অঙ্গ দানের মাধ্যমেই সুরক্ষিত এবং সুন্দর হোক ভবিষ্যৎ! সচেতনতা গড়ার অঙ্গীকার করল কলকাতার এক হাসপাতাল

Last Updated:

মরণোত্তর অঙ্গ দানের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছে। আর অঙ্গ দানের বিষয়ে মানুষকে আরও সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতাল।

অঙ্গ দানের মাধ্যমেই সুরক্ষিত এবং সুন্দর হোক ভবিষ্যৎ! সচেতনতা গড়ার অঙ্গীকার করল কলকাতার এক হাসপাতাল (Representative Image)
অঙ্গ দানের মাধ্যমেই সুরক্ষিত এবং সুন্দর হোক ভবিষ্যৎ! সচেতনতা গড়ার অঙ্গীকার করল কলকাতার এক হাসপাতাল (Representative Image)
কলকাতা: অঙ্গ দান হল জীবন দান! অর্থাৎ মরণোত্তর অঙ্গ দান (Organ Donation) অন্যতম একটি মহৎ কাজ। কিন্তু এই বিষয়ে তেমন সচেতনতা চোখে পড়ে না। বিশেষ করে দেশের পূর্ব দিকের রাজ্যগুলিতে, কারণ ভারতের অন্যান্য অংশের তুলনায় এই অংশেই অঙ্গ দান সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে সেই পরিসংখ্যান কিছুটা হলেও বদলেছে। আসলে মরণোত্তর অঙ্গ দানের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছে। আর অঙ্গ দানের বিষয়ে মানুষকে আরও সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে কলকাতার সিএমআরআই (CMRI) হাসপাতাল।
পরিসংখ্যানে এক বার চোখ বোলালে দেখা যাবে যে, জনবহুল ভারতে বহু মানুষই ক্রনিক রোগ কিংবা এন্ড-স্টেজ ক্রনিক রোগে আক্রান্ত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ৫ লক্ষ মানুষের মধ্যে অর্থাৎ প্রায় ১০ শতাংশ মানুষই এন্ড-স্টেজ ক্রনিক রোগে ভুগছে। আবার কিছু কিছু মানুষের শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্যই যে-সব অঙ্গের প্রয়োজন থাকে, তার ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র একটাই পথ খোলা রয়েছে। সেটা হল এগিয়ে এসে সচেতনতা তৈরি করা। এই সংক্রান্ত এক রিপোর্ট বলছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অভাবে প্রতি বছর ভারতে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়। আর এই সব প্রাণ বাঁচানোর জন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এক জন অঙ্গ দানকারী নিজের সঠিক ভাবে কাজ করা অঙ্গ দান করে প্রায় ৮ জন মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারেন। সফল ভাবে যে-সব অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কিডনি, লিভার, বোন ম্যারো, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, কর্নিয়া, অগ্ন্যাশয় এবং ত্বক।
advertisement
advertisement
সিএমআরআই-এর রেনাল সার্জন ডা. প্রদীপ চক্রবর্তী (Dr. Pradeep Chakrabarti)-র কথায়, “আমার প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত সার্জারির অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, কীভাবে একটা মানুষ আরও কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে শুধুমাত্র অঙ্গ দানের মাধ্যমেই। বহু বছর ধরে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে কাজ করেছি। আর সেখানে দেখেছি যে, আধুনিকতা এবং স্ট্রিমলাইনের মাধ্যমে অঙ্গ দানের পুরো প্রক্রিয়াটা সামলানো হয়। আর সেই ব্যবস্থাটাই আমাদের দেশেও গড়ে তুলতে হবে। সরকার, বেসরকারি হেলথকেয়ার সেক্টর এবং কমিউনিটির সাহায্য নিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটাকেই স্ট্রিমলাইন করতে হবে।”
advertisement
তিনি আরও বলেন, “মৃত্যুর পরেও কীভাবে আমাদের দেহের অঙ্গ অন্য আরও প্রাণ বাঁচাতে পারে, সেই বিষয়ে অবগত হতে হবে। আসলে একটা মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর অঙ্গগুলি আরও কয়েক জনকে নতুন জীবন দান করতে পারে। যে-সব শিশু এন্ড-স্টেজ রেনাল রোগ কিংবা হৃদযন্ত্রের রোগ নিয়ে জন্মায়, তারা শুধুমাত্র অঙ্গের অভাবেই মারা যায়। ফলে অঙ্গ দান করলেই তাদের প্রাণ বেঁচে যেতে পারে।”
advertisement
তাই কেউ যদি মরণোত্তর অঙ্গদান করতে চান, তা-হলে তাঁকে NOTTO নামে এক জাতীয় প্রতিষ্ঠানে নিজের নাম রেজিস্টার করাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, পশ্চিমবঙ্গেও এই সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার নাম ROTTO। এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের তালিকায় কে আগে থাকবেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আবেদনের উপর। যিনি প্রথমে আবেদন করবেন, তিনি এই সুবিধা সবার আগে পাবেন। এ-ছাড়াও অঙ্গ বরাদ্দ করার ক্ষেত্রেও কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন - সংশ্লিষ্ট অঙ্গ পাওয়া যাচ্ছে কি না, সেটা অত্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করবে। আবার সময়, রক্তের গ্রুপ, শারীরিক অবস্থা এবং জনসংখ্যারও একটা ভূমিকা থাকে।
advertisement
সিএমআরআই-এর নেফ্রোলজিস্ট এবং ট্রান্সপ্ল্যান্ট ফিজিশিয়ান ডা. অভিনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Dr. Abhinandan Banerjee) ব্যাখ্যা, “রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে, যাঁদের এন্ড-স্টেজ রেনাল রোগ রয়েছে, তাঁদের জন্য কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট জরুরি। আর এই কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে আমাদের হাতে দুটি বিকল্প রয়েছে - লিভিং ডোনার ট্রান্সপ্ল্যান্ট এবং ডিসিসড ডোনার ট্রান্সপ্ল্যান্ট। বর্তমানে প্রযুক্তি এগিয়ে গিয়েছে। ফলে ব্লাডগ্রুপ মিসম্যাচ ট্রান্সপ্ল্যান্ট অথবা এবিও-ইনকম্প্যাটিবল ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে আমাদের হাতেও তাই এগিয়ে যাওয়ার সেই দক্ষতা রয়েছে। আসলে মানুষ যাতে ভাল ভাবে আরও বহু দিন বেঁচে থাকতে পারে, সেই ব্যবস্থা বা প্রযুক্তি আমাদের হাতে এখন এসে গিয়েছে।”
advertisement
পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট এবং ট্রান্সপ্ল্যান্ট ফিজিশিয়ান ডা. রাজীব সিনহা (Dr. Rajeev Sinha)-র বক্তব্য, “শিশুদের ক্ষেত্রেও এন্ড-স্টেজ অর্গ্যান ডিজিজ কিন্তু সমাজের অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জেনেটিক রোগের কারণে শিশুদের কিডনি বিকল হয়ে যায়। যার জেরে শিশু তো শারীরিক কষ্ট পায়ই, সেই সঙ্গে তার মা-বাবাও মানসিক এবং আর্থিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। ফলে এ-ক্ষেত্রে অঙ্গ দান হল এই ধরনের রোগীদের জন্য সব থেকে ভাল চিকিৎসা। এর জন্য সিএমআরআই-তে রয়েছে আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। যার মধ্যে রয়েছেন পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভিস্ট, পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জনও। তাই গোটা সমাজের আছে একটা আর্জি যে, অঙ্গ দানের অঙ্গীকার করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নতুন জীবন দান করা যায়।”
view comments
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
অঙ্গ দানের মাধ্যমেই সুরক্ষিত এবং সুন্দর হোক ভবিষ্যৎ! সচেতনতা গড়ার অঙ্গীকার করল কলকাতার এক হাসপাতাল
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন থাকবে?
উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন?
  • উত্তরে আজ বৃষ্টির পূর্বাভাস

  • দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে

  • রইল আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement