#নয়াদিল্লি: বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। কিন্তু কর্মক্ষমতা বার্ধক্যগ্রস্ত হয়নি এতটুকুও! প্রথম সূর্যের মতো লাল পাগড়ি আর সাদা পাকানো গোঁফের যুগলবন্দিতে যে মানুষটির অনাবিল হাসি দশকের পর দশক জুড়ে টেলিভিশনের দর্শকদের মনে থেকে গিয়েছে, তাঁর নাম ধরমপাল গুলাটি। MDH মশলার কর্ণধার হিসেবে সংস্থার নানা বিজ্ঞাপন, ছবি হোক বা ভিডিও, তাঁর অতি পরিচিত সেই হাসি ধরা দিয়েছে বার বার।
অবশ্য MDH মশলার প্রতিষ্ঠাতার খেতাবটা ধরমপালের অর্জিত নয়। এই সম্মানের অধিকারী তাঁর পিতা চুনিলাল গুলাটি। জানা যায় যে অবিভক্ত ভারতে ১৯২৩ সালে অধুনা পাকিস্তানের (Pakistan) সিয়ালকোটে (Sialkot) জন্ম নিয়েছিলেন ধরমপাল। পরিবারের ছিল গুঁড়ো মশলার ব্যবসা। সেই সময়ে দিল্লির (Delhi) করোল বাগ আর চাঁদনি চকে (Chandni Chowk) দুটি দোকান ছিল তাঁদের। বাবাকে সেই ব্যবসার কাজে সাহায্য করার জন্য ক্লাস ফাইভের পর আর পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি ধরমপাল!
কিন্তু সময় সাক্ষী থেকেছে বহু ক্ষেত্রেই- ভিতর থেকে সমৃদ্ধ হলে প্রথাগত শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। তাই ধরমপাল যে পরবর্তী কালে বাবার মশলার ব্যবসাকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করবেন, এ যেন নিয়তি নির্ধারিতই ছিল!
খবর মোতাবেকে, আপাতত ধরমপালের উদ্যোগে দিনে ৩০ টন গুঁড়ো মশলা তৈরি করার ক্ষমতা রাখে MDH। বিশ্বের ১০০টি দেশে পাঠানো হয় এই সংস্থার প্যাকেটবন্দী গুঁড়ো মশলা। ভারতে ছাড়াও দুবাই (Dubai) এবং বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে ব্যবসাবৃদ্ধির পাশাপাশি এই সংস্থার অফিস খুলেছেন ধরমপাল।
এই সব দিক মাথায় রেখে দেশের FMCG অর্থাৎ ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস ক্ষেত্রে হায়েস্ট পেইড সিইও (CEO) বা সব চেয়ে বেশি বেতনভোগী প্রধান কার্যনির্বাহকের তকমাও লাভ করেছিলেন ধরমপাল। জনপ্রিয়তায় তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন গডরেজ গ্রুপের আদি গডরেজ এবং আইটিসি-র ওয়াই সি দেবেশ্বরকেও। শোনা যায়, ধরমপাল বেতন পেতেন ২১ কোটি টাকা! এবং সেই বেতনের ৯০ শতাংশই তিনি দান করতেন নিজের প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়, যাতে দেশের গরিব মানুষের সুচিকিৎসা হয়, তারা ভালো থাকে! কর্মক্ষেত্রে এবং সমাজসেবায় এই অনন্য নজিরই তাঁকে এনে দিয়েছিল পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) পুরস্কার।