জয়পুর: কনকনে শীতের রাতে রাজস্থানের জালোরের রানিবাড়া এলাকার দেবনারায়ন রাজকীয় উচ্চ প্রাথমিক আবাসিক স্কুল থেকে পাঁচিল টপকে পালালো প্রায় ১৬ জন পড়ুয়া। বেশ ঠান্ডার মধ্যেই সেই ১৬ জন পড়ুয়া প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে কালেক্টরের কাছে পৌঁছয়। হোস্টেলের ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতেই এত দূর পাড়ি দিয়েছিল তারা। জানা গিয়েছে, ওই পড়ুয়ারা ৯০ কিলোমিটার মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাদের আবাসিক স্কুলের ওয়ার্ডেন তাদের মারধর করে এবং তাদের দিয়েই ঝাঁট দেওয়ায় (Jalore News)।
পুলিশ সূত্রে খবর, দশম এবং একাদশ শ্রেণীর ১৬ জন ছাত্র মঙ্গলবার রাত ১১ টায় স্কুলের পাঁচিল টপকে পালায়। শীতের রাতে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে তারা জালোরে পৌঁছয় ভোর ৪টের সময়। এর মধ্যে চান্দপুরা থেকে কোরি পর্যন্ত তারা কোনও যানবাহন না-পাওয়ায় প্রায় ১০ কিলোমিটার হেঁটে সেখানে পৌঁছয়। তার পর সেখান থেকে অবশ্য তারা পেয়ে যায় যানবাহন। ভোর ৪টের সময় জালোরে পৌঁছে প্রায় ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তারা দেখা পায় কালেক্টর নম্রতার। এর পর তারা কালেক্টরের কাছে হাত জোড় করে আবাসিক স্কুলের ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে তিন পাতার অভিযোগ পত্র জমা দেয়।
সরিয়ে দেওয়া হয় সেই ওয়ার্ডেনকে:
ওই পড়ুয়াদের অভিযোগ পেয়ে জেলা কালেক্টর বিষয়টির উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই তিনি রানিবাড়ার এসডিএম প্রকাশচন্দ্র অগ্রবাল, সমাজকল্যাণ সহায়কের নির্দেশক সুভাষচন্দ্র মনি, শিশুকল্যাণ সমিতির অধ্যক্ষ নেনসিং রাজপুরোহিত এবং স্কুলের সদস্য রমেশ কুমারকে সেই স্কুলে পাঠান। সেই আধিকারিকেরা আবাসিক স্কুলে বিভিন্ন ধরনের গোলমাল দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই ওয়ার্ডেনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা কালেক্টর গাড়ির ব্যবস্থা করে পালিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠান।
৫ হাজার টাকা নিয়েও রসিদ দেয়নি:
ছাত্ররা অভিযোগ করে যে, গত ১ সেপ্টেম্বর হোস্টেল খুলেছিল। ১৫ দিন সেখানে রাঁধুনি থাকলেও, তার পর থেকে ছাত্ররা নিজেরাই রান্না করছে। আর অভিযুক্ত ওই ওয়ার্ডেন তাদের নকল বিল দিচ্ছে। ওয়ার্ডেন তাদের থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেয়। এ ছাড়া সরকারের কাছ থেকেও যে ২০০ টাকা করে পাওয়া যায়, তা-ও অভিযুক্ত নিজের পকেটে ঢোকায়। এ ছাড়া প্রতি মুহূর্তে ওয়ার্ডেন তাদের মারধর করে এবং তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এখানেই শেষ নয়, হোস্টেলে সেই ওয়ার্ডেনের ঘরে মদ খাওয়ার আসর বসে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন-Viral News: গল্প নয়, সত্যি! কারখানা থেকে বাড়ি পৌঁছতেই কর্মচারী হয়ে গেল কোটিপতি!
ঝাঁটা দিয়ে মারা হতো
ছাত্ররা অভিযোগ করেছে যে, অভিযুক্ত ওয়ার্ডেন নিজের ইচ্ছা মতো বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতো। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ঝাঁটা দিয়ে মারা হতো। ওয়ার্ডেন আবাসিক স্কুলের ছাত্রদের উপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চালাত। এ নিয়ে তদন্ত হবে এবং তার রিপোর্ট তৈরি করে কালেক্টরকে পাঠানো হবে।
তদন্তে উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্য
রানিবাড়ার এসডিএম প্রকাশচন্দ্র অগ্রবাল প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে সেই বিদ্যালয়ে থেকে, ছাত্রদের অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করেন। সেখানে উঠে এসেছে ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। তদন্তে দেখা যায় যে, তিন দিন ধরে সেই আবাসিক স্কুলের প্রিন্সিপাল আসেননি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jalore, Viral News