মুর্শিদাবাদঃ এ এক ব্যতিক্রমী ছবি! চারিদিকে যখন চলছে মাঘের শেষ শীতের আমেজ, তখন মুর্শিদাবাদের সুতির বংশবাটী এলাকায় শুরু হল দুর্গাপুজো। প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি পুরোনো এই পুজো বসন্তের দুর্গা উৎসব, আদতে যা এলাকায় রাজ রাজেশ্বরী পুজো বলেই পরিচিত। এই পুজাকে ঘিরে গ্রামের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে উঠেছে এলাকায়।
শুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদের বিশেষ এই দুর্গাপুজোর টানে পার্শ্ববর্তী জেলা বীরভূম, নদিয়া, মালদহ-সহ ভিন রাজ্যের ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকেও কাতারে কাতারে ভক্তরা ভিড় জমান। এই রাজ রাজেশ্বরী দুর্গোৎসবকে ঘিরে শুরু হয়েছে বাউল, নাটক ও কবিগানের আসর। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহা মিলন উৎসবে পরিণত হয়েছে এই রাজ রাজেশ্বরী পুজো।
আরও পড়ুনঃ ফের বদলাচ্ছে আবহাওয়া, দিঘা যাওয়ার প্ল্যান থাকলে জানুন কী হতে পারে পরিস্থিতি
বীরভূম জেলা লাগোয়া গ্রাম মুর্শিদাবাদের বংশবাটি। জনসংখ্যা প্রায় কুড়ি হাজার ছুঁই ছুঁই। মাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলবে পুজো। মুর্শিদাবাদের এই অকাল দুর্গাপুজোর আয়োজন ঘিরে বহু জনশ্রুতি রয়েছে। পুজোর টানে শুধু গ্রামের মানুষজন নয় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমান। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এমন অকাল দুর্গাপুজোর নিদর্শন এই জেলাতে আর দ্বিতীয়টি নেই। পুজোর প্রথম দিন থেকেই মানুষ এখানে ভিড় জমাতে শুরু করেছে। ভাসানের দিনে গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক জনসমাগম হয়।
আরও পড়ুনঃ বাংলার সিপিএমের 'নৈতিক' জয়, হারানো ত্রিপুরা ফিরে পেতে সেই পুরনো বন্ধুত্বের জোট!
পুজোর সঙ্গে যুক্ত বংশপরম্পরায়, পুরোহিত জানান, শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী মা দুর্গার ষোড়শী রূপ। দশ মহাবিদ্যার তৃতীয় রূপ। দশ মহাবিদ্যা হল কালী, তারা, ষোড়শী, ভুবনেশ্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, বগলা, মাতঙ্গী, ধূমাবতী এবং কমলা। মা রাজ রাজেশ্বরী এখানে শবাসনে বিরাজ করেন। ধরিত্রীকে ধারণ করে থাকেন চতুর্মুখী ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এবং ধর্মরাজ। মেদিনীর ওপর শায়িত শবরূপী শিব। শিবের নাভি থেকে প্রস্ফুটিত দুটি পদ্ম। একটি মায়ের দক্ষিণ চরণে। অপরটি মায়ের আসন, যেখানে দেবী চতুর্হস্তে বিরাজিতা। দু-পাশে দুই সখী। বামে জয়া। ডানে বিজয়া। বাহন সিংহ এক চালায় দেবীর আবির্ভাব।
দেবীর পুরোনো মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছে নতুন মন্দির। যা উচ্চতায় প্রায় ১১৫ ফুট। এটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম উচ্চতম মন্দির হিসাবে পরিগণিত হওয়ার পথে। এ দিকে এই বিশাল আকার পুজো চালানোর যাবতীয় খরচ রাজ রাজেশ্বরীর মন্দির কমিটির হাতে থাকা ধানের জমিতে চাষের পাশাপাশি পুকুরের মাছ চাষ করা হয়। মন্দিরের নিজস্ব জমিতে হাট বসিয়ে টাকা উপার্জিত হয়।কৌশিক অধিকারী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja 2023, Murshidabad