শিশুদের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপনে পিছিয়ে পূর্ব ভারত! সেখানেই পথ দেখিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলছে কলকাতার হাসপাতাল

Last Updated:

হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জনদের দক্ষ টিম, দুর্দান্ত নার্সিং কেয়ার এবং অত্যন্ত উন্নত মানের মেডিক্যাল পরিকাঠামো - এ-সবের মাধ্যমেই খুদে রোগীরা নিজেদের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আর এগুলোই রোগী এবং তার পরিবারকে আশার আলো দেখাচ্ছে।

শিশুদের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপনে পিছিয়ে পূর্ব ভারত! সেখানেই পথ দেখিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলছে কলকাতার হাসপাতাল
শিশুদের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপনে পিছিয়ে পূর্ব ভারত! সেখানেই পথ দেখিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলছে কলকাতার হাসপাতাল
কলকাতা: সফল কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে পুনর্জন্ম হয়েছে ওদের। এমনকী স্বাভাবিক জীবনযাপনেও ফিরে গিয়েছে ওরা। আর এটা সম্পূর্ণ ভাবে সম্ভব হয়েছে ক্যালকাটা মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিএমআরআই-এর জন্যই। নিজেদের জীবন নতুন ভাবে শুরু করার  অভিজ্ঞতার সেই গল্পই সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবে রোগের সঙ্গে লড়াই করা খুদে যোদ্ধারা।
কলকাতার অন্যতম বড় এবং সেরা মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হল সিএমআরআই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জনদের দক্ষ টিম, দুর্দান্ত নার্সিং কেয়ার এবং অত্যন্ত উন্নত মানের মেডিক্যাল পরিকাঠামো - এ-সবের মাধ্যমেই খুদে রোগীরা নিজেদের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আর এগুলোই রোগী এবং তার পরিবারকে আশার আলো দেখাচ্ছে। আর এই খুদে রোগীদের নিয়েই একটি অনুষ্ঠান উদযাপন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
advertisement
সিএমআরআই-এর রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট টিমে রয়েছেন রেনাল সায়েন্স বিভাগের হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট ডা. প্রদীপ চক্রবর্তী, কনসালট্যান্ট পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট ডা. রাজীব সিনহা। তাঁরাও জটিল প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিজেদের মতামত ভাগ করে নিয়েছেন। আর পেডিয়াট্রিক প্রতিস্থাপনের গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ বা আইসিএইচ-এর পেডিয়াট্রিক মেডিসিন-এর হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট ডা. প্রফেসর জয়দীপ রায়, রিজিওনাস অর্গ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশন বা আরওটিটিও-এর ডিরেক্টর ও এসএসকেএম-এর চিফ নেফ্রোলজিস্ট ডা. অর্পিতা রায়চৌধুরী এবং সিএমআরআই-এর পেডিয়াট্রিশিয়ান ও পশ্চিমবঙ্গ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ডা. সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
advertisement
advertisement
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে যে, গোটা দেশে তৃতীয় স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবার সীমিত ব্যবহার, সীমিত সংখ্যক প্রশিক্ষিত পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট, পেডিয়াট্রিক ডায়ালিসিসের জন্য ট্রান্সপ্ল্যান্ট ফিজিশিয়ানের অভাব, মৃত দাতাদের প্রোগ্রাম সংক্রান্ত ঘাটতি-সহ পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের নানা রকম চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে এবং সমস্ত বাধাও অতিক্রম করতে ধীরে ধীরে সক্ষম হওয়ার অবস্থা এসেছে। তবে এখনও আরও পথ যেতে হবে।
advertisement
এই অনুষ্ঠানে ডা. প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের এখানে রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগ থাকায় আমরা সত্যিই গর্বিত। আর পূর্ব ভারতে শুধুমাত্র আমাদের এখানেই রয়েছে পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের সুবিধা। আর তার জন্য রয়েছে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি বড়সড় টিম। আইসিএইচ-এর সঙ্গে আমাদের কোলাবোরেশন আরও মজবুত করার জন্য আমরা এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চাইছি। আর আমরা এখানে পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রোগ্রাম চালাতে পারছি। আর ছোট ছোট শিশুদেরকে উন্নত মানের জীবন দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত হই। আসলে আমি মনে করি যে, শিশুরাই দেশে দুর্দান্ত বদল আনতে পারে। তাই তাদের যত্নের উপরেই জোর দিয়ে তাদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আমি এক্ষেত্রে দাতা, শিশুদের পরিবার-পরিজনদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
advertisement
ডা. রাজীব সিনহা জানাচ্ছেন যে, “এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হল - কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা। যে-সব শিশু রেনাল ফেলিওরের একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছেন, তারা সিএমআরআই-এর অ্যাডভান্সড পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের থেকে উপকৃত হতে পারবে। গোটা বিশ্বে প্রতি বছর ১৩০০-রও বেশি পেডিয়াট্রিক কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়ে থাকে। কিন্তু ভারতে বিশেষ করে পূর্ব ভারতে এই সংক্রান্ত সচেতনতার বড়ই অভাব রয়েছে। আমরা আমাদের পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তুলতে চাইছি। এখনও পর্যন্ত সিএমআরআই-তে বেশ কিছু সফল কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। আর ভবিষ্যতেও তা চালিয়ে যাওয়া হবে।”
advertisement
এই হাসপাতালেই চিকিৎসা হয়েছে ওয়াহিসা খান নামে বছর বারোর এক রোগিণীর। ক্রনিক কিডনি ফেলিওরের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছিল সে। তার সঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্ট এবং কার্ডিয়াক ডিসফাংশনও। সমস্যা এতটাই গভীর ছিল যে, তার কার্ডিয়াক প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। যদিও পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যকর হয় না। সিএমআরআই-এর ডাক্তাররা একটা ডায়ালিসিস প্রোগ্রাম চালু করে দেন। আর তার ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে কার্ডিয়াক অবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি দেখা যায়। আর এক বছরের মধ্যে ওয়াহিসাও ডায়ালিসিসের চিকিৎসায় ভাল ভাবেই সাড়া দিচ্ছিল। ফলে তার ক্ষেত্রে আর কার্ডিয়াক প্রতিস্থাপনের কোনও প্রয়োজন ছিল না। পরে দেখা যায়, কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য সে সুস্থই রয়েছে। কিন্তু কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট টিম একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। আর সেটা হল - একটি নতুন কিডনিতে সঠিক ভাবে রক্ত সঞ্চালন। আসলে এক্ষেত্রে হার্টে সঠিক অবস্থায় থাকা উচিত, যাতে তা সঠিক পরিমাণ রক্ত কিডনিতে পাম্প করতে পারে। সমস্ত কার্ডিওলজিস্ট এবং নেফ্রোলজিস্টরা আলোচনা করে গোটা টিম কিডনি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্তই গ্রহণ করে। আর যেটা পরে সেরা সিদ্ধান্ত হিসেবেই প্রমাণিত হয়। আর তার পরে সুস্থ ভাবে রোগী বাড়ি ফিরে গিয়েছিল এবং তার মধ্যে অস্ত্রোপচার পরবর্তী কোনও হেঁচকির সমস্যাও দেখা যায়নি।
advertisement
১০ বছর বয়সী আলিয়ার শরীরেও নানা সমস্যা ছিল। সে এমন একটি রোগে আক্রান্ত হয়েছিল, যা জিনগত ভাবেই তার শরীরে উপস্থিত ছিল। আসলে ওই রোগের জেরে আলিয়ার শ্রবণশক্তিহীন হয়ে পড়েছিল এবং শেষ পর্যায়ের রেনাল সমস্যায় আক্রান্ত হয় সে। এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি দল আলিয়ার পেডিয়াট্রিক কিডনি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে-ক্ষেত্রে মেয়েকে কিডনি দান করেছিলেন আলিয়ার মা-ই। আর সেই প্রতিস্থাপন সফল হয় এবং বর্তমানে আলিয়া সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। অপারেশন পরবর্তী কোনও সমস্যাও দেখা যায়নি ওই শিশুর শরীরে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
শিশুদের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপনে পিছিয়ে পূর্ব ভারত! সেখানেই পথ দেখিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলছে কলকাতার হাসপাতাল
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement