বাজারচলতি উপাদানের চেয়ে যে প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত উপাদান রূপচর্চায় অনেক বেশিকার্যকরী এই বিশ্বাস যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। বহু সময় আগে থেকেই প্রাচীন মিশরে মধুর ব্যবহার হত ময়েশ্চারাইজার হিসাবে, আবার চিনে জেড রোলার ব্যবহৃত হত উজ্জ্বল ত্বকের জন্য। আমাদের দেশেও আয়ুর্বেদে অনেক গোপন সমাধান আছে।
ত্বকের পরিচর্যায় মধুর উপকারিতার শেষ নেই। এর গুরুত্ব এতটাই যে একে রূপচর্চার জন্য ব্যবহৃত তরল সোনা বলা যায়। বিভিন্ন ফেস মাস্ক, লিপ বাম ও শ্যাম্পুতে মধু ব্যবহার করা হয়। শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা নিয়ে আসা, ব্রণ নিরাময় করা এবং পোড়া দাগের চিকিৎসা করা সবটাই মধুর দ্বারা সম্ভব।
মধুর মধ্যে আছে অ্যান্টি-এজিং উপাদান
মধু প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক নিরাময় করে। এটি একটি দুর্দান্ত কোলাজেন বুস্টার এবং সেইজন্য একটি দুর্দান্ত অ্যান্টি-এজিং উপাদানও। কাঁচা, অপাস্তুরিত মধু ব্রন পরিষ্কার করতে, দাগ নিরাময়ে, ত্বকের টোনে সামঞ্জস্য আনতে, নিস্তেজ ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো অটো-ইমিউন ত্বকের সমস্যায় জন্য ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন : শীত এলেই চুল রুক্ষ হয়ে যায়? রোজ অনেক চুল উঠে যায়? মেনে চলুন এই ঘরোয়া রূপরুটিন
ময়শ্চারাইজার ও এক্সফোলিয়েটার
যেহেতু মধু একটি প্রাকৃতিক হিউমেক্ট্যান্ট, তাই এটি প্রাকৃতিকভাবে আর্দ্রতা যোগ করে এবং নিস্তেজ ত্বকের চিকিৎসা করে ত্বকের প্রাকৃতিক আভা পুনরুদ্ধার করে। এটিতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। মধু সব ধরনের ত্বকে কাজ করে। এটি নরম, পুষ্ট, পরিষ্কার এবং ময়শ্চারাইজড ত্বকের জন্য ওটমিলের সঙ্গে মিশিয়ে বা এমনিই ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি লেবু এবং মধুর মাস্ক কালো দাগ হালকা করে এবং সেলুলার টার্নওভারে সহায়তা করে, কারণ মধু একটি চমৎকার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। যেহেতু কাঁচা মধু সময়ের সাথে সাথে স্ফটিক হয়ে যায়, তাই ছোট দানাগুলি একটি মৃদু এক্সফোলিয়েন্ট হিসাবে কাজ করে। উপরন্তু, এটিতে টোনিং, মসৃণকরণ, উজ্জ্বলতা, ডিপিগমেন্টেশন এবং অ্যান্টি-এজিং উপাদান রয়েছে, যে কারণে এটি বিউটি এজেন্ট হিসাবে শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড রয়েছে যা দাগ বিবর্ণ করতে, এবং সূর্যের আলোয় ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের সাহায্য করে।
আরও পড়ুন : ফ্রায়েড রাইস রান্নার সময় কড়াইয়ের গায়ে চাল আটকে যায়? রইল মাস্টারশেফের সমাধান
অ্যাকনে ও দাগ নিরাময় করে
মধুর প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রন কম করতে, ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার করতে, ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে, রোদে পোড়া দাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ অনুসারে, মধুর সঙ্গে ঘি মিশিয়ে ক্ষত, ফোস্কা এবং প্রদাহের উপর প্রয়োগ করা যেতে পারে।
ত্বকের দাগ ও এবং প্রদাহ দূর করে
পাস্তুরিত কাঁচা মধু বেশি কার্যকরী। গাঢ় মধুর জাতগুলিতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণও বেশি থাকে। এটি অত্যাবশ্যক যে, যে মধু ব্যবহার করা হবে তা ত্বকে কার্যকর হওয়ার জন্য তাতে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে হবে। এটি ত্বকে প্রদাহ, লালভাব এবং দাগ নিরাময়ে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন : জলপানিতে উচ্চপাঠ , আজ প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার নিজে দরিদ্র মেধাবীদের সমস্যার মরূদ্যান
সুন্দর ত্বক
এক চামচ মধু নিরবচ্ছিন্ন ঘুমে সাহায্য করে, কারণ এটি ইনসুলিনের একটি ধীর তরঙ্গ সৃষ্টি করে, যা সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিনে রূপান্তরিত করে, এই দু'টি হরমোন ঘুমাতে সাহায্য করে। মধুর হাইড্রেটিং ক্ষমতা ত্বক করে কোমল এবং মসৃণ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।