Nadia News: ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামদাতা উত্তরাধিকারী লক্ষীকান্ত মৈত্রের ১২৯তম জন্ম দিবস পালন নদিয়ায়
- Published by:Teesta Barman
- hyperlocal
- Reported by:MAINAK DEBNATH
Last Updated:
Nadia News: লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র এমএ, বি.এল, কাব্য সাংখ্য তীর্থ ডিগ্রি লাভ করেন কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে৷ ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধির আহ্বানে সাড়া দিয়ে আইন পেশা ছেড়ে দিয়ে শান্তিপুরে পৈতৃক বাড়িতেই ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে ‘শিল্পাশ্রম’ তৈরী করেন৷
নদিয়া: পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র নদিয়ার শান্তিপুরে জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৫ সালের ২৩ জুলাই৷ এ বছর ১২৯ বছর পূর্ণ হল৷ অত্যন্ত মেধাবী লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র এমএ, বি.এল, কাব্য সাংখ্য তীর্থ ডিগ্রি লাভ করেন কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে৷ ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধির আহ্বানে সাড়া দিয়ে আইন পেশা ছেড়ে দিয়ে শান্তিপুরে পৈতৃক বাড়িতেই ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে ‘শিল্পাশ্রম’ তৈরী করেন৷ ১৯৩৪ সালে কংগ্রেস সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার দিকে অগ্রসর হলে তীব্র প্রতিবাদ করে আরেক পন্ডিত মদন মোহন মালব্য কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই উপদল ‘জাতীয় কংগ্রেস দল’ গঠন করলে পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র তাতে যোগ দেন৷
তিরিশের দশকের শেষ দিক। কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র। বিশ্বাস, একমাত্র সশস্ত্র আন্দোলনের পথেই স্বাধীনতা আনা সম্ভব ভারতবর্ষে। পাশাপাশি ভারতভাগের প্রস্তাব কংগ্রেসের অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব মেনে নিলেও, স্পষ্টতই নেতাজির মতবিরোধ ছিল তা নিয়ে। তবে সেদিন কংগ্রেসে থেকেও, নেতাজির এই নতুন ‘পথচলা’-কে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি। অকুণ্ঠিতভাবেই জানিয়েছিলেন, তরুণ প্রজন্মও এগিয়ে আসবে তাঁর এই উদ্যোগে। আর সেই সূত্রেই তিনি নেতাজি প্রতিষ্ঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নামকরণ করেছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লক।
advertisement
advertisement
১৯৩৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস বাংলার প্রেসিডেন্সি ডিভিশন থেকে পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যের ‘জাতীয় কংগ্রেস দলের’ প্রার্থী হয়ে কংগ্রেস দলের প্রার্থী হেমন্ত সরকারকে পরাজিত করেন৷ এরপর কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হন৷ ১৯৪৬ সালে কলকাতা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনেও জয়লাভ করেন পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র৷ ১৯৪৮ সালে অস্থায়ী পার্লামেন্ট গঠন হলে ড. আম্বেদকরের নেতৃত্বে গঠিত ভারতীয় সংবিধান রচনা কমিটির সদস্য হন৷ কিন্তু পণ্ডিত জওহর লাল নেহরুর চাটুকারিতা না করার জন্যই বাঙালি পণ্ডিতকে সেভাবে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি৷ তাই সংসদে তাঁর কোনও মূর্তি নেই বলে আক্ষেপ রয়েছে তাঁর ঘনিষ্টদের৷ আসলে পণ্ডিতের প্রসারতাকে যে দাবিয়ে রাখা যায় না, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সংসদে দেওয়া তাঁর বক্তৃতামালা থেকে৷ তাঁর ক্ষুরধার যুক্তির কাছে পণ্ডিত নেহরুও অসহায় বোধ করতেন।
advertisement
নদিয়ার শান্তিপুরে তাঁর বসত বাড়ি হওয়ার সুবাদে, ব্যাপক উন্নতি সাধন হয়েছিল। রেল স্টেশন, শান্তিপুর কলেজ, পুরাণ পরিষদ-সহ বেশ কিছু নিদর্শন আজও বিদ্যমান।
তার পুত্র কাশীকান্ত মৈত্র, পরবর্তীতে নাতি ডঃ সুব্রত মৈত্রও তাঁর ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছিলেন। তবে শান্তিপুর কলেজে একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হলেও, শান্তিপুর রেলওয়ে স্টেশনের জমি দাতা হলেও দুঃখের বিষয় আজও তাঁর আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হয়নি।
advertisement
আজ শান্তিপুর পুরসভা, শান্তিপুর কলেজ, এবং রেল যাত্রী সমিতির পক্ষ থেকে শান্তিপুর রেলওয়ে স্টেশনে তার একটি প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়।
সম্প্রতি কয়েক বছর আগে শান্তিপুর মরমীর পক্ষ থেকে তাঁর জীবনশৈলী এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়।
তবে এত বিখ্যাত এবং জাতীয় স্তরের নেতৃত্বের প্রতি সরকারি কোনও আবেগ লক্ষ করা যায় না। তবে তাঁর এবং তাঁর পুত্র কাশীকান্ত মৈত্রের স্মৃতি কমিটি কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে সারাদিনব্যাপী রক্তদান এবং স্মৃতি কথা আলোচনার ব্যবস্থা করেন প্রতিবছর। এদিন সেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্য-সহ আত্মীয়বর্গ এবং গুণমুগ্ধরা।
advertisement
Mainak Debnath
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
July 23, 2023 10:07 PM IST