#নয়াদিল্লি: পেগাসাস মামলায় (Pegasus Case) সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। পাশাপাশি কোর্টের বাইরে সমন্তরাল আলোচনা এবং বিতর্ক করা থেকে মামলাকারীকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, পেগাসাস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হলফনামা তলব করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু সেই হলফনামা নিয়ে টালবাহানার জেরেই সুপ্রিম কোর্ট উষ্মা প্রকাশ করল।
এদিন মামলার শুনানিতে পেগাসাস ইস্যুর সঙ্গে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়কে এক করে নিজের বক্তব্য রাখেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত এদিন সাফ বলে দেয়, 'জাতীয় সুরক্ষার বিষয়ে আমরা জানতে চাই না। কিন্তু, সাধারণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা সেই তথ্যই হলফনামায় জানতে চাওয়া হয়েছিল।
এখানেই শেষ নয়, প্রধান বিচারপতি এনভি রমন আরও বলেন, 'জাতীয় সুরক্ষা বা প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কোন তথ্য জানার ইচ্ছে আমাদের নেই। কিন্তু গুরুতর প্রশ্ন হল, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ, আইন স্বীকৃত কোনও পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক এবং অন্যদের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা।
আরও পড়ুন: বিজেপি-বামের চেয়ে অনেক 'এগিয়ে' থাকতে ভবানীপুরে বিশেষ কৌশল তৃণমূলের!
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা যুক্তি দিয়ে বলার চেষ্টা করেন, 'পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার হলফনামা দিয়ে জানানোর বিষয় হতে পারে না। কারণ এটি জাতীয় সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি বিষয়।' কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এদিন আদালতে প্রাক্তন তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ এবং বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সংসদে দেওয়া বিবৃতির উল্লেখ করা হয়। যেখানে তারা বলেছিলেন, সরকারের কড়া আইন ও বন্দোবস্ত উপেক্ষা করে কেউ কারও ফোনে আড়ি পাততে পারে না।
যদিও সলিসিটর জেনারেলের সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ বলেন, 'হলফনামা পেশ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন রায় ঘোষণা ছাড়া আমাদের কাছে আর অন্য কোনো রাস্তা নেই।
অপরদিকে, মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করছেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সিব্বলের বক্তব্য ছিল, ২০১১ সালে জেঠমালানি মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, নাগরিকের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ক্ষেত্রে সব তথ্য সামনে আসা দরকার। সিব্বলের সংযোজন, 'আমরা জানতে চাই পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে সরকার নাগরিকের অধিকার হরণ করেছে কি না।' এদিন সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যে কড়া মন্তব্য করল, তাতে পেগাসাস ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের চাপ বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে, এদিন পেগাসাস মামলায় অন্তর্বর্তী রায়দান স্থগিত রাখল সর্বোচ্চ আদালত।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।