#WorlsSleepDay: শুধু অনাহার নয়, অনিদ্রাও ডেকে আনতে পারে মৃত্যু

photo: Representational Image

photo: Representational Image

ঘুমের অভাবে প্রতিদিনই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা...

  • Last Updated :
  • Share this:

    আজ সকালেও প্রতিদিনের মতোই অফিসে এসেছিল দিগন্ত৷ লাঞ্চের সময় চলছিল রোজকার মতো হাসিঠাট্টাও৷ কয়েক মিনিট পরেই সব শেষ৷ হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই 'শরীর' হয়ে গেল ৪৫ বছরের তরতাজা প্রাণ৷ মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এল 'সাডেন হার্ট অ্যাটাক', 'হাই ব্লাড প্রেশার', 'ফ্যাটি লিভার'-এর মতো গালভরা সব ডাক্তারি পরিভাষা...কেউ জানতেও পারল না প্রকৃত কারণ৷

    ৪৫ বছরে জীবনটা শেষ হয়ে গেল৷ কিন্তু তার আগেও কি বেঁচে ছিল দিগন্ত? উত্তরটা দিয়েছিলেন দিগন্তর স্ত্রী মধুরিমা৷ রোজ ১১ ঘণ্টা অফিস, বাড়ি ফিরেও অফিসের চাপ, উইকএন্ডে লেট নাইট পার্টি, কাজের চাপে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, যখন তখন অফিস ট্যুরের কারণে দীর্ঘস্থায়ী জেট ল্যাগ...নেট রেজাল্ট দিনে ঘুমের সময় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা৷ যেই ছেলেটা কলেজ লাইফে রাত ১০টায় ঘুমিয়ে পড়ত, ফুটবল খেলতে গিয়ে দেখা করতে আসতে ভুলে যেত বলে অভিমানে কতবার ঠোঁট ফুলিয়েছিল মধুরিমা, গত ৬ বছরে এটাই দাঁড়িয়েছিল তার রোজকার রুটিন! ঘুম, বিশ্রামের অভাব, শরীরচর্চা না করা, অতিরিক্ত চাপেই শরীরে একের পর এক দানা বেঁধেছিল গুরুতর সব মারণ রোগ৷ পরিণতি...

    deprivation

    আমাদের চারপাশে প্রতিদিনই এমন ভাবেই ঘুমের অভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দিগন্তরা৷ পোশাকি ভাষায় কায়দা করে 'লাইফস্টাইল ডিজিজ' বলতে বেশ লাগলেও এর ভয়াবহতা বুঝতে পারছি না আমরা- জানাচ্ছেন মনোবিদ ইন্দ্রাণী ব্যানার্জি সারঙ্গি৷"খাবার কিন্তু শরীরের একমাত্র খাদ্য নয়৷ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য খাবারের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ ঘুম৷ আমাদের শরীর একটা যন্ত্র৷ আর আমরা যখন ঘুমোই তখন সেই যন্ত্রের সার্ভিসিং হয়৷ তাই দীর্ঘদিন ধরে শরীর যদি ঘুমের অভাবে ভোগে বা 'স্লিপ ডিপ্রাইভেশন' হয়, তাহলে বাড়তে থাকে স্ট্রেস, উৎকণ্ঠা, অবসাদ৷ যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোর ওপর৷ ধীরে ধীরে কমতে থাকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও৷ বাসা বাঁধে রোগ৷ যার পরিণতি আমরা সকলেই জানি৷"

    কিন্তু ঘুমোতে চাইলে কি ঘুমনো যায়? এই প্রজন্মের যে অন্যতম বড় সমস্যা ইনসমনিয়া! "কম ঘুম হলেই চিন্তার কিছু নেই৷ আমাদের প্রত্যেকের ঘুমের চাহিদা কিন্তু আলাদা৷ কারও ৬-৭ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন, কারও ৪-৫ ঘণ্টা ঘুমোলেই হয়ে যায়৷ তবে এই প্রজন্মের মধ্যে একটা রাত জাগার ট্রেন্ড দেখা যায়৷ যার একটা বড় কারণ মোবাইল অ্যাডিকশন৷ চেষ্টা করুন ১১টা থেকে ১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে৷ আর কিছুদিন ঘুমোতে সমস্যা হচ্ছে মানেই কিন্তু সেটাকে ইনসমনিয়া ভেবে নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কিছু নেই৷ কয়েকদিন ভাল করে স্নান করুন, তেলমশলা ছাড়া হালকা খাবার খান, স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিন, ঠিক ঘুম আসবে, "-বিশ্ব ঘুম দিবসে এভাবেই পুরো বিষয়টা সহজ করে বুঝিয়ে দিলেন ইন্দ্রাণী৷

    First published:

    Tags: Healthy Living, Insomnia, Sleep, World Sleep day