#ধর্মশালা: গত মার্চেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল হিমাচল প্রদেশ পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা (Himachal Pradesh Police Recruitment Exam)। পরীক্ষা থেকে ফল প্রকাশ- সবই মোটামুটি নির্বিঘ্নেই মিটেছিল। কিন্তু প্রায় এক মাস পরে সেই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের (Paper leaked) গুরুতর অভিযোগে বাতিলই হয়ে গেল সেই পরীক্ষা। কার্যত অনিশ্চয়তার মুখে পরীক্ষার্থীদের ভাগ্য!
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল হিমাচল প্রদেশ পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা। ১৭০০টি শূন্য পদের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রায় সত্তর হাজারেরও বেশি প্রার্থী।
আরও পড়ুন- পালিয়ে বিয়ে করে আতঙ্কে কাটছে দিন; ভিডিওতে পুলিশের কাছে সাহায্যের আর্তি দম্পতির
পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ৫ এপ্রিল। আর এর পরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা সামনে আসে। কীভাবে? কাংড়ার এসপি কুশল শর্মা জানাচ্ছেন যে, ফল প্রকাশের পর দেখা যায় তিন জন পরীক্ষার্থী দারুণ নম্বর পেয়েছে। আর তাতেই সন্দেহ আরও জোরালো হয়।
আসলে ওই তিন পরীক্ষার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় ৮০-র মধ্যে পেয়েছিল ৭০। অথচ দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তাঁরা মাত্র ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছিল। আর এখানেই পুলিশ কর্তাদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।
ওই তিন পরীক্ষার্থীকে কড়া জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশি জেরায় অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে, পঞ্জাবের কারওর থেকে তাঁরা প্রায় ৬-৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার সমাধান করা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছিল।
ঘটনার কথা সামনে আসায় রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে কাংড়া পুলিশ। এফআইআর দায়ের করেন খোদ পুলিশের আধিকারিকেরাই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল নুরপুর মহকুমার সুলয়ালি গ্রামের মনীশ কুমার, ফতেহপুর মহকুমার খাতিয়ার গ্রামের মনি চৌধরি এবং কাংড়া তেহসিলের ভারিয়াড়া গ্রামের গৌরব।
আরও পড়ুন- ছিল প্যাসেঞ্জার ট্রেন, হল এক্সপ্রেস! কোন কোন ট্রেন আচমকা বদলে গেল? জানুন...
চতুর্থ অভিযুক্ত অশোক কুমার ধর্মশালার কাছে অবস্থিত পাস্সু গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং অশোক কুমারই প্রশ্নফাঁসকারীর সঙ্গে অভিযুক্ত তিন পরীক্ষার্থীর সাক্ষাৎ করিয়েছিলেন।
ইতিমধ্যে দিল্লি ও হরিয়ানার প্রশ্নফাঁসকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু কীভাবে ফাঁস হল প্রশ্নপত্র?
পুলিশের দাবি, কোনও রকম প্রমাণ না-রাখতে এবং সন্দেহ এড়ানোর স্বার্থে অভিযুক্তরা পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রের কোনও হার্ড কপি অথবা সফট কপি হাতে দেয়নি। শুধুমাত্র একটা কপি দেখিয়ে সমাধান করা প্রশ্নপত্র মুখস্থ করে নিতে বলা হয়েছিল প্রার্থীদের।
অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিশের সন্দেহ, ওই প্রশ্নপত্র সম্ভবত কোনও ছাপাখানা থেকেই ফাঁস হয়েছে। সেই সঙ্গে কুশল শর্মার বক্তব্য, এই ঘটনায় এখনও অভিযুক্তদের জেরা করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য পরে সকলকে জানানো হবে।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর জানাচ্ছেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য উঠে এসেছে। আর তাই এই ধরনের নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সরকার ওই পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ঘটনার তদন্তের স্বার্থে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট (SIT) গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে আবার এই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।