তীব্র জলসঙ্কটের মুখোমুখি দেশ সংসদে স্বীকার মোদির, জলসংরক্ষণে নতুন নীতির ইঙ্গিত
Last Updated:
#নয়াদিল্লি: জলসঙ্কটে জীবন সঙ্কট ৷ সংসদে জবাবী ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায় উঠে এল সেই বিষয় যা নিয়ে এই মুহূর্তে শঙ্কিত গোটা দেশ ৷ সংসদে দাঁড়িয়ে কার্যত মোদি স্বীকার করে নিলেন জলকষ্টের কথা { প্রবল জলকষ্টের মুখোমুখি চেন্নাই সহ দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত ৷ সেই সমস্যার মোকাবিলায় মোদির নিদান, জল সঙ্কটকে গুরুত্ব দিয়ে জল অপচয় অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত ৷ সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, জল সংরক্ষণ নিয়ে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিতে নতুন মন্ত্রক তৈরি হলেও জল না থাকলে মন্ত্রক আর কী করবে? সেটা বোঝাতেই যেন জলে নজর নরেন্দ্র মোদির।
একইসঙ্গে জলসংরক্ষণে নতুন নীতির ইঙ্গিত মেলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় ৷ এদিন সংসদে জলশক্তিমন্ত্রক তৈরির কথাও বলেন মোদি ৷ এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ঘরে জলের ব্যবস্থাই দ্বিতীয় বিজেপি সরকারের লক্ষ্য ৷
জল জীবন। সেই জলের অভাবে জীবন সংকটে। চেন্নাই-সহ দেশের নানা প্রান্তেই এই জল-সংকটের ছবি। পরিস্থিতি এভাবে চললে, ২০৩০ সালের মধ্যে পানীয় জলের অভাবে ভুগবেন দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ। তীব্র জল সংকটে ভুগছে চেন্নাই ৷ শহরের আটটি জলাঘারই শুকিয়ে গিয়েছে ৷ ২০ টাকার জলের বোতল বিকোচ্ছে ৪০০ টাকায় ৷ একইসঙ্গে বর্ষার বিলম্ব ও বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে ক্রমাগত আরও অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির ৷
advertisement
advertisement
নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে, আগামী ১৫ মাসের মধ্যে চেন্নাই, দিল্লি, বেঙ্গালেরু ও হায়দরাবাদ সহ ২১টি শহরে প্রবল জলসংকটে পড়তে চলেছেন ১৫ কোটির বেশি মানুষ। আর ২০৩০ এ- দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ খাওয়ার জলটুকুও পাবেন না।
চেন্নাই দিয়ে শুরু। ২০২০ সালে মধ্যে দিল্লি, বেঙ্গালুরু,চেন্নাই ও হায়দরাবাদ। ২০২২ এ আরও কিছু শহর। ২০২৫ এ আরও সংখ্যাটা আরও বাড়বে। বলছে খোদ নীতি আয়োগ। তাদের রিপোর্ট বলছে, ভারতে এখন ষাট কোটি মানুষ তীব্র জলকষ্টের শিকার ৷ দেশে জলের যা চাহিদা তার ৪০ শতাংশই মেটায় ভূগর্ভস্থ জল ৷ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভূগর্ভস্থ জল তোলা হয় ভারতেই ৷ এর জেরে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ-সহ একুশটি শহরে ২০২০ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার শেষ হয়ে যাবে ৷ যার জেরে চরম বিপাকে পড়বেন দশ কোটি মানুষ ৷ ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ আর পানীয় জলই পাবেন না ৷
advertisement
ভালো বর্ষা এই পরিস্থিতিতে সামান্য একটু স্বস্তি দিতে পারত। কিন্তু এবার দেশের ৫৫ শতাংশ এলাকাতেই খরার পরিস্থিতি। মৌসুমি বায়ু দুর্বল,কোথাও স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতই হয়নি। তবে মূল চিন্তা সেই ভূগর্ভস্থ জল নিয়েই। ওয়াটার অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তথ্য বলছে, জুনের শেষ সপ্তাহেও দেশের ৯১টি মূল জলাধারের ৫৯টিতেই থাকবে ঘাটতি ৷ ১১টি জলাধার শুকিয়ে কাঠ। একেবারে জলশূন্য। বৃষ্টিতে ঘাটতির দ্বিতীয় ধাপেই রয়েছে বাংলা। সঙ্গে বিহার, ঝাড়খণ্ডও।
advertisement
সাধারণত ১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা থাকে কিন্তু, মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, এ বার, জুনের শেষ সপ্তাহেও দেশে ৩৯ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি থাকবে ৷
জলের অভাব মানেই স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা আর চাষের কাজে সংকট। আর তাই চিন্তাটা আরও বেশি। বিজ্ঞানীদের আফসোস, এই পরিণতির আঁচ অনেক আগেই মিলেছিল। টাকা দিয়েও জল যখন তৈরি করা যাবে না, এটা জেনেও না মানুষ - না সরকার -কেউই সতর্ক হয়নি।
advertisement
জলসংকট মোকাবিলায় ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিতে ‘নল দিয়ে জল’ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল দ্বিতীয় মোদি সরকার। নদী-নালা-খাল-বিল সবই শুকিয়ে গিয়েছে। নল দিয়ে আর জল পৌঁছবে কীভাবে? দেওয়াল লিখন এখনই স্পষ্ট। সংকট থেকে রাতারাতি বাঁচার উপায় দেখছেন না পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীরা।
দ্বিতীয় মোদি মন্ত্রিসভায় পানীয় জল সরবরাহে গুরুত্ব দিতে জলশক্তি মন্ত্রক তৈরি হয়েছে । ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দে নল নিয়ে জল প্রকল্প হাতে নিয়েছে এই মন্ত্রক। নদীনালা, পুকুর ও বিভিন্ন জলাশয়ের জল পরিশ্রুত করে পাইপে করে সরবরাহ করার জন্যই এই প্রকল্প। তবে বৃষ্টির অভাবে সেই কাজও থমকে। এই অবস্থায় সেচ ও কৃষিতে জলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া গতি নেই। সংসদে দাঁড়িয়ে সেই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
June 25, 2019 6:51 PM IST