SHALINI DATTA
#কলকাতা: ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে বাঘই ভারতের জাতীয় পশু। অথচ গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ তার জন্য একেবারেই ভাল যায়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-এ এই দেশে বেশ অনেক সংখ্যক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং লেপার্ডের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্মসূচি ধাক্কা খেয়েছে বলেই মনে করছেন বাঘ বিশেষজ্ঞরা।
ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র এই সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, গত বছর ভারতে ১১০টি বাঘ মারা গিয়েছে যা কিনা ২০১৮-র পরিসংখ্যানের থেকেও বেশি। রিপোর্টে এও বলা আছে, এই ১১০-এর মধ্যে অন্তত ৩৮টি বাঘ মারা গিয়েছে চোরাশিকারিদের হাতে। পথ দুর্ঘটনাতেও বেশ কিছু বাঘের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সবথেকে ভয়ের দিকটি হল, মোট ৫৭টি বাঘ মারা গিয়েছে টাইগার রিজার্ভের ভিতরে। এত সুরক্ষার মধ্যেও কেমন করে বাঘ মারা যায়? কী করে চোরাশিকার হয়? সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
বাঘ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুন্ডু বলেছেন, অতিরিক্ত নগরায়নের জন্য বেশিরভাগ বাঘই খাবারের অভাবে ও থাকার জায়গার অভাবে গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং অতিরিক্ত ভীতির কারণে গ্রামবাসীরা এই বাঘেদের নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
মধ্যপ্রদেশ 'টাইগার স্টেট’ বলে খ্যাত ঠিকই কিন্তু এই রাজ্যেও ২৩টি বাঘ মারা গিয়েছে গতবছর। শুধু বাঘই নয়, ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৯১টি চিতাবাঘও মারা গিয়েছে। বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ডক্টর জ্ঞানেন্দ্র নারায়ণ সেনগুপ্ত অতিরিক্ত নগরায়নকেই দায়ী করেছেন এর জন্য। সেই সঙ্গে রয়েছে নজরদারির অভাব। এছাড়াও, জায়গা ছোট হয়ে আসার ফলে এই বন্য জন্তুদের নিজেদের মধ্যে লড়াই করার প্রবণতাও বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে এত সংখ্যক মৃত্যু। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, বাঘ সংরক্ষণ নিয়ে যাবতীয় প্রচার কি তবে সব বিফলে যাচ্ছে। তাই যেকোনও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে সব থেকে প্রয়োজনীয় হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা এবং বনদফতরের তৎপরতা।