স্বাস্থ্য ভাল আছে কি না বলে দেবে আপনার হাতের লেখাই, কীভাবে জানেন তো?
- Published by:Suman Biswas
- trending desk
Last Updated:
Handwriting: বিশেষজ্ঞদের মতে হাতের লেখা অনন্য। আঙুলের ছাপের মতোই, এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পৃথক হয়ে যায়।
#নয়াদিল্লি: কথাটা প্রথম শুনলে একটু অবিশ্বাস্য মনে হতেই পারে। বাস্তবে কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা হাতের লেখার সঙ্গে কোনও ব্যক্তির স্বাস্থ্যের যোগসূত্র বের করে ফেলেছেন।
আসলে আমরা যা লিখি, তা আমাদের মস্তিষ্কের জটিল চিন্তা প্রক্রিয়ার একটি বহিঃপ্রকাশ। আর যদি সেটা হাতে লেখা হয়, তবে মনের চিন্তা ছাড়া আরও অনেক কিছু আছে যা লেখনীর মাধ্যমে বেড়িয়ে পড়ে। গ্রাফোলজি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে কেউ কোনও ব্যক্তির সামগ্রিক সুস্থতার ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং হাতের লেখার মাধ্যমে কোনও অসুস্থতা সম্পর্কেও অগ্রিম বলে দিতে পারেন।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে হাতের লেখা অনন্য। আঙুলের ছাপের মতোই, এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পৃথক হয়ে যায়। এটা এক ভাবে দেখতে গেলে স্বাভাবিক যে, প্রত্যেকেরই নিজেকে প্রকাশ করার নিজস্ব উপায় বা ভঙ্গি রয়েছে যা অন্যদের থেকে আলাদা। শুধু তাই নয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাতের লেখাও বদলে যায়। মস্তিষ্ক আসলে হাতের লেখা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্যক্তিগত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন এখানেও প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাই হাতের লেখা একজন ব্যক্তি কী ভাবছে বা ব্যক্তিটি কেমন, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়।
advertisement
advertisement
বেশ কয়েকটি গবেষণা ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, একজন ব্যক্তি তাঁর হাতের লেখার পরিবর্তনের সম্মুখীন হতে পারেন, যদি তিনি কোনও অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাযন। যদি দেখা যায় যে, কোনও ব্যক্তির স্বাক্ষরের শৈলীতে বা লেখার পদ্ধতিতে কোনও পরিবর্তন হয়েছে, তবে তাঁর আত্মবিশ্লেষণ করা জরুরি বলেই মনে করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই বিষয়ে নিজে কোনও সিদ্ধান্তে না এসে স্বাস্থ্যের বিষয়ে হাতের লেখা ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করার জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ খুঁজে বের করতে হবে।
advertisement
আরও বিস্তারিত ভাবে বোঝার জন্য, আয়ুর্বেদ পদ্ধতি বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। বলা হয়েছে 'যে পিন্ডিতে ব্রহ্মাণ্ডি' অর্থাৎ কোনও জীবের মধ্যে যে নীতিটি পাওয়া যায় তা মহাবিশ্বেও পাওয়া যায়, আবার যা মহাবিশ্বেও পাওয়া যায় সেটা ক্ষুত্রাতিক্ষুদ্র জীবের জন্যও প্রযোজ্য। সরল করে বললে, ক্ষুদ্রতম অংশে যা কিছু পাওয়া যায় তা বৃহত্তর সত্তা সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। অর্থাৎ এই নীতি অনুসরণেই হাতের লেখা কোনও ব্যক্তির সম্বন্ধে অনেক কথা বলে দেয়।
advertisement
হাতের লেখা স্বাস্থ্য সম্পর্কে কী বলে তা জানার গ্রাফোলজি পদ্ধতিটিও জেনে নেওয়া যাক। হাতের লেখায় অনেকগুলি দাঁড়ানো রেখা থাকে এবং এগুলোর ধরন ব্যক্তির ভঙ্গি এবং মেরুদণ্ড-সম্পর্কিত সমস্যাগুলি সম্পর্কে কিছু বলে দেয়। যদি দাঁড়ানো লম্বা রেখা নড়বড়ে বা ঢেউ খেলানো হয় তবে এটি মেরুদণ্ড-সম্পর্কিত সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে।
একইভাবে, কালি কীভাবে লেখনীতে এসেছে, সেটা বুঝতে প্যাস্টোসিটি সম্পর্কে জানতে হবে। কালির প্রবাহ কারও নেতিবাচক বা ইতিবাচক ভাব ভঙ্গির কথা বলে দেয়। প্যাস্টোসিটি হল একজন ব্যক্তির দ্বারা কাগজে কালির অতিরিক্ত প্রবাহের ধরন। ইতিবাচক প্যাস্টোসিটি দেখতে পেলে বুঝতে হবে, ব্যক্তি সঙ্গীত, খাদ্য এবং পোশাকে রুচি রাখেন। ইতিবাচক প্যাস্টোসিটিযুক্ত লোকেরা সাধারণত মোটা কলম ব্যবহার করেন এবং লেখার ক্ষেত্রে সৃজনশীল হন। নেতিবাচক প্যাস্টোসিটি সহ লোকেরা লেখার উপর অনেক সময় ওভাররাইট করেন বা একবার লেখার পর আবার কলম চালান। মনে করা হয়, এটি হিংসাত্মক বা নেতিবাচক গুণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং তাঁরা সাধারণত একাকী থাকতে পছন্দ করেন। এটি ব্যক্তির মানসিক সুস্থতার উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
advertisement
অনেক সময় দেখা যায় যে, কোনও ব্যক্তি অক্ষরগুলিকে একে অপরের সঙ্গে লাগিয়ে বা একে অপরের থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আলাদা করে লেখেন, এমনকী কখনও বিকৃত অক্ষর ব্যবহার করে লেখেন। এগুলোও একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে অনেক কথা বলে দেয়। লেখার বিভিন্ন গতি একজন ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য সম্পর্কেও জানান দেয়। যদি একজন ব্যক্তি খুব দ্রুত লেখেন, তিনি প্রায়শই বাক্যের শেষ শব্দগুলিতে একটি তীক্ষ্ণ দাগ ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা রাখেন। যদি কেউ এগুলি ঘন ঘন ব্যবহার করেন তবে সেই ব্যক্তির গলা, পা বা ফুসফুস সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকতে পারে।
advertisement
কিন্তু শুধু এর ভিত্তিতে ব্যক্তিবিশেষের কোনও ধারণায় আসা উচিত নয়। তাই এটি সুপারিশ করা হয় যে প্রয়োজনে সব সময়েই একজন গ্রাফোলজি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত, যাতে তিনি আমাদের হাতের লেখার মাধ্যমে শারীরিক সুস্থতার সঠিক সন্ধান করতে পারেন।
Location :
First Published :
January 04, 2023 8:03 PM IST