Durga Puja 2022|| ৪৫০ বছরের গৌরবের ইতিহাস, জেলার প্রাচীন পুজোর মধ্যে অন্যতম 'বড় বাড়ির পুজো'
- Published by:Shubhagata Dey
Last Updated:
Boro Bari Dakshineswar Durga Puja 2022: ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর ঠাকুর দালানে চলছে মূর্তি গড়ার কাজ। গত কয়েক বছর করোনার প্রভাবে সেভাবে পুজো না হলেও, এ বছর পুরনো জৌলুস দেখা যাবে পুজোতে এমনটাই মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা।
#দক্ষিণেশ্বর: দক্ষিণেশ্বরের বাচস্পতি পাড়ার বড় বাড়ির দুর্গাপুজো চলে আসছে ৪৫০ বছর ধরে। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর ঠাকুর দালানে চলছে মূর্তি গড়ার কাজ। গত কয়েক বছর করোনার প্রভাবে সেভাবে পুজো না হলেও, এ বছর পুরনো জৌলুস দেখা যাবে পুজোতে এমনটাই মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা। বংশ পরম্পরায় ৪৫০ বছরের রীতি মেনেই হয়ে আসছে পুজো। তবে জানা যায়, এই পুজোর প্রচলন করেন প্রতাপাদিত্যের প্রধান সেনাপতি শঙ্কর নাথ চট্টোপাধ্যায়। শুরুতে এই পুজো বারাসতের শিবের কোটায় আয়োজন করা হলেও, পরবর্তী সময়ে দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গা তীরবর্তী এই জাগাকেই বেছে নেওয়া হয় পুজোর জন্য।
ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে বন্দি থাকাকালীন পিতৃ তর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন শঙ্করনাথ চট্টোপাধ্যায়। দাবি মেনে অনুমতি দেন রানী যোধাবাই। শৃংখল পড়া অবস্থাতেই যমুনাতে পিতৃ তর্পণ করেন তিনি। তার মন্ত্র উচ্চারণ শুনে, হিন্দুত্ব ভাব জাগরিত হয় রানী যোধাবাই এর মধ্যেও। পরবর্তী সময়ে, রানী বন্দি শঙ্করনাথ চট্টোপাধ্যায় কে প্রাসাদে ডেকে মুক্তির শর্ত হিসেবে দুর্গাপূজা করার নির্দেশ দেন। এবং আর্থিকভাবে সাহায্য করারও প্রতিশ্রুতি জানান।
advertisement
আরও পড়ুনঃ নিশানায় শুভেন্দু অধিকারী! সুরক্ষা বলয়ে নজর কার! CBI তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা
এরপরই ফিরে এসে এই পুজোর প্রচলন করেন শংকর নাথ চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে তারই বংশধর প্রাণবল্লভ হাল ধরেন এই পুজোর। প্রতাপাদিত্যের প্রধান সেনাপতি শঙ্করনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বংশধর প্রাণবল্লভ চট্টোপাধ্যায়ের উপাধি পাওয়া পদবি হল বাচস্পতি। পরবর্তী সময়ে, তিনি স্বল্প মূল্যে জমি কিনে এই এলাকায় বসবাস শুরু করেন। প্রাণবল্লভ বাচস্পতিরা ছিলেন তিন ভাই। আর তাঁদের গৃহ দেবতা ছিল মা দুর্গা। সেই থেকে এখানে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। এলাকার সকলেই আজ এই জায়গাকে চেনে বাচস্পতি পাড়া বলে। আর বাচস্পতি পাড়ার বড় বাড়ির এই পুজোকে কেন্দ্র করেই মেতে থাকেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।পাশেই থাকেন আরও দুই বংশধর। স্থানীয় মানুষজনের কাছে সেই বাড়ি ছোট বাড়ি নামেই পরিচিত। রীতি মেনে সেখানেও দুর্গাপুজো হয়।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ চাকরি প্রার্থীদের জন্য বিরাট খবর! পুজোর পরে রাজ্যে প্রাইমারি টেট! মিলল স্পষ্ট আভাস
পুজো শুরু হয় মহলায়ার দিন থেকে, তারপর দশমীতে মা দুর্গা কে নৌকা করে গঙ্গার মাঝখানে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। এবং পরের দিন সেই কাঠামো আবার নিয়ে আসা হয়। সেই কাঠামোতে পরের বছর প্রতিমা তৈরি হয়। একই কাঠামোতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। তবে এই পুজোর বিশেষ আকর্ষণ সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে বংশের মধ্যে থেকেই মেয়েদের নির্বাচিত করে, কুমারী পুজো করা হয়। পুজোর যাবতীয় নিয়ম পণ্ডিত রত্ন মেলবলী নামের একটি পুস্তকে যত্ন সহকারে তুলে রাখা রয়েছে আর সেই রীতি মেনেই হয় এই পুজো।
advertisement
দুর্গাপুজো, কালীপুজো, দোল উৎসব ও রাস উদযাপন করা হয় বড় বাড়ির পুজো মণ্ডপের দালানেই। জানা যায়, একসময় ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবও এই পুজো দেখতে আসতেন। যদিও, তখন তিনি ঠকুর হননি। ভাইদের মধ্যে প্রাণবল্লভ বাচস্পতি বড় ছিলেন বলেই, এই মন্দির বড়বাড়ি নামে খ্যাত। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পুরনো দুর্গাপুজোর মধ্যে বাচস্পতি পাড়ার বড়বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম। যদিও, বর্তমান বংশধররা এখন চট্টোপাধ্যায় 'পদবি' ব্যবহার করেন। ঐতিহ্যের এই পুজো দেখতে প্রতিবছরই বহু ভক্তের সমাগম ঘটে বাচস্পতি পাড়ার বড় বাড়ির এই দুর্গা পুজোয়।
advertisement
রুদ্র নারায়ণ রায়
Location :
First Published :
September 03, 2022 4:13 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/উত্তর ২৪ পরগণা/
Durga Puja 2022|| ৪৫০ বছরের গৌরবের ইতিহাস, জেলার প্রাচীন পুজোর মধ্যে অন্যতম 'বড় বাড়ির পুজো'