Durga Puja Travel 2022: আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন বাংলার রাজধানীর সৌধ, ঘুরে আসুন মালদহের গৌড়
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
Durga Puja Travel 2022 : গৌড়ের একাধিক নিদর্শন আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের মহদিপুর পঞ্চায়েতের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে। সড়ক পথে মালদহ শহর থেকে প্রায় ৩০ মিনিটের রাস্তা
হরষিত সিংহ, মালদহ : একদিনেই ঘুরে দেখতে পারেন প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়। গৌড়ের একাধিক নিদর্শন আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের মহদিপুর পঞ্চায়েতের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে। সড়ক পথে মালদহ শহর থেকে প্রায় ৩০ মিনিটের রাস্তা। প্রাচীন বাংলার রাজধানীর ধ্বংসস্তূপ গৌড় দ্বাদশ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যে বাংলার রাজধানী হিসাবে বিরাজমান ছিল।চার শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একজনের বেশি রাজবংশ শাসন করেছেন।বর্তমানে এটি বাংলার ইসলামিক আমলের দর্শনীয় ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অন্যতম। ইতিহাস এবং তার সাথে স্থাপত্যকলা মিলে মিশে রয়েছে এই প্রাচীন শহর গৌড়ে।
এই শহরটির উল্লেখ প্রায় ৫০০ খ্রিস্টপূর্ব পুরাণ গ্রন্থগুলিতে করা হয়েছে। সেই সময়ে গৌড় মৌর্য সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। অষ্টম শতাব্দী থেকে একাদশ শতাব্দী পর্যন্ত, বাংলা পাল রাজবংশের শাসনের অধীনে ছিল। বাংলার বৌদ্ধ জীবনযাত্রার অনুসরণে এই শহরের ব্যাপক উত্থান হয়েছিল এসময়। পাল রাজাদের শাসনের পরে সেন রাজবংশের শাসন ঘটে, যা মুঘল এবং আফগানরা দ্বাদশ শতাব্দীতে দখল করে।
advertisement
একসময় গৌড়ে ছিল শক্তিশালী হিন্দু রাজা শশাঙ্কের অধীনে। অষ্টম থেকে একাদশ শতাব্দী পর্যন্ত বাংলায় বৌদ্ধ পাল রাজবংশ শাসন করে। ১১৩০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রামপালের মৃত্যুর পরে পাল সাম্রাজ্য যখন ভেঙে পড়তে শুরু করে ঠিক সেই সময় সেনবংশ ক্ষমতা লাভ করে। যোদ্ধা সামন্ত সেনের পুত্র হেমন্ত সেন সেসময় একজন শাসক প্রধান ছিলেন। পরে বিজয় সেনের নাতি লক্ষ্মণ সেন গৌড় নগরীকে রাজকীয় রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। এবং নদিয়াকে দ্বিতীয় রাজধানী করেন।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : চালকের আসনে ছিলেন নামী মহিলা চিকিৎসক, সাইরাসের সঙ্গে মার্সিডিজে ছিলেন তাঁর পারিবারিক বন্ধুরা
তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন তার প্রায় ৬০ বছর বয়স।এরপর দ্বাদশ শতাব্দীর শেষদিকে উত্তর ভারতে হিন্দু শাসন, তুর্কি আক্রমণকারীদের দেশ লুণ্ঠন শুরু হওয়ায় যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছিল।পরে লক্ষ্মণ সেন এবং তাঁর বংশধররা পূর্ববঙ্গে রাজত্ব অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন, তবে অর্ধেক রাজ্য কার্যকরভাবে মুসলিম শাসনের হাতে চলে গিয়েছিল।গৌড় যথাক্রমে খিলজি বংশ, মামলুক সালতানত, বলবন রাজবংশ এবং তুঘলক সালতানতের রাজধানী শহর হিসেবে সক্রিয় ছিল ।
advertisement
আরও পড়ুন : দীর্ঘ দেড় বছর পর হাওড়া স্টেশনে আজ থেকে ফের খুলছে ফুড প্লাজা
পরবর্তীতে বাংলার রাজধানী পান্ডুয়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। তবে পান্ডুয়াতে বেশি দিন রাজধানী থাকেনি। তারপর বেশ কয়েক বছর ধরে একের পর এর রাজা গৌড়ে রাজত্ব করেছেন। শেষ পর্যন্ত ১৫৭৫ সালের অক্টোবর মাসে মুনিম খানকেও মৃত্যুর কবলে পড়তে হয়। এই মহামারিটি ছিল প্লেগ এবং এটিই বসিয়েছিল গৌড়ের উপর তার শেষ থাবা। মহামারির পর শহরটিকে পরিত্যাক্ত করে দেওয়া হয়েছিল ।একসময়ের সমৃদ্ধ শহরে তখন প্রকৃতি ছাড়া আর কারও বসবাস ছিল না।
advertisement
এর পর অনেক বছর পেরিয়ে যায়, প্রথমে স্থানীয়রা এবং পরে ব্রিটিশরা গৌড়ের ধ্বংসাবশেষে বহু বার ভাঙচুর করে। ধ্বংসাবশেষ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠ করে তারা চলে যায়। গৌড়ের হিন্দু সভ্যতার প্রায় কিছুই এখন অবশিষ্ট নেই। পর্যটকরা আজ যে সমস্ত ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন করে সেগুলির বেশিরভাগই পরের সাম্রাজ্যকালের বা ইসলামিক আমলের। এখনও সে সব ধ্বংসাবশেষ দেখলে তাদের স্থাপত্যকলার নিদর্শন কিছুটা হলেও পাওয়া যায়।
view commentsLocation :
First Published :
September 05, 2022 11:21 AM IST