#আহমেদাবাদ: তুমি তো মৃত্যুর চেয়ে বড় নও৷ আমি মৃত্যুর চেয়ে বড়... অমরত্বের প্রত্যাশা, সে কার না থাকে৷ কিন্তু জীবন যে নশ্বর, তাও তো জানা৷ "জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?" কিন্তু গুরুবাক্য? তা কী আর যেমন তেমন ব্যাপার! গুরু বলেছিলেন, তিনি অমর (Guru said he is immortal৷) সত্যিই কি তাই? সন্দেহ জেগেছিল শিষ্যের মনে ৷ আবার বিশ্বাসও ছিল, গুরুবাক্য মিথ্যে হবে না৷ কিন্তু কৌতূহল এড়িয়ে যেতে পারেনি সে৷ হত্যা করে পুরোহিত গুরুদেবকে৷ কিন্তু না, অমরত্বের বর তিনি সত্যিই পাননি! তা হয়তো নিজেও জানতেন না৷ কিংবা জানতেন৷
গুজরাতের (Gujarat) ভাবনগরের চোসালা গ্রাম (Chosala village in Bhavnagar)৷ ছোট্ট গ্রামের মাঝখানে রয়েছে একটি হনুমান মন্দির (Hanuman temple) ৷ বহুদিন ধরেই সেখানকার সেবক এক গুরু, প্রধান পুরোহিত৷ (The head priest) পুজো করেন মন দিয়ে এবং বিশ্বাস করেন, তিনি "মৃত্যুর চেয়ে বড়৷" তাঁর দাবি ছিল, তিনি সমস্ত তপস্যা করেছেন, নিয়ম মেনেছেন৷ কোনও ভুল নেই তাঁর সাধনায়৷ একরকম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ভক্তের কাছে৷ "আমি অমর (Guru said he is immortal), আমাকে আক্রমণ কর, আমার কিছুই হবে না"। প্রধান পুরোহিতের ( Main Priest) এই আদেশের পর, তার শিষ্য অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে৷ রক্তাক্ত পুরোহিত তখন লুটোচ্ছেন। তাজ্জব বনে যান শিষ্য৷ এ কী করে সম্ভব? পুরোহিত মারা গেছেন জেনে শিষ্য তাঁর লাশ একটি কূপে ফেলে দেন।
আরও পড়ুন: ডাকাতের প্রেমে পড়লেন এক সুন্দরী, জেল থেকে বের হতেই বাগদান!
পুলিশ রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাঁর শিষ্য একই গ্রামের বাসিন্দা৷ নীতিন কুর্জি ভানোদিয়া (Nitin Kurji Vanodiya) নামে ওই ব্যক্তি পুরোহিতকে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে তার দেহ কুয়োয় ফেলে দিয়েছে। পুরোহিতের ভাই পুলিশে এই বিষয়ে অভিযোগ করলে পুলিশ নীতিন কুরজির (Nitin Kurji Vanodiya) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কুর্জিকে গ্রেফতারের পর পুলিশ তাঁকে আদালতে হাজির করে এবং তার তিন দিনের পুলিশি রিমান্ড চায়। আদালত তাকে একদিনের পুলিশি রিমান্ডে পাঠিয়েছে। পুরোহিতের বড় ভাই প্রবীণভাই ধীরুভাই আদানিয়া ধাসা থানায় আইপিসির ৩০২ ধারা এবং জিপি অ্যাক্টের ১৩৫ ধারার অধীনে নীতিন কুর্জির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন৷
আরও পড়ুন: রোমহর্ষক অভিযান! ৭০ ফুট উচ্চতায় খাড়াই পাহাড়ে দোলনা খাটিয়ে রাত কাটালেন দুই ভাইবোন
কে ছিলেন এই পুরোহিত? ১৫ বছর আগে সন্ন্যাসী হয়েছিলেন রমেশভাই ধীরুভাই আদানিয়া (Rameshbhai Dheerubhai Adaniya)৷ জন্ম উমরালার গ্রামে৷ সন্ন্যাস গ্রহণের পর রামদাসজি গুরু মোহনদাসজী কাথিয়া নাম গ্রহণ করেন। তবে একেবারে বিবাগী হননি৷ সন্ন্যাস গ্রহণ করা সত্ত্বেও, তিনি মাঝে মাঝে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেন। গত ৮ বছর ধরে মহন্তের একনিষ্ঠ শিষ্য ছিল নীতিন কুর্জি ভানোদিয়া৷ বিশ্বস্ত শিষ্য হিসেবে তাঁর সেবা করছেন। মৃত পুরোহিতকে একাধিক ব্যক্তিগত ও গোপন বিষয়েও সাহায্য করতেন।
এর আগেও কামুলি তালুকের কলমাদ গ্রামে এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। এক মন্দিরের পুরোহিতকে হত্যা করেন এক বৃদ্ধ। মন্দিরে ঢোকার আগে জুতো খোলা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল সে সময়৷ প্রাণ দিতে হয়েছিল পুরোহিতকে৷ এবারের ঘটনা অবশ্য একটু আলাদা৷
কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করেছিল, সে মরেনি৷ আর গুরু মোহনদাস প্রাণ দিয়ে বুঝলেন কেউ অমর নয়৷ ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে, অন্ধ যে জন মারে আর শুধু মরে...
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।