ফলে স্কুলে আগের মত পড়ুয়াদের হুল্লোড় নেই। স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক স্মৃতি ঘেঁটে জানালেন, "একসময় এই স্কুলেই সাড়ে ৫০০-র উপর পড়ুয়া থাকত। পড়ুয়াদের কোলাহলে গমগম করত স্কুল চত্বর। আজ সেসব অতীত।" এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক পড়ুয়া অবশ্য জানালো তাদের শিক্ষকেরা বেশ ভালো, ভালোভাবেই পড়ান তারা।
আরও পড়ুন- ওজন মেশিনে কারচুপি! জিনিস কিনতে গিয়ে ঠকছেন না তো?
করোনা অতিমারীর পর বেড়েছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। স্কুলের ছাত্রদের ফের স্কুলমুখী করতে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন, তবে তেমনভাবে লাভ হয়নি বলে জানালেন এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌত্রিক ভট্টাচার্য। স্কুলে কম্পিউটার রুমে সাজানো রয়েছে সারি সারি কম্পিউটার। আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে স্কুল চত্বরে। অশিক্ষক কর্মচারী নেই তাতে কী? স্কুলের সামগ্রিক উন্নতি আর পড়ুয়াদের স্নেহ-ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে সব কাজ নিজেরাই করেন এই স্কুলের মানুষ গড়ার কারিগরেরা। তবুও কেন পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ে না এই স্কুলে? কারণটা অবশ্য নিজে মুখেই জানালেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌত্রিক ভট্টাচার্য।
স্কুলকে বাঁচাতে শিক্ষকদের প্রচেষ্টা প্রশংসা কুড়ালেও বিষয়টি নিয়ে কী কোন ভাবনা রয়েছে স্কুল পরিদর্শকের? প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল হাবড়া ১ নং সার্কেল ইন্সপেক্টরের অফিসে। কিন্তু সার্কেল ইন্সপেক্টর অরিজিতা দাস অধিকারী কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়াতে কী আদৌ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা দফতর? এ প্রশ্নই এখন বড় করে দেখা দিয়েছে৷
Rudra Narayan Royনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Gobardanga, School, Students, Teachers