এ যেন এক নীরব ঘাতক! কিডনির স্বাস্থ্যের উপর ইউরিক অ্যাসিড কীভাবে প্রভাব ফেলছে, জানেন কি? শুনে নিন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে

Last Updated:

How Uric Acid Impacts Kidney Health: সাম্প্রতিক গবেষণায় আবার দেখা গিয়েছে যে, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি বা হাইপারইউরিসেমিয়া থেকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হল - কিডনিতে পাথর, ক্রনিক কিডনি ডিজিস বা সিকেডি এবং কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া।

কিডনির স্বাস্থ্যের উপর ইউরিক অ্যাসিড কীভাবে প্রভাব ফেলছে
কিডনির স্বাস্থ্যের উপর ইউরিক অ্যাসিড কীভাবে প্রভাব ফেলছে
কলকাতা: আমরা সাধারণত যেসব খাবার কিংবা পানীয় সেবন করি, তাতে থাকা পিউরিন ভেঙে যে প্রাকৃতিক বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয়, সেটাকেই ইউরিক অ্যাসিড বলা হয়। আর বর্তমানে এটাই কিডনির স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ক্রিটিক্যাল ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় আবার দেখা গিয়েছে যে, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি বা হাইপারইউরিসেমিয়া থেকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হল – কিডনিতে পাথর, ক্রনিক কিডনি ডিজিস বা সিকেডি এবং কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। এদিকে সারা বিশ্ব জুড়ে কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চাইছেন। সেই সঙ্গে রেনাল কার্যকারিতা রক্ষা করার জন্য ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করারও পরামর্শ দিচ্ছেন।
সাধারণত গাউটের সঙ্গে এর যোগ রয়েছে। আর ইউরিক অ্যাসিড মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে কিডনির কার্যকারিতার উপর এর প্রভাব সংক্রান্ত বিষয়ে বর্তমানে গবেষণা করা হচ্ছে। এএম মেডিক্যাল সেন্টারের রিউম্যাটোলজিস্ট ডা. সুশোভন মণ্ডলের ব্যাখ্যা, ‘‘অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল তৈরি করতে পারে। যার জেরে কিডনিতে পাথর হতে পারে। এমনকী প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং এন্ডোথেলিয়াল ডিসফাংশনের মাধ্যমে ক্রনিক কিডনির রোগ পর্যন্ত হতে পারে।’’ তিনি আরও জানান যে, ‘‘এটি কিডনির অটোরেগুলেশনকেও ব্যাহত করতে পারে, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারে এবং কিডনির ক্ষতি পর্যন্ত করে দিতে পারে। আবার গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, হাইপারইউরিসেমিয়া কিডনির কার্যকারিতা ধ্বংস করে দিতে পারে। ওষুধ এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমানো গেলে কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব। বিশেষ করে যেসব রোগীর সিকেডি, হাইপারটেনশন অথবা মেটাবলিক সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে তো বটেই!’’
advertisement
advertisement
Dr. Sushobhan Mondal, Rheumatologist from A M Medical Centre
Dr. Sushobhan Mondal, Rheumatologist from A M Medical Centre
এদিকে মেটাবলিক সিনড্রোমের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফলে প্রক্রিয়াজাত বা প্রসেসড এবং চিনিযুক্ত মিষ্টি খাবারের প্রতি মানুষের আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে হাইপারইউরিসেমিয়া এখন সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। এএম মেডিক্যাল সেন্টারের নেফ্রোলজিস্ট ডা. উত্তয়ন চক্রবর্তী বলেন, “রক্তে যদি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হয় (হাইপারইউরিসেমিয়া), তাহলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। শুধু তা-ই নয়, সেই সঙ্গে হাইপারটেনশন এবং কার্ডিওভাস্কুলার রোগের জটিলতা বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে।” তিনি আরও বলেন যে, “মেটাবলিক সিন্ড্রোমের বোঝা বৃদ্ধি এবং যথেচ্ছ ভাবে জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড, কার্বোনেটেড ও মিষ্টি পানীয় সেবন করার ফলে হাইপারইউরিসেমিয়াও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার জেরে কিডনি এবং কার্ডিওভাস্কুলার রোগের বোঝাও বাড়ছে।”
advertisement
Dr. Uttayan Chakraborti, Neprologist from A M Medical Centre
Dr. Uttayan Chakraborti, Neprologist from A M Medical Centre
এখানেই শেষ নয়, হাইপারইউরিসেমিয়ার উপসর্গগুলি শনাক্ত করার উপরেও জোর দিয়েছেন ডা. চক্রবর্তী। তিনি বলেন যে, “গাউটি আর্থ্রাইটিস হল হাইপারইউরিসেমিয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। যেখানে সাধারণত রোগীর পায়ের বুড়ো আঙুল ফুলে লাল হয়ে যায়। এমন উপসর্গ দেখলে তা অবহেলা করা চলবে না। বরং সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আবার গাউটের আক্রমণের সময় ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকও থাকতে পারে। তাই একটামাত্র পরীক্ষা করালেই হাইপারইউরিসেমিয়ার আশঙ্কা দূর করা সম্ভব নয়। সময়ে সময়ে এর মাত্রা পরীক্ষা করা আবশ্যক।”
advertisement
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কিডনির রোগের জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সাধারণত জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার এবং চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডা. চক্রবর্তীর মতে, হাইপারইউরিসেমিয়া প্রতিরোধ করার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত যেতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এবং ওবেসিটির সমস্যায় জেরবার, তাঁদের ক্ষেত্রে তো বটেই! ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার সেরা উপায় হল – পর্যাপ্ত হাইড্রেশন বজায় রাখা, জাঙ্ক ফুড, মদ ও মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলা এবং ইউরিক অ্যাসিড লোয়ারিং থেরাপি মেনে চলা।
advertisement
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে এ-ও জানিয়েছেন যে, আগে রোগ ধরা পড়লে এবং চিকিৎসা হলে তা কিডনি সংক্রান্ত জটিলতার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দিতে পারে। যেসব রোগীর উচ্চমাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে, তাঁদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। এতে রোগের উপর খুঁটিয়ে নজর রাখতে হবে। আর এই অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সঠিক পরিকল্পনাও করতে হবে।
advertisement
কিডনির স্বাস্থ্যে ইউরিক অ্যাসিডের ভূমিকা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। তবে যেটুকু জানা গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, সর্বোপরি স্বাস্থ্যের ভালর জন্য ব্যালেন্সড মাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। যাঁদের এই রোগের বিষয়ে ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের কিডনির রোগের আশঙ্কা কমাতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এতে তাঁদের ভবিষ্যৎও সুস্থ আর সুন্দর হয়ে উঠবে।
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
এ যেন এক নীরব ঘাতক! কিডনির স্বাস্থ্যের উপর ইউরিক অ্যাসিড কীভাবে প্রভাব ফেলছে, জানেন কি? শুনে নিন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement