তীজ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত তৃতীয়া থেকে। তৃতীয়া তিথিতে উদযাপিত হয় যে উৎসব, তাকেই বলা হয় তীজ। মনোমত স্বামীলাভের জন্য অবিবাহিতারা যেমন এই ব্রত পালন করে থাকেন, তেমনই আবার বিবাহিতারাও এই ব্রত পালন করেন স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং সার্বিক মঙ্গলকামনায়। বছরে বেশ কয়েকবার এই ব্রত পালন করা হয়ে থাকে, তার মধ্যে শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের তীজ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসাবে এই দিনে বিবাহিতারা ষোলটি শৃঙ্গারের সাজধারণ করেন, সেই কথা মাথায় রেখে একে শৃঙ্গার তীজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
বাদলধারা যেহেতু পরিবেশে শ্যামলিমা সঞ্চার করে, সেই অনুষঙ্গে উৎসবটি পেয়েছে হরিয়ালি তীজ নাম! বলা হয়, এই হরিয়ালি তীজ তিথিতেই সালঙ্কারা পার্বতীকে বধূরূপে স্বাগত জানিয়েছিলেন ভগবান শিব, সার্থক হয়েছিল তাঁর দেবাদিদেবকে পতিরূপে লাভ করার তপস্যা। এই কারণেই বিবাহিতা এবং অবিবাহিতা রমণীরা হরিয়ালি তীজ ব্রত পালন করেন। সালঙ্কারা দেবীর মতো সৌভাগ্যলাভের বাসনায় বিবাহিতারা ষোল শৃঙ্গারে সাজিয়ে তোলেন নিজেদের। এই ষোল শৃঙ্গারের মধ্যে বর্ষাজাত শ্যামলিমার অনুষঙ্গে হাতে এবং পায়ে মেহন্দির সাজধারণ অবশ্য পালনীয়। বলা হয়, যে নারীর স্বামীসৌভাগ্য যত বেশি, তাঁর মেহন্দির রঙও তত গাঢ় হয়ে ধরা দেয় হরিয়ালি তীজের তিথিতে। তবে সবার ক্ষেত্রে যে মেহন্দির রঙ গাঢ় হবেই, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই! তা বলে মনখারাপ করারও কারণ নেই, দেখে নেওয়া যাক কোন সহজ উপায়ে ভালোবাসার মতোই গাঢ় করে তোলা যায় তীজের সাজের মেহন্দি! মেহন্দির রঙ ঘন করতে মেহন্দি শুকিয়ে গেলে, হাতে লবঙ্গ ঘষতে হবে। চাটু বা তাওয়ায় দশ-পনেরোটি লবঙ্গ রেখে গ্যাস চালু করতে হবে। যখন লবঙ্গ থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করবে, তখন সেই ধোঁয়ায় হাত সেঁকে নিতে হবে। খুব কম সময়েই এই ভাবে মেহন্দির রঙ ঘন হয়ে যাবে। মেহন্দির রঙ গাঢ় করার জন্য ব্যথানাশক বাম বা মলমের সাহায্যও নেওয়া যায়। মেহন্দি শুকিয়ে যাওয়ার পরে হাত একসঙ্গে ঘষতে হবে। যখন মেহন্দি শুকনো থাকে, তখন হাতে বাম বা মলম লাগানো যায়। মেহন্দির রঙ কিছুক্ষণের মধ্যে গাঢ় হয়ে যাবে। মেহন্দি যখন পুরোপুরি শুকিয়ে যায়, তখন হাতে সর্ষের তেল ঘষতে হবে। কয়েক ঘণ্টা রেখে দিলেই তার পর মেহন্দির রং গাঢ় হয়ে যাবে। তবে তেল লাগানোর পরে কয়েক ঘন্টা জল ব্যবহার করা যাবে না। মেহন্দির রং গাঢ় করতে আচারের তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে। মেহন্দি লাগানোর পর, যখন এটি পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে, তখন আচারের বয়াম থেকে এক চামচ তেল নিয়ে দুই হাতে ভাল করে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ পরেই মেহন্দির রঙ ঘন হয়ে যাবে। চাইলে পায়ের মেহন্দির রঙ ঘন করতেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
Published by:Arpita Roy Chowdhury
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।