বেঙ্গালুরু : জীবন যেন থমকে গিয়েছে দিয়ার বাবা মায়ের কাছে৷ গত মাসে তাঁরা জানতে পেরেছেন তাঁদের ১০ মাস বয়সি সন্তান আক্রান্ত জটিল ‘স্পাইনাল মাসক্যুলার অ্যাট্রোফি টাইপ টু’ রোগে (Spinal Muscular Atrophy or SMA )৷ জিনগত বিরল এই অসুখ থেকে সেরে উঠতে প্রয়োজন ১৬ কোটি টাকার ওষুধ৷ এই পরিস্থিতিতে অথৈ জলে পড়েছেন দিয়ার বাবা বাবা-মা, বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা নন্দগোপাল এবং ভাবনা৷ জানিয়েছেন, ‘‘দিয়ার সেরে ওঠার এবং তুলামূলকভাবে জীবনের স্বাভাবিক পথে ফেরবার ওষুধ হল ‘জোলজেন্সমা’৷ নোভার্টিস সংস্থার তৈরি এই ওষুধের দাম ১৬ কোটি টাকা৷ এই অসুখের জিনথেরাপি আমাদের সম্পূর্ণ সাধ্যাতীত৷ তাই আমরা সাহায্যের আবেদন রাখছি৷ আপনাদের সকলের সাহায্য এবং আমাদের সর্বস্ব দিয়ে ছোট্ট দিয়ার জন্য ইঞ্জেকশনটা কিনতে পারব৷ সময়মতো এসএমএ-এর চিকিৎসা করানো না হলে পেশির দ্রুত অবনতি ঘটে৷ এই অসুখের একমাত্র চিকিৎসা হল এই ইঞ্জেকশন৷ যত তাড়াতাড়ি দিয়া জোলজেন্সমা পাবে, তত তাড়াতাড়ি অসুখের ছড়িয়ে পড়া আটকানো সম্ভব হবে৷’’
দিয়ার জন্য আবেদন করে ‘ইমপ্যাক্ট গুরু’-তে ক্রাউডফান্ডিং (Crowdfunding) শুরু হয়েছে৷ ছোট্ট দিয়াকে সুস্থ করে তোলার পথে শরিক হতে পারেন আপনিও৷ ক্রাউডফান্ডিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লিঙ্ক হল https://www.impactguru.com/fundraiser/help-diya-nandagopal. আপনার সামান্যতম সাহায্যবিন্দুও সাহায্য করবে সিন্ধু গড়তে৷
বিশ্বের মহার্ঘ্যতম ড্রাগ হল জোলজেন্সমা৷ তবুও দিয়ার বাবা মায়ের আশা, ক্রাউডফান্ডিং-এর ফলে তাঁরা ওই অর্থ যোগাড় করতে পারবেন৷ প্রসঙ্গত হায়দরাবাদের তিন বছরের শিশু অয়নাংশ গুপ্তাও এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল৷ ক্রাউডফান্ডিংয়ে ৬৫ হাজার দাতা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন৷ কেরলের বাসিন্দা মহম্মদও এই অসুখ থেকে সুস্থ হয়েছেন ক্রাউডফান্ডিংয়ের সাহায্যেই৷
আরও পড়ুন : চল্লিশেও মা হওয়া সম্ভব! বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কিত একাধিক ভ্রান্ত ধারণা সরিয়ে রেখে জেনে নিন উপায়...
ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর রেয়ার ডিসঅর্ডার জানিয়েছে, স্পাইনাল মাসক্যুলার অ্যাট্রোপি বা এসএমএ হল জিনগত অসুখ৷ এই রোগে স্পাইনাল কর্ডে স্নায়ুকোষ মোটর নিউরোনস থাকে না৷ এর ফলে পেশি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে৷ বিশেষ করে ঘাড়, পশ্চাদ্দেশ এবং পিঠের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ শিশুর ক্ষেত্রে এই পেশিগুলি হামাগুড়ি দেওয়া, হাঁটা, বসা এবং মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর৷ অসুখ যত বেশি ছড়ায় তত বেশি খাওয়া, চিবনো, শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো কাজও দুরূহ হয়ে পড়ে৷
আরও পড়ুন : অতিরিক্ত প্রোটিনই কি প্রস্টেট ক্যানসারের যম? আপনার রোজের মেনুতে এই সব খাবার নেই তো?
বর্তমানে এই অসুখের চিকিৎসায় চারটি ড্রাগ বা ওষুধ অনুমোদন করেছে দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অথবা এফডিএ৷ এই চারটি ওষুধের মধ্যে অন্যতম জোলজেনস্মা৷ এককালীন এই জিনথেরাপি এসএমএ আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে উপশমকারী৷ তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনে ফিরিয়েও আনে৷
ভারতের রোগীদের ক্ষেত্রে ইমপোর্ট ডিউটি এবং জিএসটি মিলিয়ে জীবনদায়ী জোলজেন্সমা-র দাম পড়ে প্রায় ২২ কোটি টাকা৷ তবে কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এই ওষুধের উপর থেকে কর মকুব করে৷ কিন্তু একাধিকবার দাবি উঠেছে, প্রাণদায়ী মূল্যবান এই ওষুধের উপর থেকে সর্বতোভাবে কর মকুব করার৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।