লকডাউনে অফিস হয়তো যেতে হয়নি, তবে বাড়ি থেকে কাজ তো করতে হয়েছে? সঙ্গে বাড়ির কাজ তো বটেই। একই সঙ্গে বাড়ির আর বাইরের কাজ সামলে কাহিল হয়ে পড়ছেন? ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ, স্ট্রেস, উদ্বেগ থেকে ক্লান্তি, অবসাদ আসতেই পারে। আবার ঘন ঘন ক্লান্ত হয়ে পড়া কিন্তু ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতিরও লক্ষণ।
কোন কোন উপসর্গ হলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হচ্ছে?
১) দিনের অধিকাংশ সময় আপনার ক্লান্ত লাগছে
২) হাঁটা-চলা করতেও দুর্বল লাগে আপনার
৩) দৃষ্টি কমে আসছে আপনার, দেখতে সমস্যা হচ্ছে
৪) ইনসমনিয়া বা ঘুমহীনতায় ভুগছেন আপনি
৫) ওজন বাড়ছে
৬) মাঝে-মধ্যেই মুখে ঘা হচ্ছে
৭) শ্বাসকষ্ট, হাঁপ ধরায় ভুগছেন
৮) ত্বকের রঙ পালটে যাচ্ছে, ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে
৯) কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া লেগেই রয়েছে
১০) খিদে কমে যাচ্ছে
১১) হাত কাঁপা, পিন ফোটার মতন অনুভূতি হচ্ছে, অর্থাৎ স্নায়ুঘটিত সমস্যা
১২) দেহের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ছে, গায়ে ব্যথা হচ্ছে
১৩) অবসাদ, স্মৃতিভ্রম, মেজাজ হারানোর মতো মানসিক সমস্যা হচ্ছে
ভিটামিন বি১২-এর প্রয়োজনের পরিমাণ সব বয়সের মানুষের শরীরে সমান নয়।
ছয় মাসের কম বয়সি শিশুদের এটি দরকার ০.৪ মাইক্রোগ্রাম। তার থেকে বড় শিশুদের দরকার ০.৫ মাইক্রোগ্রাম।
এক থেকে তিন বছরের শিশুদের প্রতিদিন ০.৯ মাইক্রোগ্রাম দরকার।
চার থেকে আট বছরের শিশুদের দরকার ১.২ মাইক্রোগ্রাম প্রতি দিন।
নয় থেকে তেরো বছরের জন্য দরকার ১.৮ মাইক্রোগ্রাম দিনে।
কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দরকার ২.৪ মাইক্রোগ্রাম দিনে।
গর্ভবতী মহিলাদের দরকার ২.৬ মাইক্রোগ্রাম ও যদি শিশুরা মাতৃদুগ্ধ পান করে সে ক্ষেত্রে সেই মায়ের দরকার ২.৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি১২ দিনে।
ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি হলে আমাদের দেহে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয় না। ফলে সারা দেহে অক্সিজেন সরবরাহ হয় না। সাধারণত প্রাণীজ প্রোটিন (মাছ, মাংস, দুধ, চিজ, ডিম) না খেলে ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি হয়। মুরগির মাংস, বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, ডিম, লো-ফ্যাট দুধ, দই, পনির, ডালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ থাকে। শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে এ সব খাবার খেতে পারেন। এ ছাড়া চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন।
ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হলে তার চিকিৎসা
ডায়েটের সমস্যা হলে চিকিৎসক আপনাকে ভিটামিন বি-১২ সাপ্লিমেন্ট দেবেন। অথবা বছরে দু'বার হাইড্রোক্সকোবালামিন নিতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।