আগামিকাল রথযাত্রা, জানুন জগন্নাথদেবের রথের রশি ছুঁলে কী ফল পাওয়া যায়?
Last Updated:
#কলকাতা: রথের রশিতে টান দিলেই হবে পূণ্যলাভ। এই বিশ্বাস চিরকালীন। চিরশাশ্বত সেই বিশ্বাস থেকেই পুরী থেকে কলকাতার ইস্কন, মাহেশ থেকে মহিষাদল- উন্মাদনা তুঙ্গে। দেশ জুড়ে শুরু রথযাত্রার উৎসবের ধূম। আগামিকাল শনিবার জগন্নাথদেব নিজ ধাম থেকে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে মাসির বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন ৷ ইতিমধ্যেই গোটা দেশ জুড়ে রথযাত্রার জন্য তোড়জোর শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ আর জগন্নাথ, বলভদ্র এবং দেবী সুভদ্রা রথের রশি টানার জন্য ভক্তদের মধ্যে উন্মাদনা চরমে ৷ প্রতি বছরই এই উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায় ৷
জগন্নাথদেবের রথের রশি একটিবার স্পর্শ করার জন্য আকুল হয়ে পড়েন ভক্তরা। পুরী, মাহেশ, কি কলকাতায় ইসকনের রথ -সর্বত্রই রথের রশি ছুঁয়ে দেখার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আসলে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জগন্নাথদেবের রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্মের কষ্ট সহ্য করতে হয় না।
কথিত আছে, এক সময় পুরীর রথযাত্রায় জগন্নাথদেবের রশি ছুঁয়ে সেই রথের চাকার তলায় আত্মঘাতী হত কোনও এক ভক্ত। কিন্তু কেন এই অদ্ভুত মৃত্যুবরণ? মানুষের বিশ্বাস শ্রীপুরুষোওমের চাকার নীচে প্রাণ বিসর্জন দিতে পারলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গারোহণ নিশ্চিত করা যায়।
advertisement
advertisement
শ্রীচৈতন্যদেবের অন্যতম প্রিয় শিষ্য সনাতন গোস্বামী অসুস্হতার কারণে একবার রথযাত্রার দিন জগন্নাথদেবের চলন্ত চাকার তলে প্রাণ বিসর্জন দিতে চেয়েছিলেন। তখন মহাপ্রভুই তাঁকে বলেন ,‘‘সনাতন !! এ রকম দেহত্যাগে যদি কৃষ্ণকে পাওয়া যেত তাহলে এক মূহুর্তের মধ্যে আমিও আমার লক্ষ জন্ম তাঁর শ্রীচরণে সমর্পন করতাম। কিন্তু দেহত্যাগে কৃষ্ণকে পাওয়া যায় না। এরকম দেহত্যাগ হচ্ছে তমোগুণ। তমোগুণে কৃষ্ণকে পাওয়া যাবে না। ভক্তি ছাড়া, ভজন ছাড়া তাঁকে পাওয়ার উপায় নেই।’’
advertisement
ইন্দ্রনীলময় পুরাণের মতে , জগন্নাথের রথের রশি সামান্য স্পর্শ করলেও পুনর্জন্ম হয় না। "পুনর্জন্ম ন ভূঞতে"' !! শ্রীজগন্নাথের বামন অবতার রথে। সেই রথ দর্শন করার পর একটু টানতে পারলেই পুনর্জন্মের কষ্ট ভোগ করতে হয় না।
সূতসংহিতায় রয়েছেঃ- রথে তু বামনাং দৃষ্টা,পুনর্জন্ম ন বিদতে।অতএব ধার্মিক হিন্দু বিশ্বাস করেন যে, রথের রশি ছোঁয়ার থেকে বড় পূণ্য আর কিছুতে হয় না।
advertisement
রথযাত্রার এই মহাযাত্রা নিয়ে কপিল সংহিতায় আছেঃ- গুন্ডিচাখ্যং মহাযাত্রা যে পশ্যন্তি মুদনিতাঃ/ সর্বপাপ বিনির্মুক্তা তে যান্তি ভুবন মম।
অর্থাৎ ,,জগন্নাথদেব বলছেন ,, গুন্ডিচা মহাযাত্রায় যে ব্যক্তি আমাকে দর্শন করবে সে কালক্রমে সব পাপ থেকে মোক্ত হয়ে আমার ভুবনে যাবে।
রথের রশি ছুঁয়ে রথ টানা শুধু নয়,বেশির ভাগ মানুষ রথের রশি যতটুকু পারে ছিঁড়েও নেন। টুকরো টুকরো রথের রশির সুতো মাদুলি ক'রে ছোট ছেলে-মেয়েদের হাতে ও গলায় পরিয়ে দেন। বড়রাও পরেন। মানুষের বিশ্বাস এই মাদুলি সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবে। অসুখ- বিসুখ হলেও তাড়তাড়ি সুস্হ হয়ে ওঠা যাবে। অনেকেই রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেন। ঘুমের ঘোরে চেঁচিয়ে ওঠে। এ রকম কারও মাথায় রশির টুকরো অংশ ছুঁইয়ে দিলে কিংবা তার বালিশের নীচে রেখে ঘুমোলে দুঃস্বপ্ন আসে না। স্কন্দপুরাণ,বামদেব সংহিতার প্রসঙ্গ টেনে বলা যায় যে,জগন্নাথদেবের রথের দড়ি ধরে টানতে পারলে অশ্বমেধ যঞ্জের ফল লাভ হয়। রথ বা উল্টোরথে দেখা যায় ছোট-ছেলেমেয়েরা খেলনা রথ টানলে, পথচলতি বয়স্ক লোকেরাও সেই রথের রশি একবার ছোঁন। আসলে মানুষের বিশ্বাসটাই বড় কথা।
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইলের (Lifestyle News in Bengali)সব খবরের আপডেট পান নিউজ 18 বাংলাতে ৷ যেখানে থাকছে হেলথ টিপস, বিউটি টিপস এবং ফ্যাশন টিপসও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইনগুলি অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ সব খবরের আপডেট পেতে ! News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
July 13, 2018 1:21 PM IST