অভিভাবকের ওজন কমলে তবেই সন্তানের জীবন হবে সুস্থ, কী বলছেন কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

Last Updated:

যাঁরা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন, তাঁদের মধ্যে এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি যাঁদের BMI স্তর ২৫-এর বেশি।

Representative Image
Representative Image
কলকাতা: দৈনন্দিন জীবনচর্যার পরিবর্তন বড়সড় প্রভাব ফেলছে মানুষের জীবনে। স্থূলতাও (Obesity) তেমনই এক বিষয়, যা আসলে আমরা আমাদের জীবনে ডেকে এনেছি নিজেরাই। জাতীয় জনস্বাস্থ্যের এক ক্রমবর্ধমান সমস্যা হল এই স্থূলতা। যা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলেই মনে করেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা এ বিষয়ে প্রায় সকলেই একমত যে স্থূলতা একজন মানুষকে অসংখ্য স্বাস্থ্য জটিলতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। অনেক সময়ই পরিস্থিতি এমন দিকে বাঁক নিতে পারে যা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকে ঠেলেও দিতে পারে। অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা বর্তমানে ভারতে এক অতি সাধারণ সমস্যা হয়েছে দাঁড়িয়েছে, যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জীবনচর্চা জনিত সমস্যার কারণে তৈরি হওয়া এই জটিলতা যে কোনও মানুষেরই হতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে এই স্থূলতা বৃদ্ধির হার প্রায় সমান।
advertisement
সাধারণত, BMI বা ‘বডি মাস ইনডেক্স’ ব্যবহার করে স্থূলতা পরিমাপ করা হয়। এই হিসেব অনুসারে, ৩০-এর বেশি BMI যুক্ত মানুষকে স্থূল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ২৫ থেকে ২৯.৯-এর মধ্যে BMI থাকলে তা অতিরিক্ত ওজন হিসাবে গণ্য করা হয়।
advertisement
advertisement
চিকিৎসক মহলের দাবি, সাধারণ ওজনের একজন মহিলার তুলনায় ২৭-এর উপরে বডি মাস ইনডেক্স (BMI) থাকা মহিলাদের মধ্যে গর্ভধারণে অক্ষমতা (Infertility) দেখা যায় প্রায় তিনগুণ বেশি। কারণ অতিরিক্ত ওজনের কারণে তাঁদের ডিম্বস্ফোটন হয় না।
কলকাতার বিড়লা ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ (Birla Fertility & IVF Kolkata) সেন্টার দ্বারা করা একটি সাম্প্রতিক ভোক্তা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন, তাঁদের মধ্যে এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি যাঁদের BMI স্তর ২৫-এর বেশি। অপেক্ষাকৃত কম ওজনের দম্পতিদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যা কম বলেই দেখেছেন চিকিৎসকেরা।
advertisement
কলকাতার বিড়লা ফার্টিলিটি এবং আইভিএফ সেন্টার পরামর্শদাতা চিকিৎসক ডা. সৌরেন ভট্টাচার্য (Dr. Souren bhattacharjee) স্থূলতা এবং বন্ধ্যাত্বের মধ্যে যোগসূত্র সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘অতিরিক্ত ওজনের মহিলাদের মাসিকের সমস্যা থাকে এবং অ্যানোভুলেশনের ঘটনা বেশি ঘটে থাকে৷ অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূল মহিলারাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকি থাকতে পারে। এই মহিলাদের মধ্যে সাবফেকন্ডিটি এবং বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণের হার, গর্ভপাতের হার এবং গর্ভাবস্থায় জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনাও বেশি। মহিলারা, যখন স্থূল হন তখন লেপটিন নামক হরমোনের উচ্চ স্তর তৈরি হয়, যা টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা তৈরি হতে পারে। দেখা গিয়েছে, এই সমস্যাটি তাঁদের প্রজনন বয়সে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজন মহিলার ক্ষেত্রে দেখা যায়। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ওজনের পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়ার সমস্যা থাকে। এই সম্ভাবনা স্থূলকায় পুরুষের মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি থাকে। ৩৯ শতাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় শুক্রাণুহীনতার সমস্যা। অল্প বয়সেই সমস্যা ধরা পড়লে এবং সময় মতো চিকিৎসা করলে সমাধান সম্ভব। যদি কোনও দম্পতি সন্তান ধারণ করতে ইচ্ছুক হন, তা হলে শরীরের স্বাভাবিক চর্বি প্রায় ২২ থেকে ২৫ শতাংশ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
advertisement
ডা. সৌরেন ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের কাছে আসা রোগীদের গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে তাঁদের খাদ্য গ্রহণে ভারসাম্য রাখার দিকে মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করি। তবে এ বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। কম খেয়ে ফলাফলের দিকে নজর দিলে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। পরিবর্তে, একজনকে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর বেশ কিছু অভ্যাসের দিকে নজর রেখে চলতে হবে—
advertisement
• জটিল কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খেতে হবে। গোটা শস্য, মটরশুটি এবং শাকসবজিতে এই জটিল কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যেতে পারে।
• সারাদিনের শক্তির চাহিদা বজায় রাখতে বেশি করে প্রোটিন খাওয়া দরকার।
• খাদ্যের স্তর সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে।
• সম্পূর্ণ এবং প্রাকৃতিক খাবারের উপরই মনোযোগ দিতে হবে।
• কাঁচা চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা একান্ত প্রয়োজন।
advertisement
সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন ব্যায়াম করা দরকার। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে, যাতে হৃদস্পন্দন এবং নাড়ির স্পন্দন বৃদ্ধি পায়। তবে এ সব কিছু একা করলে হবে না। খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা হোক বা ব্যায়ামের ক্লাস- নিজের সঙ্গীকে নিয়েই যেতে হবে একসঙ্গে। তবেই আগামী সন্তান পাবে সুস্থ জীবন।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
অভিভাবকের ওজন কমলে তবেই সন্তানের জীবন হবে সুস্থ, কী বলছেন কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement