'কেন্দ্র-রাজ্য সেতু গড়তে চেয়েছিলাম, মমতার ইগো সব শেষ করে দিল', বিস্ফোরক দলত্যাগী দীনেশ ত্রিবেদী
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
Last Updated:
১২ ফেব্রুয়ারি দলত্যাগের পরেই একাধিক মন্তব্য উড়ে এসেছে দীনেশ ত্রিবেদীকে লক্ষ্য করে। MoneyControl -কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বারে বিস্ফোরক একাধিক তথ্য সামনে আনলেন তৃণমূলত্যাগী সাংসদ।
#কলকাতা: তৃণমূলে 'দম বন্ধ' হয়ে আসছিল...এ কথা জানিয়ে রাজ্যসভার সভাকক্ষে দাঁড়িয়ে দিন ছ'য়েক তৃণমূল এবং নিজের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন দীনেশ ত্রিবেদী। সেদিন সভাকক্ষে দাঁড়িয়ে দলত্যাগী দীনেশ জানিয়েছিলেন, ”আমার রাজ্যে হিংসা হচ্ছে। কিন্তু এখানে কিছুই বলতে পারছি না। আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে, কাজ করতে পারছিলাম না।” ১২ ফেব্রুয়ারি দলত্যাগের পরেই দীনেশকে ভিনরাজ্যের বাসিন্দা বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতারা। এ ছাড়াও তারপর থেকে একাধিক কথা উড়ে এসেছে তাঁকে লক্ষ্য করে। MoneyControl -কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বারে বিস্ফোরক একাধিক তথ্য সামনে আনলেন তৃণমূলত্যাগী সাংসদ। পাশাপাশি, বিজেপিতে যাবেন কিনা বা ভবিষ্যতে ঠিক কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান, তারও সহজ ব্যাখ্যা দিলেন।
এ দিন সাক্ষাৎকারে দীনেশ বলেন, "দলের প্রথম দিন থেকে কাজ করেছি। তাই সেই দলকে সঠিকভাবে চালাতে একাধিক সময়ে শান্তিরক্ষা এবং রাজ্যের উন্নয়নের জন্য পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু আমাকে বারে বারে কোণঠাসা করা হয়েছে। মহাভারতের আইকনিক চরিত্র ভীষ্মের মতো কাঁটার বিছানায় স্থান দেওয়া হয়েছিল। আমি কেন্দ্রও এবং রাজ্যের মধ্যে সেতু গড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু মমতা বন্যপাধ্যায়ের ইগো সব কিছু শেষ করে দিল।"
advertisement
কীভাবে একজনের পক্ষে রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে শান্তিরক্ষা এবং উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সেতু গঠনের কাজ করা সম্ভব?
দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন। তাতে রাজ্য অনেকাংশে সুবিধা পায়। আমি জানতাম পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সম্পর্ক সহজ করা অত্যন্ত কঠিন, চার দশক ধরে সেটা কেউ করতে পারেনি। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছিলাম। ভীষণভাবে চেষ্টা করেছিলাম।
advertisement
advertisement
রতন টাটার সঙ্গে রাজ্যের বৈঠক...
সিঙ্গুরে টাটার কারখানা নিয়েও এ দিন মুখ খুলেন দীনেশ ত্রিবেদী। বলেন, "২০১১ সালে তৃণমুলের ঐতিহাসিক জয়ের পরে টাটার সিঙ্গুর ছেড়ে যাওয়া যখন নিশ্চিত, তখন কর্ণধার রতন টাটার সঙ্গে বিশাখাপত্তনমের একটি রিসর্টে দেখা করি এবং কারখানা গড়ার জন্য যাতে তিনি রাজি হন তার শেষ চেষ্টা করেছিলাম।" প্রাক্তন সাংসদ জানান, একটা পরিকল্পনা নিয়েই রতন জি-র সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তাঁকে অনুরোধ করি, সিঙ্গুরের লিজ নেওয়া জমি প্রথমে গ্রামবাসীরা ফিরিয়ে নেবে কথামতো, এরপর তাঁরাই আবার ফের এক সপ্তাহের মধ্যে ৯৯ বছরের লিজে টাটাকে জমি ফিরিয়ে দেবে। সেখানে আমি কোনও চাকরির কথা বলিনি। বরং জমির জন্য মাসিক ভাড়া এবং জম্বির মালিকদের ইক্যুইটি পার্টনার প্রস্তাব রেখেছিলাম। তিনি বলেন, "রতন টাটা সেই সময় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তৃণমূল কি এই প্রস্তাবে রাজি হবে? আমি বলেছিলাম, আশা করি। এত কিছুর পরে দেখলাম টাটাদের প্রকল্পের জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। স্বাভাবিকভাবেই আমার দেওয়া প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। আমার সম্মানহানি হয়েছিল খোদ রতন টাটার কাছে।"
advertisement
দীনেশ ত্রিবেদীর শঙ্খ বাজিয়ে পুজো করার ভাইরাল ছবি...
দীনেশ ত্রিবেদীর ভাইরাল ছবি।

দীনেশ ত্রিবেদীর শঙ্খ বাজিয়ে পুজো করার একটি ছবি ভাইরাল হয় সম্প্রতি। তা দেখে আসরে নেমে পড়ে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল ছাড়ার পরেই তিনি ঠিক কবে বিজেপিতে যোগ দেবেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা। এমনকি গুজরাতে তাঁর টিকিট পাওয়া নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। প্রাক্তন সাংসদের পুজো করার ছবি দেখে অনেকেই কটাক্ষ করেন, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগে প্রস্তটি চলছে। কিন্তু একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা হেসেই সহজ করেছেন দীনেশ ত্রিবেদী। বলেন, "আমি রোজ পুজো করি। যে ছবি নিয়ে এত আলোচনা, সেও ছবি রোজের। সবই মানুষের অনুমান। আর ভারতীয় রাজনীতিতে অনুমান ছাড়া কিছুই হয় না।"
advertisement
তবে সব কিছুর পরেই তিনি বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি-র হয়ে লড়বেন কিনা বা তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা, সেই নিয়ে কোনও স্পষ্ট জবাব দেননি। দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, "রাজ্যসভায় ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে মেসেজে ভর্তি হয়ে গিয়ে ফোন। অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। অনেকে কলকাতায় অর্থাৎ রাজ্যে ফেরা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ব্যক্তিগত দেহরক্ষী রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু না। আমি কোনও নিরাপত্তারক্ষী রাখব না।" তিনি আরও বলেন, "কষ্ট হচ্ছে। যে রাজ্যের জন্য দলে থেকে এতবছর কাজ করলাম, সেই রাজ্যের নেতারাই যখন আমাকে পরবাসী বলছেন।"
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে
Location :
First Published :
February 18, 2021 2:51 PM IST